থেমে গেল রবীন্দ্র জৈনের সুরসৃষ্টি

সুরকার রবীন্দ্র জৈনের সুরের পথচলা থেমে গেল। প্রয়াত হলেন ভারতের বিশিষ্ট সুরকার রবীন্দ্র জৈন (৭১)। শুক্রবার দুপুর ৩টায় মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কিডনির সংক্রামণ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন রবীন্দ্র জৈন। শুক্রবার তাঁর নাগপুরে একটি কনসার্টে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্ত তার আগেই অসুস্থতার জন্য তাঁকে নাগপুরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর সেখান থেকে শুক্রবার সকালে তাঁকে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানেই দুপুর নাগাদ মারা যান তিনি।
জন্মান্ধ রবীন্দ্র জৈনের সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা ছিল ছোটবেলা থেকেই। সাতের দশকে তিনি তাঁর অনবদ্য সুরের মায়ায় গোটা সুরের দুনিয়া মাতিয়ে রেখেছিলেন। বলিউড অভিনেতা রাজ কাপুরের সঙ্গে জুটি বেঁধে একের পর এক ছবিতে অসামান্য সঙ্গীতের সুর সৃষ্টি করে গেছেন রবীন্দ্র জৈন। মূলত ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’ ছবির জনপ্রিয় সব গানে সুর দিয়ে বলিউডে নিজের জায়গা পাকা করে নেন এই জন্মান্ধ সুরকার। এরপর ‘দো জাসুস’ ছবিতে তাঁর সুরের জাদুতে হিন্দোল জাগে সুরের দুনিয়ায়। তারপর থেকে একের পর এক জনপ্রিয় গানে সুর দিয়ে গেছেন তিনি। ‘চোর মাচায়ে শোর’, ‘গীত গাতা চল’, ‘চিতচোর’ এর মতো গানের সুবাদে ক্রমশ তাঁর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। এরপর আট ও নয়ের দশকে ছোট পর্দাতেও রীতিমতো কাজ শুরু করেন এই জন্মান্ধ সুরস্রষ্টা। টিভিতে জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘মহাভারত’, ‘শ্রীকৃষ্ণ’, ‘আলিফ লায়লা’, ‘ইতিহাস কি প্রেম কাহানিয়া’র মতো ধারাবাহিকগুলো তাঁর সুরে সমৃদ্ধ হয়েছিল। এমনকি ২০০৮ সালে নতুন করে ‘রামায়ণ’ ধারাবাহিকেও সুরের দায়িত্ব তিনি নেন।
চোখের আলো হারিয়েও নিজের অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে রবীন্দ্র জৈন খুঁজে নিয়েছিলেন সুরের আলো। আর যে আলোয় উদ্ভাসিত করে গেছেন অজস্র সঙ্গীতপ্রেমী মানুষের হৃদয়। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সমগ্র সঙ্গীত জগতে।