বিজ্ঞাপনের চাপে নাটক পিষ্ট : আ খ ম হাসান

আ খ ম হাসান। টেলিভিশনের এক অতি পরিচিত মুখ। তাঁর অভিনয় দেখে আর সংলাপ শুনে দর্শক হেসেই কুটিকুটি হন। মূলত কমেডি চরিত্রে অভিনয় করেই দর্শকপ্রিয় হন হাসান। তবে সিরিয়াস চরিত্রেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তিনি। সম্প্রতি বাংলাদেশের টিভি নাটক নিয়ে তিনি কথা বলেছেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে।
কলকাতার নাটক আমাদের দেশে কেন বেশি জনপ্রিয়? এমন প্রশ্নের জবাবে হাসান হেসে বলেন, ‘নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের দুর্বলতা সব সময়ই বেশি। আমার মা-বউ-কাজের মেয়েকে দেখি, সব সময় কলকাতার নাটক দেখছে। আসলে হয় কী, একটা পরিবারে অনেক ঘটনা ঘটে। অনেক সময় বড়দের ওপর মন খারাপ হয় ছোটদের, কিন্তু তারা কিছু বলতে পারে না। কলকাতার নাটকে কিন্তু কেউ মনে মনে বকা দেয় না। এসব দেখে দর্শক খুব মজা পায়।’
আমাদের দেশের নাটকের ফাঁকে প্রচারিত বিজ্ঞাপন নিয়ে হাসান বলেন, ‘বিজ্ঞাপনের নিচে পিষ্ট আমাদের নাটক বা শিল্প। আমি কয়েক দিন আগে আমাদের একটি নাটক দেখছিলাম, বিরক্ত হয়ে উঠে গেছি। দেখেন, একজন মানুষ যখন টিভিতে একটা গল্প দেখে, সে জানে ওটা সত্য নয়। এর পরও সে দেখছে, হাসছে, কাঁদছে; সত্য নয় জেনেও সে এই কাজটি করছে। গল্পের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে সে। কিন্তু দুই মিনিট পরপর বিজ্ঞাপন দিলে এই অনুভূতি বাধাগ্রস্ত হয়। সে আর গল্পে ঢুকতে পারে না। এভাবে চলতে থাকলে একসময় আর আমাদের টিভি কেউ দেখবে না। এরই মধ্যে ইউটিউবে মানুষ নাটক দেখা শুরু করেছে, সামনে আর কেউ টিভিতে নাটক দেখবে না।’
টিভি চ্যানেল থেকে নাকি কয়েকজন শিল্পীর নাম আগে থেকেই বলে দেওয়া হয়। সেই পরামর্শে তখন আপনাদের বেশি টাকা দিয়ে নাকি নাটকে নিতে হয়। এতে বাকি শিল্পীদের দেওয়ার মতো টাকা থাকে না, এমনকি নাটকের মান খারাপ করে হলেও আপনারা বেশি টাকা নিচ্ছেন। আপনাদের সঙ্গে কি টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের আসলেই এমন ধরনের সম্পর্ক আছে?
এ প্রশ্নের জবাবে হাসান বলেন, ‘আসলে হয় কী যাদের নাটক দর্শক বেশি দেখে, বিজ্ঞাপন সংস্থাই টিভিকে তাদের নাম বলে দেয়। আর টিভি সেই তালিকা ধরিয়ে দেয় নির্মাতাদের। সেখানে বলা থাকে, নাটকে কাদের নিতে হবে। আর আমরা শিল্পীরা যখন বিষয়টি জানতে পারি, তখন আমাদের এক ধরনের চাহিদা বেড়ে যায়। সবচেয়ে সমস্যা হয়, আমি মাসের ৩০ দিন শুটিং করতে পারি। কিন্তু যখন ১৩০টা কাজ আসে, তখন তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য রেট বাড়িয়ে বলি। নির্মাতারা তাতেই রাজি হয়ে যান। আমাদের তো কিছু করার নেই। টিভির সঙ্গে আসলে আমাদের কোনো চুক্তি থাকে না বা কমিশনের সিস্টেমও নেই।’