আজ আঁচলের টিকে থাকার লড়াই
আঁচল আঁখি। ২০০৮ সালে ‘বেইলী রোড’ ছবির মধ্য দিয়ে ঢালিউডে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ তাঁর। এর পর ২০১১ সালে ‘ভুল’ নামে ছবিতে তাঁর অভিনয় সেই সম্ভাবনা আরো জাগিয়ে তোলে। মুক্তিপ্রাপ্ত দুটি ছবি ফ্লপ হলেও বাড়তে থাকে নায়িকা আঁচলের ব্যস্ততা। কিন্তু অভিনয় গুণ না থাকায় বারবার দর্শক তাঁর ছবি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ২০০৮ সালে শুরু করা ক্যারিয়ারে চলতি বছর পর্যন্ত কোনো হিট ছবি দর্শককে উপহার দিতে পারেননি তিনি।
যে কারণে শাকিবের সঙ্গে ঈদের ছবি থেকেও বাদ পড়েন একাধিকবার। আজ তাঁর অগ্নিপরীক্ষা। বাপ্পি ও আঁচলের ‘আজব প্রেম’ আজ শুক্রবার সারা দেশের ৮০টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে।
বিভিন্নভাবে এই ছবিতে দর্শক টানার চেষ্টা করেছেন নায়িকা আঁচল। এই ছবিতে তাঁর অশ্লীল পোস্টারে ছেয়ে গেছে সারা দেশ। গানের দৃশ্যে নিজেকে খোলামেলাভাবে উপস্থাপন করেছেন তিনি। এত কিছুর পরও দর্শক গ্রহণ না করলে হয়তো তাঁকে হারিয়েই যেতে হবে বলে মনে করেন চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টরা।
গত ঈদুল আজহায় মুক্তি পায় দুটি ছবি। একটি যৌথ প্রযোজনার ‘আশিকী’ এবং আরেকটি বদিউল আলম পরিচালিত শাকিব খানের ‘রাজাবাবু’। বদিউল আলম খোকন পরিচালিত ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে ছিলেন নায়িকা অপু বিশ্বাস ও ববি। কিন্তু শুরুতে এই ছবিতে কাজ করার কথা ছিল নায়িকা আঁচলের।
এ বিষয়ে বদিউল আলম খোকন বলেন, ‘ববির চরিত্রে নায়িকা আঁচলের কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু অনেকেই তখন মানা করেছিলেন আঁচলকে নিতে। কারণ, প্রদর্শকরা আঁচলের ছবি চালাতে চায় না। হল মালিকরা যদি বলে, কারো ছবি চলে না, তাহলে তাঁকে নিয়ে ছবি বানালে ঝুঁকি থেকে যায়।’
গত বছর আঁচল অভিনীত তিনটি ছবি মুক্তি পায়। বছরটা তিনি শুরু করেছিলেন ‘ফাঁদ : দ্য ট্র্যাপ’ ছবির মাধ্যমে। এই ছবিতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন শাকিব খান। বহুল আলোচিত এই ছবি ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ হয়।
‘ফাঁদ’ ছবির পর আশিকুর রহমান পরিচালিত ‘কিস্তিমাত’ ছবিটি মুক্তি লাভ করে। এ ছবিতে আঁচলের নায়ক ছিলেন আরিফিন শুভ। বিগ বাজেটের এই ছবিতে আঁচলের দুর্বল অভিনয় দর্শককে হতাশ করে। ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সফল হওয়ার পেছনে মূল অবদান রেখেছিলেন আরিফিন শুভ, মিশা সওদাগর ও টাইগার রবির দাপুটে অভিনয়। তাঁরা তিনজন ছবিজুড়ে দর্শককে মাতিয়ে রেখেছিলেন।
সর্বশেষ ‘স্বপ্ন যে তুই’ ছবিটি মুক্তি পায় গত বছরের শেষ দিকে। ছবিতে নায়ক হিসেবে ছিলেন মডেল-অভিনেতা ইমন। এ ছবিতে আঁচল ছাড়া আরো একজন নায়িকা ছিলেন। সেই অর্থে ‘স্বপ্ন যে তুই’ ছবিটি আঁচলের একক চলচ্চিত্র নয়। এ ছবিতেও অভিনয়ে তাঁর দুর্বলতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ছবিতে আঁচলের তুলনায় নবাগত নায়িকা আফ্রির অভিনয় ভালো হয়েছে বলেই দর্শকের মত। সুন্দর গান ও প্রচারের কোনো কমতি ছিল না ছবিটি নিয়ে। এ ছাড়া ছবির কাহিনী ছিল মৌলিক। এত কিছুর পরও ছবিটি দর্শককে হলমুখো করতে ব্যর্থ হয়।
এ অবস্থার মধ্যে গত এপ্রিল মাসে আঁচল অভিনীত ‘গুন্ডা : দ্য টেরোরিস্ট’ ছবিটি মুক্তি পায়। এ ছবিটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন ইস্পাহানী আরিফ জাহান। ছবিটি বক্স অফিসে আঁচলের জনপ্রিয়তাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়। তাই আজকের ছবিটি যদি দর্শকের মন জয় করতে পারে, তাহলে একটু হলেও ক্যারিয়ারে আলোর মুখ দেখতে পাবেন আঁচল।