চলচ্চিত্র দিবসে এফডিসিতে অব্যবস্থাপনা
জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উপলক্ষে এফডিসি আয়োজিত দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আজ দ্বিতীয় ও শেষ দিন। চলচ্চিত্র শিল্পীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও আজ সন্ধ্যায় থাকবে লেজার শো ও আতশবাজি পোড়ানো। গতকাল বুধবার প্রথম দিন ছিল উদ্বোধন অনুষ্ঠান, র্যালি ও আলোচনা সভা। প্রথম দিনের আয়োজন নিয়ে উঠেছে কিছু আপত্তি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ।
প্রতিবছর চলচ্চিত্র দিবসে নতুন-পুরোনো চলচ্চিত্রের পোস্টার দিয়ে এফডিসি সাজানো হলেও এবার যেসব ব্যানার টাঙানো হয়েছে, সেগুলোর ভেতর চলচ্চিত্রের পোস্টার ছাপানো হয় খুব ছোট করে। নিচে বড় করে একটি কোম্পানির বিজ্ঞাপন। তবে ফিল্ম আর্কাইভের ব্যানারগুলো ছিল পোস্টার দিয়ে। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে কারওয়ান বাজার থেকে হাতিরঝিল পর্যন্ত ছবির পোস্টার দিয়ে সাজানোর কথা থাকলেও সেগুলো গতকাল রাত পর্যন্তও দেখা যায়নি।
বেলা ১১টার দিকে যখন উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরু হয়, তখনো সেখানে বাঁশ লাগিয়ে মঞ্চ প্রস্তুতের কাজ চলছিল। ওপরে শামিয়ানা টাঙানোর কাজও সম্পন্ন হয়নি। গতকাল সারা দিনই চলেছে মঞ্চ প্রস্তুতির কাজ। যেখানে সেখানে পড়েছিল বাঁশ। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় র্যালি। সেই র্যালিটিও ছিল দায়সারাগোছের। র্যালিতে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহারের কথা থাকলেও সেগুলোকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে এফডিসির কড়ইতলায়। র্যালিতে অংশগ্রহণকারীরাও শেষ পর্যন্ত আর র্যালিতে থাকেননি।
বেলা ১১টার দিকে যখন উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরু হয় তখনও চলছিল মঞ্চ প্রস্তুতের কাজ। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন বলেন, ‘প্রতিবছরই আমরা এফডিসির মানুষ এই আয়োজনগুলো করে থাকি। তবে এ বছর রাউন্ড দ্য ক্লক নামে একটি ব্যবস্থাপনা কোম্পানি কাজগুলো করেছে। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’
অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনা সংস্থা রাউন্ড দ্য ক্লকের কর্ণধার সালমান মাহমুদের কাছে অব্যবস্থাপনা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সার্ক ফোয়ারা থেকে এফডিসি পর্যন্ত ব্যানার দিয়ে সাজিয়েছি, তবে রাতের অন্ধকারে সেগুলো চুরি হয়ে গেছে। আর এফডিসিতে যে ফেস্টুন লাগানো হয়েছে, তাতে সিনেমার পোস্টার তো ছাপানো হয়েছে। বিজ্ঞাপন বেশি আছে। এগুলো আসলে ডিজাইনার যে ডিজাইন করে দিয়েছে, আমরা সেগুলোই ছাপিয়ে লাগিয়েছি। আর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বিষয়টি হচ্ছে, এই মঞ্চটি আমরা সাজিয়েছি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য। উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি অন্য কোথাও হওয়ার কথা ছিল। যে কারণে আমরা গতকাল সারা দিন কাজ করেছি।’
প্রতিবছর সিনেমার পোস্টার দিয়ে সাজানো হলেও এ বছর বেশির ভাগ ব্যানারই ছিল বিজ্ঞাপননির্ভর। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম
১৯৯৭ সাল থেকে কাজ করা এফডিসির এক নিরাপত্তারক্ষী বলেন, ‘পুরো এফডিসিতে মনে হচ্ছিল চলচ্চিত্র দিবস বোধ হয় ৪ এপ্রিল। আগে যখন এফডিসির মানুষগুলো সব আয়োজন করত, তখন সবার মধ্যে একটি উৎসবের আমেজ দেখেছি। এখন দেখি ৩ তারিখও সাজানো চলছে। ঠিক উৎসব মনে হচ্ছে না। কোনো এক কোম্পানি নাকি কাজগুলো করেছে। শুনেছি, এফডিসির এক সমিতির নেতার বন্ধু তারা। কথা বললে আমাদের চাকরি থাকবে না।’
তবে আজকের অনুষ্ঠান প্রত্যাশামাফিক হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে তারকা শিল্পীদের নিয়ে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে মূল আকর্ষণ হিসেবে থাকবে ঢাকাই ছবির একসময়কার জনপ্রিয় নায়ক জাভেদ ও অঞ্জনার পরিবেশনা। এ ছাড়া মঞ্চ মাতাবেন মাহিয়া মাহি, নিরব, মৌমীতা মৌ, ইমন, সাইমন সাদিক, আইরিন, জয় চৌধুরী, রোমানা নীড়, সানজু জন, বিপাশা কবিরসহ এ প্রজন্মের নায়ক-নায়িকারা।
জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসের র্যালিতে সিনিয়র শিল্পীরা থাকলেও বর্তমান প্রজন্মের অংশগ্রহণ ছিল কম। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম