ঈদ আনন্দ নেই, পপির বাসায় শোক

Looks like you've blocked notifications!
নায়িকা সাদিয়া পারভিন পপি। এনটিভির পুরোনো ছবি

‘ঈদের দিন সাধারণত আমাদের বাড়িটা জমজমাট হয়ে যায়। চাচাতো, মামাতো, ফুফাতো ভাইবোনদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। তবে এবারের ঈদটা একেবারেই চুপচাপ, কারো মুখে হাসি নেই, চারদিকে বিষাদের ছায়া। মনের টানে খুলনাতে এসেছিলাম ঈদ করতে। আমাদের বাড়িতে ঈদ আনন্দ নেই, চারদিকে শোকের ছায়া।’

কথাগুলো এনটিভি অনলাইনকে বলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়িকা সাদিয়া পারভিন পপি।

কিছু দিন আগেই পপি হারিয়েছেন তাঁর ছোটবেলার বন্ধু ফুফাতো ভাইকে। পপি আরো বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকেই যৌথ পরিবারে মানুষ হয়েছি। চাচাতো, ভাইবোন, ফুপাত ভাইবোন সবাই মিলেই আমাদের পরিবার। ছোট বেলায় বুঝতে পারতাম না আমাদের পরিবার আলাদা। নিজের ভাইবোনের মতোই বড় হয়েছি। সবাই মিলে সারাক্ষণ আনন্দ করে বেড়াতাম। এখন যেদিকেই তাকাই ভাইয়ের স্মৃতি।’

স্মৃতিচারণা করে পপি বলেন, ‘আমি যখন অনেক ছোট, তখন ঈদের আগের রাতে সারা রাত জেগে থাকতাম কখন সকাল হবে। খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠে দাদির ঘরে যেতাম সালামি আনার জন্য। গিয়ে দেখতাম, আমার আগে অনেকেই চলে এসেছে। আমার অনেক মন খারাপ হতো। আর আজ ভাই নেই, সেটার জন্য কষ্ট হচ্ছে। সবাই দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন আমার ভাইকে ভালো রাখেন।’

মডেলিং থেকে চলচ্চিত্রে আসেন পপি। লাক্স আনন্দ বিচিত্রার সুন্দরী প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরিচিতি লাভ করেন পপি। ১৯৯৭ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ ছায়াছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন পপি। কিন্তু তাঁর প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘কুলি’। মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেন ওমর সানি। এরপর ১৯৯৮ সালে রিয়াজের বিপরীতে ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’, ১৯৯৯ সালে মান্নার বিপরীতে ‘কে আমার বাবা ও লাল বাদশা’, ২০০২ সালে কমল সরকার পরিচালিত ক্ষেপা বাসু’ ও বাবুল রেজা পরিচালিত ‘ওদের ধর’ ছায়াছবিগুলো ব্যবসাসফল হয়। মান্না প্রযোজিত ‘লাল বাদশা’ ছায়াছবি ব্যবসা সফল হয় এবং তাঁর অভিনয় জীবনে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে। ২০০৩ সালে অভিনয় করেন কালাম কায়সার পরিচালিত ‘কারাগার’ ছায়াছবিতে। এতে এক টোকাই চরিত্রে অভিনয় করে প্রথম বারের মতো শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

২০০৬ সালে কথাসাহিত্যিক আসকার ইবনে শাইখ রচিত গল্প অবলম্বনে  এনটিভির প্রথম প্রযোজিত ছায়াছবি ‘বিদ্রোহী পদ্মা’য় তাঁর অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। একই বছর আরো মুক্তি পায় ফেরদৌসের বিপরীতে সামিয়া জামান পরিচালিত ‘রানীকুঠির বাকী ইতিহাস’। ২০০৮ সালে নারগিস আক্তার পরিচালিত এইডস বিষয়ক সচেতনতামূলক ছায়াছবি ‘মেঘের কোলে রোদ’ ও চন্দন চৌধুরী পরিচালিত ‘কি যাদু করিলা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। মেঘের কোলে রোদ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি দ্বিতীয় বারের মতো শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এ ছাড়া ‘কি যাদু করিলা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য অর্জন করেন শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে বাচসাস পুরস্কার। পরের বছর সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড পরিচালিত ‘গঙ্গাযাত্রা’ ছায়াছবিতে ধুঙ্গরের চরিত্রে অভিনয় করেন। এ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি তৃতীয় বারের মতো শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এ ছাড়া পান টানা দ্বিতীয়বারের মতো বাচসাস পুরস্কার।