শিল্পীদের ডেঙ্গু সচেতনতা নিয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের তিরস্কার
চলচ্চিত্র তারকাদের নিয়ে এডিস মশা নিধন অভিযান চালিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গত ২ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর এফডিসি ও পান্থপথে সচেতনতামূলক এ অভিযান চালান। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বইছে সমালোচনার ঝড়। চলচ্চিত্র শিল্পীদের ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রম, স্বার্থান্বেষী মহল তিরস্কার করছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
বিষয়টি নিয়ে জায়েদ খান নিজের ফেসবুকে লেখেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্পীদের ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রম এবং একটি বিশেষ মহলের নিরুৎসাহ—
শিল্পীরা আমাদের সমাজের দর্পণের ন্যায়। সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন তাঁরা তুলে ধরেন, তেমনি সমস্যার সমাধানেও তাঁরা তাঁদের প্রতীকী কার্যক্রমের মাধ্যমে অপরিসীম ভূমিকা পালন করেন। আমরা সবাই জানি যে বর্তমানে ডেঙ্গু রোগ আমাদের দেশে, বিশেষ করে ঢাকা শহরে মহামারি আকার ধারণ করেছে। আর এর সমাধানের জন্য সবচেয়ে বেশি যা দরকার তা হলো আমাদের সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সচেতনতা এবং আমাদের বাসস্থানসহ পারিপার্শ্বিক পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা।
আর এই সচেতনতা ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আরো বেগবান করতেই চলচ্চিত্র শিল্পীরা তাঁদের নিজেদেরই কর্মস্থল এফডিসিসহ আরো কয়েকটি স্থানে ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রম চালান, মাইকের মাধ্যমে মিডিয়ায় নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন, চারপাশের আবর্জনা ঝাড়ু দেন এবং ফগার মেশিন দিয়ে মশা দমন করেন। এটি ছিল একটি প্রতীকী কার্যক্রম এবং এর উদ্দেশ্য কেবল সাধারণ মানুষকে ডেঙ্গু হতে প্রতিকার পাওয়ার জন্য সবাইকে সচেতন করা। আর চলচ্চিত্র শিল্পীদের মানুষ অনুসরণ করে হলেও তাঁদের এই প্রতীকী কার্যক্রম দেখে উৎসাহিত হয়ে মানুষ তাঁর চারপাশ পরিষ্কার রাখবে, নিজে তো সচেতন হবেই, আরো দশজনকে সচেতনতার পরামর্শ দেবে—এটিই ছিল মূল উদ্দেশ্য।
কিন্তু কষ্টের বিষয় এই যে, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ঈর্ষান্বিত মহল এই শুভ কাজটির তিরস্কার করছে ও নিরুৎসাহিত করছে। অথচ শিল্পীরা যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন, সেগুলো ওই স্বার্থান্বেষী মহলও কিন্তু পালন করছে। অথচ আপনারা জানেন, ডেঙ্গু মশা নিধন কিন্তু শিল্পীদের কাজ নয়। তারা নিজেদের দায়িত্ববোধ থেকে যেটুকু পেরেছেন, অর্থাৎ জাতির সচেতনতা সেটি তারা শতভাগ করেছেন। আসলে এই স্বার্থান্বেষী মহলের উদ্দেশ্য কী, আমাদের জানা নেই। তবে তাদের এমন নিরুৎসাহ এটিই প্রমাণ করে তারা দেশ ও জাতির মঙ্গল চায় না। চায় না ডেঙ্গু সম্পর্কে সকলের সচেতনতা। চায় না একটি ডেঙ্গুমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে।’
গত ২ আগস্ট অভিযানের সময় তথ্য সচিব আবদুল মালেক, বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম, অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান উল আলম, চলচ্চিত্র তারকা ইলিয়াস কাঞ্চন, রোজিনা, দিলারা, অঞ্জনা, আন্না, রিয়াজ, ফেরদৌস, রোকেয়া প্রাচী, শাহনূর, জায়েদ খান, জয় চৌধুরী, শিপন, আঁচল, তানহা, প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু, আবু মুসা দেবু, পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, বদিউল আলম খোকন, সাংস্কৃতিক সংগঠক অরুণ সরকার রানাসহ চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি অঙ্গনের বিপুল প্রতিনিধি এ অভিযানে অংশ নেন।
অভিযানের একপর্যায়ে এফডিসির সামনের রাস্তা পরিচ্ছন্নতায় মন্ত্রী নিজেই প্রথমে ঝাড়ু ও পরে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করার ফগার মেশিনও হাতে তুলে নিলে অভিযানের তারকা ও কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রাণসঞ্চার হয়।