জীবনের একমাত্র পেশা ও নেশা হলো গান : মিথুন জব্বার

Looks like you've blocked notifications!

মোহাম্মদ আবদুল জব্বার ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট মারা যান। আবদুল জব্বারের ইচ্ছা ছিল, পরিবারে একজন তাঁর মতো শিল্পী হবে এবং গানের মাধ্যমে দেশের কথা বলবে। ছেলে মিথুন জব্বার অনেক বছর দেশের বাইরে ছিলেন এবং দেশে ফিরে প্রতিনিয়ত গানের চর্চা করে চলছেন। মিথুন জব্বার দুই বছরের মধ্যে বাবা ও মাকে হারিয়েছেন। তাঁর মা হালিমা জব্বার ২০১৯ সালের ৩০ মে মারা যান।

গীতিকার ও প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী মোহাম্মদ আবদুল জব্বার, যাঁর গান শুনে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিতে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। মোহাম্মদ আবদুল জব্বার ও হালিমা জব্বারের তিন সন্তান—মিথুন, জেসমিন ও বাবু। এর মধ্যে মিথুন জব্বার একমাত্র কণ্ঠশিল্পী।

শিল্পী মিথুন মা-বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, "আমার কখনো মনে হয় না, আমার মা-বাবা না ফেরার দেশে চলে গেছেন। মনে হয়, উনারা আবার ফিরে আসবেন। বাবা চলে যাওয়ার পর মাকে এত তাড়াতাড়ি হারাব, ভাবতেও পারিনি। মা-বাবার মধ্যে ছিল এক আত্মার সম্পর্ক, কেননা বাবা চলে যাওয়ার পর মাত্র ১৮ মাসের কম সময়ের মধ্যে মাও চলে গেলেন। বাবার মতো মাও ছিলেন একজন মহীয়সী নারী। আমার মা হালিমা জব্বার ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা, গীতিকার, পাবলিশড রাইটার এবং সর্বোপরি তিনি ছিলেন একজন সার্থক মা। আমার মা খুব ভালো রান্না করতেন। মা-বাবা একে অপরের জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। একজন অন্যজনকে উৎসাহ দিতেন কাজে। মা-বাবার বিয়ের সময় মায়ের বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। ৬০ বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ সংসারে মা ছিলেন সৃজনশীল সহধর্মিণী।”

শিল্পী মো. আবদুল জব্বারের সঙ্গে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ছিল এক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ দেশমাতৃকার বহু গানে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করেছেন।

শিল্পী মিথুন জব্বার আরো বলেন, “আমি যখন গাজী আঙ্কেলের সঙ্গে গান করি, তখন আমার মনে হয় বাবা আমার পাশে বসে আছেন। সমসাময়িককালে আমি গাজী আঙ্কেলের কাছে অনুপ্রেরণা পাই নতুন কিছু সৃষ্টি করার। পুরোনো দিনের গানের সাবলীল ও সৃজনশীল সুর ও গানের মর্ম করার মতো এখনকার গানে আর পাওয়া যায় না। উনাদের জ্ঞান সমুদ্র বিশাল আর আমি ছিলাম ক্ষুদ্র নদী। আমি আমার মা-বাবার কাছ থেকে শিখেছি যে মানুষের কর্মই তাঁর জীবনকে বাঁচিয়ে রাখে। আমার বাবা শিল্পী আবদুল জব্বার সারা জীবন দেশের জন্য গান করেছেন এবং দেশের মানুষের হৃদয়ের কথা গানের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। আমিও চাই, আমার বাবার দেখানো আলোর পথে নিজেকে দেশের ও দেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করতে। আমি প্রকাশনার জন্য আমার প্রিয় বাবার কাজ সব অনুসন্ধান এবং সংগ্রহ করছি, যেন পরবর্তী প্রজন্ম তাঁর কাজগুলো উপলব্ধি করতে পারে এবং সঠিক তথ্য পেতে পারে। যেহেতু আমি আমার বাবার সব গানের স্বত্বাধিকারী। এখন আমার জীবনের একমাত্র পেশা ও নেশা হলো গান।”