ঐশ্বরিয়াকে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন সালমান!
এটা বলা ভুল হবে না, হিন্দি চলচ্চিত্র অঙ্গনে সবচেয়ে আলোচনা জন্ম দেওয়া ও বিতর্কিত সম্পর্ক সালমান খান-ঐশ্বরিয়া রাইয়ের। এ নিয়ে আলোচনা বোধহয় দীর্ঘদিন চলবেও। সম্পর্ক ভাঙার পর ঐশ্বরিয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বহুবার তাঁকে শারীরিকভাবে আঘাত করেছেন সালমান। যদিও সালমান বলেছেন, সম্পর্ক থাকাকালে কখনোই ঐশ্বরিয়ার গায়ে হাত তোলেননি। তবে এক মধ্যরাতে ঐশ্বরিয়ার ভবনে গিয়ে যে কাণ্ড করেছিলেন, তা স্বীকার করেছেন ভাইজান।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওই সময় ঐশ্বরিয়া রাইকে পাগলের মতো ভালোবাসতেন সালমান খান। বিয়ে করতে চেয়েছিলেন তাঁকে। বিয়ের স্বীকৃতিও চেয়েছিলেন। সেই দিনগুলোতে ক্যারিয়ারের চূড়ায় অবস্থান করছিলেন সাবেক বিশ্বসুন্দরী। সে সময় বিয়েশাদি করে থিতু হওয়ার পরিকল্পনাই ছিল না তাঁর।
ঐশ্বরিয়ার সাড়া না পেয়ে খুশি হতে পারেননি সালমান। ২০০১ সালের নভেম্বরের এক রাতে সোজা ঐশ্বরিয়ার অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে হাজির হন দাবাং খান। ঘরের দরজায় আঘাত করে প্রিয় মানুষটিকে ডাকতে থাকেন। ঐশ্বরিয়ার অ্যাপার্টমেন্ট ছিল ১৭ তলায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, সালমান এও হুমকি দিয়েছিলেন, যদি ঐশ্বরিয়া তাঁর চাওয়া পূরণ না করেন, তবে তিনি ভবন থেকে লাফ দেবেন। রাত ৩টা পর্যন্ত ঐশ্বরিয়ার দরজা সজোরে আঘাত করতে থাকেন সালমান। তাঁর হাত দিয়ে নাকি রক্তও বের হচ্ছিল। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও দরজা খুলতে বাধ্য হয়েছিলেন ঐশ্বরিয়া, পরে ঢোকেন সালমান।
ওই ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পুরো বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। বেশ কয়েক মাস সালমান ও ঐশ্বরিয়া দুজনই মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন। চার মাস পর অবশেষে মুখ খোলেন সালমান। ওই ঘটনার কথা স্বীকার করেন। তবে এও বলেন, গণমাধ্যম এটা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করছে।
২০০২ সালের ফেব্রুয়ারিতে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সালমান খান বলেন, ‘ঘটনা সত্য, কিন্তু মিডিয়া অতিরঞ্জিত করেছে। ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে আমার সম্পর্ক রয়েছে। সম্পর্কে যদি বিবাদই না থাকে, তার মানে কেউ কাউকে ভালোবাসে না। অচেনা মানুষের সঙ্গে কেউ কি উচ্চকণ্ঠে ঝগড়া করে? আমাদের মধ্যে এমনটা ঘটেছে, কারণ আমরা একে অন্যকে ভালোবাসি। আর এখন তো ওই বিল্ডিংয়ে আমাকে পুলিশও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।’
বলে রাখা জরুরি, ওই ঘটনার পর সালমানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ঐশ্বরিয়ার বাবা। তবে সালমান বলেছিলেন, তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছেন। ঐশ্বরিয়ার বাবার প্রতি কোনো ক্ষোভ নেই তাঁর।
‘ওর (ঐশ্বরিয়া) মা-বাবা দারুণ মানুষ। আমাদের পরিবারের মতো ওঁরাও রক্ষণশীল। আমার অতীতের সম্পর্ক নিয়ে ওঁরা জেনেছেন এবং এ কারণে ওঁরা চান না উনাদের মেয়ের জীবনে আমি থাকি। এটা আমার দোষ, ওঁদের নয়। আগেই আমার এটা বোঝা উচিত ছিল। ঐশ্বরিয়ার মেলামেশায় ওনারা কখনো বাধা হয়ে দাঁড়াননি, আমিই খারাপ আচরণ করেছি। উনাদের সামনে আমার এহেন আচরণ ঐশ্বরিয়া পছন্দ করেনি। আমার বাবার সঙ্গে কেউ খারাপ আচরণ করলে কেউ নিশ্চয়ই ভালোভাবে নেবে না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ঐশ্বরিয়ার বাবা ঠিক কাজটিই করেছেন। এর বিরুদ্ধে আমার কিছু বলার নেই,’ বলেন সালমান।
যা হোক, পরে ঐশ্বরিয়া অভিষেক বচ্চনকে বিয়ে করেন। তাঁদের ঘরে এক কন্যাসন্তানও রয়েছে। আর সালমান খান আজও বলিউডের সুযোগ্য ব্যাচেলর রয়ে গেছেন!