‘আঙ্কেল’ ডাকত মেয়ে, প্রথম স্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ সঞ্জয় দত্তের!

Looks like you've blocked notifications!
সঞ্জয়ের প্রথম স্ত্রী রিচা শর্মা ও তাঁদের মেয়ে ত্রিশালা দত্ত। ছবি : সংগৃহীত

সব সময় আলোচনায় থাকতেই পছন্দ করেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত। ব্যক্তিগত নানা বিষয় নিয়ে অসংখ্যবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন ‘মুন্না ভাই’খ্যাত এ শক্তিমান অভিনেতা। বিতর্কও তাঁর চিরকালীন সঙ্গী। অবশ্য জীবনে এইকসঙ্গে আবেগপূর্ণ ও অশান্তিময় নানা অধ্যায় পেরিয়ে তিনি এখন পরিবার নিয়ে বেশ ভালোই দিন কাটাচ্ছেন। বর্তমান স্ত্রী মান্যতা দত্ত এবং দুই সন্তান ইকরা দত্ত ও শাহরান দত্তকে নিয়ে সুসময় কাটছে তাঁর।

বিনোদনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিল্মবিট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সঞ্জয়ের প্রথম কন্যা ত্রিশালা দত্ত তাঁর নানা-নানির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। সঞ্জয়ের প্রথম স্ত্রী রিচা শর্মা ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৯৬ সালে মারা যান। ত্রিশালা দত্ত হচ্ছেন সঞ্জয়-রিচা দম্পতির সন্তান।

এবার পেছনে ফেরা যাক। ১৯৯৩ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় দত্ত তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশ খোলামেলা আলোচনা করেন। প্রথম স্ত্রী রিচার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়া নিয়েও মুখ খোলেন জনপ্রিয় এ অভিনেতা। বিচ্ছেদের জন্য রিচাকেই দায়ী করেন সঞ্জয়।

সঞ্জয় স্বীকার করেন, নিজের কন্যা ত্রিশালা তাঁকে বাবার পরিবর্তে ‘আঙ্কেল’ বলে ডাকত। আর এতে ভীষণ রাগ হতো তাঁর। এজন্য প্রথম স্ত্রী রিচাকে চড়ও মেরেছেন সঞ্জয়।

এ ব্যাপারে ওই সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় বলেন, “ভীষণ রেগে গিয়েছিলাম। রিচাকে এ ব্যাপারে প্রশ্নও করেছিলাম। আমি পাশে না থাকলেও রিচার কি উচিত নয় যে আমার স্মৃতিকে সন্তানের মনে জীবিত রাখা? রিচাকে বললাম, ‘তোমার জায়গায় আমি থাকলে আর এ রকম পরিস্থিতি হলে তোমার স্মৃতিকে ধরে রাখাটা নিশ্চিত করতাম।’ কিন্তু কখনোই সে তা করেনি।”

সঞ্জয় আরো বলেন, “আমার মনে আছে, রিচা তখন হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায়। ওর বাবা-মা আমাকে বললেন, ‘এখন ত্রিশালার কী হবে?’ আমি পাল্টা বললাম, ‘ওর কী হবে?’ তাঁরা জানালেন যে ত্রিশালাকে তাঁরা রাখতে চাচ্ছেন। আমি বললাম, ‘আপনারা এভাবে কেন কথা বলছেন? রিচা তো এখনো বেঁচে আছে। সে এখনো মারা যায়নি। আপনাদের অগ্রাধিকারে আপনাদের মেয়ের থাকার কথা।’”

একপর্যায়ে ত্রিশালা তাঁর নানা-নানির সঙ্গেই থাকতে শুরু করে। এ ব্যাপারে সঞ্জয় বলেন, ‘ওকে নিজের কাছে রাখতে আমাকে যুদ্ধ করতে হতো। আর কত যুদ্ধ করব? আমি আসলেই ক্লান্ত। তাই এই মুহূর্তে মেয়েকে আমার হেফাজতে নিতে চাই না। কিন্তু যা-ই ঘটুক, আমি যেকোনো সময় ওর সঙ্গে দেখা করার স্বাধীনতা চাই।’

ওই সাক্ষাৎকারে কন্যার সঙ্গে দূরত্ব সম্পর্কে সঞ্জয় বলেছিলেন, ‘আমি ওকে ভীষণ অনুভব করি। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস বড় হওয়ার পরে সে তার মাকে বাবার অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। আমি তখন ত্রিশালার কাছে যাব। কিন্তু তখনো রিচার কাছে আমি ফিরব না।’

সঞ্জয়ের পরিবারের কাউকেই ত্রিশালা না চেনায় দুঃখ প্রকাশ করেন ‘মুন্না ভাই’। সঞ্জয় জানান, তিনি ত্রিশালাকে ভারতে নিয়ে যেতে চান, যাতে ত্রিশালা তাঁর বাবার পরিবারের সবাইকে চিনতে পারেন।

সেই সাক্ষাৎকারের পর পেরিয়েছে দীর্ঘ বছর। জানা যায়, ত্রিশালার সঙ্গে সঞ্জয় ও তাঁর তৃতীয় স্ত্রীর সম্পর্ক এখন মোটামুটি ভালো। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামেও এ ব্যাপারে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি। এক ভক্ত ত্রিশালার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, বাবা-মা ছাড়া থাকতে কেমন লাগে? জবাবে ত্রিশালা বলেন, ‘এটা ভালো। আমার মনে হয় শুরু থেকেই আমি তাঁদের সঙ্গে থাকি না ( শৈশবে থেকেছিলাম, কিন্তু আমার অতটা মনে নেই), সুতরাং আমি আসলে বলতে পারব না যে তাঁদের ছাড়া থাকতে কেমন লাগে।’

বাবা নাকি মা, কাকে বেশি পছন্দ? এমন প্রশ্নের উত্তরে ত্রিশালা বলেন, ‘আমার স্বভাব ও রাগ বাবার মতো। অন্যদিকে আমার দয়া, ভদ্রতা ও ভালোবাসা  মায়ের মতো। সুতরাং বাবা-মা দুজনের অভ্যাসই পেয়েছি আমি।’

সঞ্জয় দত্তের মেয়ে হিসেবে কেমন লাগে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ত্রিশালা বলেন, ‘এটি সাধারণ অনুভূতি। সঞ্জয় অন্যান্য বাবার মতোই। আমি যখন তাঁর সঙ্গে থাকি, আমার মনে হয় আমি আমার বাবার সঙ্গে আছি। এর চেয়ে ভিন্ন কোনো অনুভূতি আমার হয় না।’

সঞ্জয় দত্তকে সর্বশেষ ‘কলঙ্ক’ সিনেমায় দেখা গিয়েছিল। ছবিটি অবশ্য বক্স অফিসে সুপারফ্লপ হয়।