অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন নায়িকা মিষ্টি
‘চিনি বিবি’ ছবির পরিচালক নজরুল ইসলাম বাবু জানালেন দুর্ঘটনাটির কথা। তিনি বলেন, '২০১৪ সালের মার্চ মাসের ৮ তারিখ জামালপুরের একটি নদীতে শুটিং করছিলাম। আমরা শুটিংয়ের নিয়ম অনুযায়ী শট ভাগ করে নেই। প্রথমে নৌকা ডুবে যাচ্ছে, এমন কিছু দৃশ্য নিলাম। এরপর মিষ্টি আর অমিত হাসান ডুবছে, এমন দৃশ্য নিচ্ছিলাম। নৌকার মাচাটা আলাদা করা হয়েছে। চার জন লোক মাচার চারদিকে ধরে আছে, ভিতরে মিষ্টিরা নৌকায় ডুবছে। চারজন মাচা ধরে আস্তে আস্তে পানির নিচে যাচ্ছে, দেখে মনে হবে আসলেই একটা নৌকা ডোবার দৃশ্য। খুব ভালো একটা দৃশ্য ধারণ করা হলো। হঠাৎ খেয়াল হলো, হায় হায়, মিষ্টিরা পানি থেকে উঠছে না কেন? কোনো দুর্ঘটনা হলো না তো?”
শুটিংয়ের সময় নায়িকা মিষ্টি জান্নাতকেসহ নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার সময় সত্যি সত্যি ডুবে মরতে বসেছিলেন চিনি চরিত্রে অভিনয়কারী নায়িকা মিষ্টি জান্নাত। নৌকা ডুবানোর সময় ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। এর ফলে পানি থেকে উঠতে পারছিলেন না জান্নাত। তিনি বলেন, ‘আমরা মারাই যাচ্ছিলাম। আমি আর অমিত ভাই গলা পানিতে দাঁড়িয়ে আছি, নৌকার ছাউনি ধরে চারদিক থেকে চারজন দাড়িয়ে আছে। আমাদের বলা হলো অ্যাকশন বলার সাথে সাথে ছাউনিসহ সবাই পানিতে ডুব দিব, কথামতো তাই হলো। প্রায় এক মিনিট হয়ে গেল আমরা পানির নিচে, একটা ছাউনি দিয়ে আমাদের ঘিরে রেখেছে, মাটির জন্য পাশ কেটে বেরোতে পারছি না, দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অমিত ভাই হাত পা ছুঁড়তে লাগলেন। আমার মনে হচ্ছিল আমরা মারা যাব, আজই জীবনের শেষ দিন। এমন সময় অমিত ভাই একটা লাঠি দিয়ে অনেক ঠেলা দিয়ে ছাউনিটা সরিয়ে দিলেন, চোখে আলো লাগল। তারপর আর কিছুই মনে নেই।’
পরিচালক নজরুল ইসলাম বাবু বলেন ‘হঠাৎ করেই মনে হলো, ভালো শট তো নিলাম, কিন্তু আমার আর্টিস্ট কোথায়? পানির নিচে বসে আছে চারজন ছাউনি ধরে। তাড়াতাড়ি ওদের উঠানোর ব্যবস্থা করতে নিজেই নেমে গেলাম পানিতে। ইতিমধ্যে দেখি অমিত ভাই উঠে আসছে, আর পানি খেয়ে মিষ্টির অবস্থা খারাপ। তাড়াতাড়ি শুটিং প্যাকআপ করলাম ওইদিনের মতো।’
মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে নজরুল ইসলাম বাবুর ‘চিনি বিবি’। ওয়াদুদ রঙ্গিলার লেখা কাহিনীর ওপর ভিত্তি করেই নির্মিত হয়েছে এ ছবির গল্প। এতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অমিত হাসান, মিষ্টি জান্নাত ও জয় চৌধুরী। মৌলিক গল্প নিয়ে বড় ক্যানভাসের এই ছবির সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে জাজ মাল্টিমিডিয়া।
এতে আরো অভিনয় করেছেন আলীরাজ, আনোয়ারা, আবদুল্লাহ সাকি, ওয়াদুদ রঙ্গিলা, ববিসহ দেড় শতাধিক শিল্পী। ছবিতে ১০টি গানে বাংলাদেশের ১১ জন স্বনামধন্য সংগীতশিল্পী কণ্ঠ দিয়েছেন। তাঁরা হলেন এন্ড্রু কিশোর, সাবিনা ইয়াসমিন, মনির খান, কনকচাঁপা, রাজীব, বেবি নাজনীন, আগুন, মমতাজ, ইতি, রিয়াদ ও ওয়াদুদ রঙ্গিলা।
চলচ্চিত্রটির আবহ সংগীত করেছেন ইমন সাহা, যন্ত্রসংগীত করেছেন আলমগীর, গীতিকার ও সুরকার হিসেবে রয়েছেন গল্পকার ওয়াদুদ রঙ্গিলা নিজেই।