শঙ্খচিল

সংকোচ ছাড়াই অভিনয় করেছে সাঁঝবাতি : বুড়ি আলী

Looks like you've blocked notifications!

সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘শঙ্খচিল’ ছবিতে রূপসা নামের কিশোরী মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছে শিশুশিল্পী সাঁঝবাতি। এটাই ছিল তাঁর জীবনের প্রথম অভিনয়। সাঁঝবাতির মা মডেল-অভিনেত্রী বুড়ি আলী ছবির শুটিংয়ের সময় টানা ৩৮ দিন ছিলেন মেয়ের সঙ্গে। এনটিভি অনলাইনের বিশেষ সাক্ষাৎকারে শুটিং চলাকালীন অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বুড়ি আলী ও সাঁঝবাতি।

প্রশ্ন : ‘শঙ্খচিল’-এর শুটিংয়ের জন্য আপনারা তো প্রথমে কলকাতার টাকি শহরে গিয়েছিলেন। কেমন ছিল প্রথম দিনের শুটিং?

বুড়ি আলী : অনেক বেশি রোদের তাপ ছিল। তার পরও অনুভূতি দারুণ ছিল। একটা আমেজের মধ্যে ছিলাম, কারণ আমার মেয়ে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয় করছে, এটা ভাবতেই আমার ভালো লাগত। টাকি শহর থেকে বাংলাদেশের সাতক্ষীরায় দেবহাটায় আমরা শুটিংয়ের জন্য এসেছিলাম। সেখানে আরো প্রচণ্ড রোদ ছিল। কিন্তু আমার মেয়ে খুব সাবলীলভাবেই অভিনয় করেছে। আর গৌতম ঘোষের শুটিং ইউনিট ছিল অনেক গোছানো।

প্রশ্ন : সাতক্ষীরায় শুটিং চলাকালীন আপনারা কোথায় ছিলেন?

বুড়ি আলী : একটা বাংলোতে আমরা ছিলাম। বাংলোটি ছিল তিনশ একরের মতো। বিশাল খোলা জায়গা। আমরা বেশ মজা করে সেখানে সময় কাটিয়েছি। অনেক মনোরম পরিবেশ ছিল। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় যেখানে ছিলেন, সেখানে অনেক বড় একটা পুকুর ছিল।

প্রশ্ন : সাঁঝবাতি, মায়ের সঙ্গে শুটিংয়ের সময় তোমার সময় কেমন কেটেছে?

সাঁজবাতি : অনেক গরম ছিল। শুটিংয়ের একপর্যায়ে আমি কান্নাকাটি করেছিলাম। মা তখন আমাকে অনেক বুঝিয়েছিলেন। আমাকে সানস্ক্রিম লাগিয়ে দিতেন। এ ছাড়া সবার থেকে মা আমার বেশি যত্ন নিয়েছিলেন। একমুহূর্তের জন্য মা আমাকে আড়াল করেননি। যেমন শুটিংয়ের সময় আমার মাথার ওপর ছাতা ধরে রাখা হতো, কিন্তু মা ছাতা ছাড়াই আমার আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকতেন। আমার জন্য মা অনেক কষ্ট করেছেন।

প্রশ্ন : শুটিংয়ের সময় তোমার মা দুদিনের জন্য ঢাকায় চলে এসেছিল। তখন তোমার কেমন লেগেছে?

সাঁঝবাতি : হ্যাঁ, মা তাঁর নাটকের শুটিংয়ের জন্য ঢাকায় চলে এসেছিল। শুটিং ইউনিটে আমার দাদা হাবিবুর রহমান খান ছিলেন। তাই একা একা লাগত না। তবে মাকে অনেক মিস করেছিলাম। রাতে ঘুমানোর সময় একদিন খাট থেকে পড়ে গিয়েছিলাম। পরে শ্রীরঞ্জনী রায় আপু আমাকে বলেছিলেন, ‘তোমার কষ্ট হচ্ছে কি না!’ আমি আপুকে কিছুই বুঝতে দিইনি। কিন্তু সত্যি বলতে, সেদিন আমার খুব কান্না পেয়েছিল।

বুড়ি আলী : আসলে ঈদের নাটকের শিডিউল অনেক আগে থেকেই দেওয়া ছিল। তাই ঢাকায় দুদিনের জন্য এসেছিলাম।

প্রশ্ন : সাঁঝবাতি, তোমার বিশেষ কোন স্মৃতির কথা মনে পড়ে?

সাঁঝবাতি : অনেক আছে। একটার কথা বলি। একদিন রাতে কাউকে না জানিয়ে আমি একটা কৌটা খুলি। শুটিংয়ের জন্য সেখানে রাখা হয়েছিল অনেক তেলাপোকা। এর পর সব তেলাপোকা আমার পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। ৪০টির মতো তেলাপোকা হবে। আমি খুব কেঁদেছিলাম। এ ছাড়া শুটিংয়ের সময় অনেক লাল পিঁপড়া ছিল। আমি কিন্তু ভয় পাইনি। শুধু গরমে বিরক্ত লেগেছিল। এ জন্য অনেক বেশি তেঁতুলের শরবত খেয়েছিলাম আমি।

প্রশ্ন : বুড়ি আলী, সাঁঝবাতির অভিনয় আপনার কাছে কেমন লেগেছে?

বুড়ি আলী : ওর মতো বয়সে আমি নিজেও মডেলিং করেছি। তবে আমি মনে করি, আমার চেয়েও আমার মেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। কোনো দ্বিধা-সংকোচ ছাড়াই অভিনয় করেছে সে। অধিকাংশ দৃশ্য এক টেকে ওকে হয়েছিল। এতে বেশ বিস্মিত হয়েছিলেন গৌতম দাদা। আমাকে তিনি বলেছিলেন, ‘এই দৃশ্য বড়রা করলে অনেকবার শট নিতে হতো।’