দুনিয়া কাঁপাচ্ছে ‘জেসন বর্ন’
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/08/04/photo-1470307084.jpg)
মুক্তির পর থেকে দুনিয়াজোড়া চলছে ‘জেসন বর্ন’ দেখার হিড়িক। ম্যাট ডেমন অভিনীত এই স্পাই থ্রিলার সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতেই বক্স অফিসে আয় করেছে প্রায় সাত কোটি মার্কিন ডলার। ২০০৭ সালের ‘দ্য বর্ন আলটিমেটাম’-এর দীর্ঘ নয় বছর পর এই অ্যাকশন ফ্র্যাঞ্চাইজে ম্যাট ডেমনের প্রত্যাবর্তন আশাতীত সাফল্য এনে দিয়েছে।
ম্যাট ডেমন ছাড়া ‘দ্য বর্ন লিগ্যাসি’ খুব একটা সফলতার মুখ দেখেনি বক্স অফিসে। বিশ্ব জোড়া আয়ের দিক দিয়ে ‘দ্য বর্ন আলটিমেটাম’-এর চেয়ে পিছিয়ে ছিল প্রায় ১৫ কোটি ডলার। ডেমন আর গ্রিনগ্রাসকে একসাথে দেখার জন্য দর্শকরা উদগ্রীব হয়ে ছিল দীর্ঘ সময়, এমনটাই ধারণা ছিল ‘ইউনিভার্সাল’-এর। ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে এই ধারণা ভালোভাবেই কাজে দিয়েছে।
ছবির প্রাথমিক আয় এরই মধ্যে পেছনে ফেলেছে ‘দ্য বর্ন আলটিমেটাম’-এর আয়কে। সিনেমাটি নির্মাণের পেছনে ইউনিভার্সাল ব্যয় করেছে ১২ কোটি ডলার, আর মুক্তি দিয়েছে ৪ হাজার ২৬টি হলে। ঢাকার বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্সেও চলছে ছবিটি।
‘জেসন বর্ন’ এই ক্রমবর্ধমান সাফল্য নিয়ে কমস্কোর জ্যেষ্ঠ বাণিজ্য বিশ্লেষক পল ডের্গারাবেডিয়ান বলেন, ‘সিনেমাটির বাণিজ্যিক সাফল্য এটাই প্রমাণ করে যে এই ফ্র্যাঞ্চাইজের সময় ফুরোয়নি এখনো। নির্মাতারা যদি নিয়মিত হারে বর্নকে দর্শকদের সামনে নিয়ে আসতে চান, আমার মনে হয় দর্শকরা তা সানন্দেই গ্রহণ করবে।’
বক্স অফিসে ‘জেসন বর্ন’-এর সাফল্য আর ম্যাট ডেমনের ফিরে আসা নিয়ে ব্যস্ত সবাই, তবে বক্স অফিসে কাঁপিয়ে চলছে সপ্তাহের আরো কয়েকটি বড় সিনেমা। এসটিএক্সের ‘ব্যাড মমস’ আয় করেছে সম্মানজনক দুই কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার এবং অবস্থান করছে তৃতীয়তে। মাত্র দুই কোটি মার্কিন ডলার বাজেটের কোনো সিনেমার জন্য এক সপ্তাহের এমন আয় রীতিমত চোখ ধাঁধানো। এ ছাড়া ‘সিভিল ওয়ার ড্রামা’ ‘ফ্রি স্টেট অব জোনস’-এর ভরাডুভির পর সিনেমাটির এমন আয় আশা জোগাচ্ছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসটিএক্স এন্টারটেইনমেন্টকেও।
নবাগতদের মধ্যে লায়ন্সগেটের দুই কোটি মার্কিন ডলার বাজেটের ‘নার্ভ’ মুক্তির প্রথম পাঁচ দিনেই তুলে নিয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। ডেভ ফ্র্যাঙ্কো আর এমা রবার্টস জুটির এই থ্রিলার বক্স অফিসে বেশ ভালো অবস্থানেই আছে।
অন্যদিকে প্যারামাউন্টের ‘স্টার ট্রেক বিয়ন্ড’ প্রথম সপ্তাহ শেষ করতে না করতেই আয়ের দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়েছে প্রায় ৬০ শতাংশের মতো। দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে এর আয় দুই কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত জনপ্রিয় এই ‘সাই-ফাই’ সিক্যুয়েলের আয় মাত্র ১০ কোটি ৫৭ লাখ মার্কিন ডলার। সাড়ে ১৮ কোটি মার্কিন ডলারের বিশাল বাজেটের কোনো সিনেমার জন্য এমন আয়ের অঙ্ক খুব একটা সুখকর নয়।
ইল্যুমিনেশন আর ইউনিভার্সালের যৌথ প্রযোজনা ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটস’ ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছে এই মৌসুমের অন্যতম সুপারহিট সিনেমাগুলোর একটি। এক কোটি ৮২ লাখ মার্কিন ডলারের আয় নিয়ে সিনেমাটি এই সপ্তাহে আছে চতুর্থ অবস্থানে। এখন পর্যন্ত সর্বমোট ২৯ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলারের আয় দিয়ে বছরের শুরু থেকেই আরম্ভ হওয়া ‘ইউনিভার্সাল’-এর ব্যবসার মন্দা কাটাতে সাহায্য করছে বেশ। ‘দ্য হান্টসম্যান : উইন্টার ওয়ার’ আর ‘ওয়ারক্র্যাফট’ দিয়ে বছর শুরু করা এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অবশেষে আবারো লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটস’ আর ‘জেইসন বর্ন’ দিয়ে।
নিউ লাইনের ‘লাইটস আউট’-এর এ সপ্তাহের আয় এক কোটি ৮ লাখ মার্কিন ডলার। সব মিলিয়ে মুক্তির প্রথম দুই সপ্তাহ শেষে হরর সিনেমাটির সর্বমোট আয় চার কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার। বক্স অফিসে ‘লাইটস আউট’-এর অবস্থান পঞ্চমে।
সব মিলিয়ে বক্স অফিসের জন্য এই মৌসুমটা ভালো মন্দের মিশেল। ‘অ্যালিস থ্রু দ্য লুকিং গ্লাস’,‘দ্য লিজেন্ড অব টারজান’ আর ‘দ্য বিএফজি’ এর মতো নামিদামি সিনেমাগুলো খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি বক্স অফিসে। কিন্তু এই সপ্তাহের আয়ের অঙ্কটা আবারো কিছুটা গতি এনে দিয়েছে হলিউডের সিনেমা বাজারে। বিশেষ করে ‘জেসন বর্ন’ আর ‘ব্যাড মমস’-এর কল্যাণেই সম্ভব হয়েছে। এই দুই সিনেমা একাই ধরে রেখেছে মোট ব্যবসার ৩০ শতাংশ।