ত্রিপুরায় মঞ্চস্থ হবে বাংলাদেশের ‘অমানিশা’
ভারতের ত্রিপুরায় ধর্মনগর টাউন হলে আগামী ১৬ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মঞ্চস্থ হবে নাট্যকার রুবাইয়াৎ আহমেদের লেখা নাটক ‘অমানিশা’। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরিকল্পনায় আছেন মনিদীপ দাস সুমন। এটি লার্নার্স এডুকেশনাল সোসাইটি ও নাট্যমঞ্চের (ত্রিপুরা) যৌথ প্রযোজনা।
একটি নামহীন নগরে সবাই উল্টো করে হাঁটে। তাতেই তারা অভ্যস্ত এবং তাই স্বাভাবিক বলে মনে করে। সেই নগরে সবকিছু নির্দিষ্ট করে দেওয়া, ইতিহাস থেকে শুরু করে আচার-আচরণ সবই। এই নগরে কারো কোনো নাম নেই। সবাই পেশা অনুসারে শুধুমাত্র নম্বর বা ডিজিটে পরিচিত। নগরটিতে রয়েছে একটি কালো সুড়ঙ্গ। সেখানে কাউকে পাঠিয়ে দিলে আর ফিরে আসে না। সবাই জানে ওই সুড়ঙ্গ চলে গেছে মহানন্দলোকে, চিরপ্রশান্তির অঞ্চলে। নগরটিতে প্রতিবছর সেরা কৃতীমানকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে কৃতী ব্যক্তিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ওই সুড়ঙ্গে। এই নগরেই একজন কবি বাস করেন। সোজা হাঁটার দায়ে তাঁর দুই পা কেটে নেওয়া হয়। তাঁর ওপর নজরদারি করার জন্য নিয়োগ করা হয় এক নারীকে। এই কবিই কেবল বুঝতে পারেন সবাই আসলে উল্টো পথে চলছে। তিনি বিষয়গুলো নিয়ে একটি বই লেখেন। বইটি আলোচিত হয় এবং বিক্রিও হয় প্রচুর। বইটিতে তিনি আসলে এই অচলায়তনের অনেক গুমর ফাঁস করে দেন। নগর প্রশাসন প্রমাদ গোনে।
তারা সব বই বাজেয়াপ্ত করে পুড়িয়ে ফেলে, প্রকাশক নিখোঁজ। নগর প্রশাসকও একসময় বুঝতে পারেন, তিনি সিস্টেমের কাছে বন্দি হয়ে গেছেন। তাঁরও নিজস্বতা বলে কিছু নেই। তিনি পরিকল্পনা করেন, নিজেকে ধ্বংস করার মধ্যদিয়ে এই নিয়মতান্ত্রিকতার বেড়াজাল ছিন্ন করার। এবার নগর প্রশাসন কবিকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে। পুরস্কার হিসেবে কবিকে ঠেলে দেওয়া হয় সেই সুড়ঙ্গ মুখে। আর ঠিক সেই সময় কবির ওপর নজরদারিতে নিয়োজিত নারী কবির বাজেয়াপ্ত হওয়া বই থেকে কয়েক ছত্র উচ্চ স্বরে পাঠ করেন, যেন বা মন্ত্রের মতো। এর ফলে চৈতন্য ফেরে নগরবাসীদের। তারা শাসনযন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এভাবেই এগোতে থাকে নাটকের কাহিনী।
নাটকটিতে অভিনয় করেছেন অমিতাভ, বাদল, কৌস্তভ, যিশু, সন্তোষ, সুজয়, সৌমিত, রত্নদীপ, মনিদীপ, ঋতুরেখা, সোনারেখা প্রমুখ।
দ্বিতীয় মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে ২৩ আগস্ট, ২০১৬ আসামের করিমগঞ্জ কলেজ অডিটরিয়ামে।