অমিতাভ-রেখা
আবার দেখা হলো দুজনে
বলিউডের ভেতরে-বাইরে প্রেম কিংবা প্রেমের গুজব তো খুব সাধারণ ঘটনা। কিন্তু কিছু কিছু বিখ্যাত প্রেম আছে, যা সব সময়ই আলোচনায় চলে আসে। বলিউডের এভারগ্রীন লাভস্টোরিগুলোর মধ্যে অন্যতম অমিতাভ বচ্চন ও রেখার প্রেম।
রোববার, মুম্বাইয়ের পৃথ্বী থিয়েটারে আবার দেখা হলো দুজনের। তবে কথা হয়নি, শুধুই চোখের দেখা। উপলক্ষ শশী কাপুরের দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার গ্রহণ। শশী কাপুরের সাথে বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন রেখা ও অমিতাভ। রেখা-অমিতাভের শেষ ছবি ‘সিলসিলা’-তেও ছিলেন শশী। সেই সূত্রে একই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন দুজনেই। ভারতীয় ট্যাবলয়েড দৈনিক মিড ডে একটি ছবি ছাপিয়েছে, যেখানে একই ফ্রেমে পাওয়া গেল দুজনকে।
ফ্ল্যাশব্যাক
সময়ের কাঁটাতারে ভালোবাসা সরে গেছে দূরে। সেই প্রেম নেই, কিন্তু রেশ রয়ে গেছে। ১৯৭৬ সালে ‘দো আনজানি’ ছবির সেট থেকেই প্রেমের শুরু। তবে সেটা তখনো ডালপালা মেলেনি, ডুবে ডুবে প্রেমের জল খাওয়া। ১৯৭৮ সালে ‘গঙ্গা কি সুগন্ধ’ ছবির সেট থেকে ছড়িয়ে পড়ে অমিতাভ-রেখার প্রেমের খবর। সেটে একজন সহ-অভিনেতার ওপর খেপে গিয়েছিলেন অমিতাভ, কারণ রেখার সাথে দুর্ব্যবহার করেছিলেন সেই অভিনেতা।
সেখান থেকেই খবর ছড়িয়ে পড়ে। অমিতাভ-রেখার প্রেমে ঢুকে যায় মিডিয়ার নাক। অনেকে আগ বাড়িয়ে তাঁদের বিয়ের খবরও ছাপিয়ে দিয়েছিল। সেটা অনেকেই তখন বিশ্বাস করেছিলেন যখন ঋষি কাপুর ও নিতু সিংয়ের বিয়েতে সিঁদুর ও মঙ্গলসূত্র পরে হাজির হয়েছিলেন রেখা।
অমিতাভের ঘর তখনো শান্ত। অভিনেত্রী জয়া ভাদুড়ি পুরোদস্তুর গৃহিণী জয়া বচ্চন। একদিন রেখাকে রাতের খাবারের আমন্ত্রণ দিলেন। ডেকে খুব শান্ত গলায় বলে দিলেন, যত যাই হোক স্বামীকে ত্যাগ করবেন না তিনি।
জয়ার দৃঢ়তাই অমিতাভকে আবারও সংসারে ফিরিয়ে এনেছিল। যদিও এই সম্পর্কের ব্যাপারে অমিতাভ কখনো মুখ খোলেননি, তবে মাঝেমধ্যে রেখা কিছুটা মুখ খুলেছেন মিডিয়ার সামনে। ১৯৮৪ সালে ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেখা বলেছিলেন, ‘নিজের ইমেজ, পরিবার এবং সন্তানদের রক্ষার জন্য চুপ থেকেছেন অমিতাভ। আমার প্রতি তাঁর বা তাঁর প্রতি আমার ভালোবাসা সম্পর্কে মানুষ কী জানে? আমি তাঁকে ভালোবাসি এবং সেও আমাকে ভালোবাসে, ব্যস!’
রেখা আরো যোগ করেন, ‘মিস্টার বচ্চন পুরোনো দিনের মানুষ। সে কাউকে কষ্ট দিতে চায় না। নিজের স্ত্রীকে তো নয়ই।’
এই সম্পর্কের ভেতরে-বাইরে টানাপড়েনে ক্ষতি হয় বলিউডের। অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এই জুটি একসাথে ছবি করা কমিয়ে দিলেন। ১৯৮১ সালের ‘সিলসিলা’ ছিল তাঁদের সবশেষ ছবি। এই ছবিতে আরো ছিলেন জয়া বচ্চন ও শশী কাপুর। ছবিটির প্রযোজক এবং পরিচালক ছিলেন যশ চোপড়া।
যশ চোপড়ার কথা দিয়েই শেষ করা যাক। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘সিলসিলা’ ছবির শুটিং নিয়ে যশ চোপড়া বলেছিলেন, ‘ছবির শুটিংয়ে আমি খুব ভয়ে ছিলাম। একে জয়া অমিতাভের বউ আর রেখার সাথে তখন প্রেম চলছে অমিতাভের। বাস্তব জীবনের এই সংকটটা ছবির গল্পেও ছিল। বাস্তব জীবনে নিজেদের চরিত্রগুলোই ছবিতে অভিনয় করছিলেন তাঁরা। যে কোনো সময় পরিস্থিতি আমার নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। ভয়ে ভয়েই কাজটা করেছিলাম, তবে শেষমেশ ভালোমতোই শেষ করতে পেরেছিলাম।’