লোকসংগীত উৎসব
শেষ দিনের আকর্ষণ ছিল ‘নুরান সিস্টার্স’
লাখো মানুষকে সুর-ছন্দের মায়াজালে বেঁধে শেষ হলো দেশজুড়ে সাড়াজাগানো সংগীতানুরাগীদের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব-২০১৬’। তিন দিনের এ উৎসবে দর্শক উপভোগ করেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের লোকসংগীত শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর সব পরিবেশনা। উৎসবের তৃতীয় দিনের সমাপনী আয়োজনও ছিল বেশ চমকপ্রদ।
গতকাল শুরুর দিকে লোকসমাগম কিছুটা কম দেখা গেলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে মানুষের ঢল। কারণ, শেষ দিনে সংগীতপ্রেমীদের মূল আকর্ষণই ছিল বারী সিদ্দিকী ও পবন দাস বাউল। তবে তাঁদের সঙ্গে নতুন আকর্ষণ হিসেবে যোগ হয়েছে আরো একটি নাম, ভারতের ‘নুরান সিস্টার্স’।
ঘড়ির কাঁটা রাত ১০টা ছুঁতে কয়েক মিনিট বাকি, তখন মঞ্চে এলেন ভারতের নুরান সিস্টার্স। মূলত শেষ দিনের আকর্ষণটা তাঁদের দিয়েই শুরু। নুরান সিস্টার্সের দুই বোন জ্যোতি নুরান ও সুলতানা নুরানের গান আর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়েছেন স্টেডিয়ামের সব দর্শক। সুফি-কাওয়ালি ঘরানায় গানে মাতিয়ে দেন পুরো স্টেডিয়াম। একে একে গেয়েছেন ‘আল্লাহু আল্লাহু, দয়াবান’, ‘যুগ্লি পাটাকা গুড্ডি’ ও ‘দমাদম মাস্তো কালান্ডার’সহ বেশ কিছু দুর্দান্ত গান। তাঁদের এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের রেশ কাটাতে বেশ সময় নিয়েছেন দর্শক-শ্রোতারা। এরপর অনেকটা সময় স্টেডিয়ামে তেমন উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি।
তাঁদের পরিবেশনার ঠিক আগেই পুবালি বাতাসে দর্শককে ভাসিয়েছেন বারী সিদ্দিকী। ‘আমার ঘরে জ্বালা বাইরে জ্বালা’, ‘আজ নিশীতে আসতে পারে বন্ধু কালাচান’, ‘শুয়াচান পাখি আমার’সহ একে একে গেয়ে শোনান বাংলার লাখো মানুষের মুখে মুখে ঘুরে ফেরা সব গান।
শেষ আকর্ষণ হিসেবে রাত প্রায় ২টার দিকে মঞ্চে আসেন পবন দাস বাউল। যার জন্য গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন তাঁর ভক্তরা, সেই অপেক্ষার প্রতিদান হিসেবে ভক্তদেরও সুরের মূর্ছনায় ভাসালেন তিনি। গেয়ে শোনান ‘দে দে পাল তুলে দে’, ‘খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধো মন’ ও ‘দিন দুনিয়ার মালিক খোদা, তোমার দিল কি দয়া হয় না’র মতো পরিচিত সব লোকগান।
তাঁর পরিবেশনার মধ্য দিয়েই শেষ হয় এবারের ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব’। এবারের আসরে দেশ-বিদেশের ১২৫ জনের বেশি শিল্পী অংশগ্রহণ করেন। এ উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশ, ভারত, তুরস্ক, ফ্রান্স, কানাডা, স্পেন ও ব্রিটেনের নামকরা লোকগানের শিল্পীরা।