ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রয়াণ দিবস আজ
ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রয়াণ দিবস আজ। ২০১৩ সালের ৩০ মে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এই নির্মাতা। তিনি ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের অনুরাগী।
তার বাবা-মা উভয়েই চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাবা সুনীল ঘোষ ছিলেন তথ্যচিত্র-নির্মাতা ও চিত্রকর।
ঋতুপর্ণ ঘোষ সাউথ পয়েন্ট হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন ভারতের এলজিবিটি সম্প্রদায়ের এক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
জীবনের শেষ বছরগুলিতে তিনি রূপান্তরকামী জীবনযাত্রা নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন। তিনি নিজের সমকামী সত্ত্বাটিকে লুকোছাপা না করে খোলাখুলিভাবে স্বীকার করে নেন। যা ভারতের চলচ্চিত্র জগতের খুব কম মানুষ করেছেন।
নিজের নির্মাণে লিঙ্গ বৈষম্যের বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন তিনি। এসব কারণে অন্তহীন নিন্দা সহ্য করলেও নিজের চিন্তা-আদর্শ কখনও বিসর্জন দেননি তিনি।
ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রয়াণ দিবসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত লেখেন, ‘ঋতুপর্ণ ঘোষের চলে যাওয়া আমাদের জন্য এক ভীষণ বড় অসম্পূর্ণ ক্ষতি। একজন বাঙালি পরিচালক হয়ে তিনি সারা বিশ্ব জুড়ে সম্মান অর্জন করেছিলেন। ‘দহন’, ‘উৎসব’ ওনার সাথে করা আমার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুটি ছবি। আরও অনেক অনেক কাজ করা বাকি ছিল, দাদা হিসাবে আরও কিছু দিন যদি ওনাকে পেতাম!! ওনার স্নেহ, ওনার ভালোবাসা খুব মিস করি। অনেক স্মৃতি ওনাকে ঘিরে। কিন্তু আমার বিশ্বাস ইনি যেখানে গেছেন হয়তো ওখানেও কিছু সৃষ্টি করে যাচ্ছেন। ভালো থেকো ঋতু দা।’
১৯৬৩ সালের ৩১ আগস্ট কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার ক্রিয়েটিভ আর্টিস্ট হিসেবে ঋতুপর্ণ ঘোষের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল। ১৯৯২ সালে মুক্তি পায় তার প্রথম সিনেমা ‘হীরের আংটি’। ১৯৯৪ সালে দ্বিতীয় ছবি ‘উনিশে এপ্রিল’ মুক্তি পায়। ছবিটি ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায়।
এরপর একে একে নির্মাণ করেছেন ‘দহন’, ‘তিতলি’, ‘রেইনকোট’, ‘চোখের বালি’, ‘অন্তরমহল’, ‘দোসর’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘আবহমান’, ‘নৌকাডুবি’র মতো অনেক নন্দিত চলচ্চিত্র।
ঋতুপর্ণ ঘোষ দুই হাতে কুড়িয়েছেন অনেক সম্মান তথা পুরস্কার। দুই দশকের কর্মজীবনে তিনি ১২টি জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছিলেন।