গণমাধ্যমে ভুল ছবি প্রকাশ : জেবা জান্নাতের মামলার হুঁশিয়ারি

Looks like you've blocked notifications!
অভিনেত্রী জেবা জান্নাত। ছবি : ফেসবুক থেকে নেওয়া

প্রতারণা মামলায় নায়িকা জেবা চৌধুরী জয়ার তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) এই রায় দেওয়া হয়। তবে কয়েকটি গণমাধ্যম এ সংক্রান্ত খবরে জেবা চৌধুরী পরিবর্তে ছোটপর্দার অভিনেত্রী জেবা জান্নাতের ছবি ব্যবহার করেছে। আর তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এই অভিনেত্রী। 

আজ বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে ফেসবুক লাইভে মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিনেত্রী জেবা জান্নাত।

ফেসবুক লাইভে জেবা জান্নাত বলেন, ‘আমি জেবা জান্নাত। এই প্রথম আমি লাইভে এসেছি। আমি আমার আইডি থেকে এর আগে কখনো লাইভে আসি নাই। আপনারা অনেকেই জানেন আজ সকালে আমাকে নিয়ে একটি নিউজ হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, জেবা চৌধুরীর তিন বছরের কারাদণ্ড এবং প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই নিউজটি প্রথমে দেখে আমি নিজেই অবাক হই যে, নিউজে উল্লেখিত নারী আমি নই। এটার একজন মডেল ছিল, যার নাম জেবা চৌধুরী জয়া ওরফে ফরিদা পারভীন। আসলে ওনাকে নিয়ে মূলত নিউজটি হয়েছে কিন্তু এখানে আমার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। আর এটা অবশ্যই একটি ক্রাইম। আমি যেখানে অপরাধী নয়, সেখানে আমার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক ভেরিফায়েড নিউজ চ্যানেলগুলোতে নিউজটা করা হয়েছে।’

গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আপনারা তো ভেরিফায়েড নিউজ চ্যানেল। তাই আপনাদের একটি খ্যাতি ও সুনাম রয়েছে। তাই আপনাদের একটি নিউজ করার পূর্বে বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত ছিল। নিউজটার সত্যতা কতটুকু? কোন ছবি ব্যবহার করতে হবে। এই জেবা চৌধুরীটা কে?’ 

তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগের একটি ঘটনা নিয়ে আমার মতো একটি নাম উঠে এসেছে। সেটা সত্য ছিল। কিন্তু পরে আবার আমার ছবি ব্যবহার করে এই নিউজগুলো কেন করা হলো?এটা আসলে ভূয়া নিউজ ছিল। আর আমার একটি মাত্র ফেসবুক আইডি। আর আমার কোনো পেজ নেই। এরপরেও আমি লক্ষ্য করলাম, কিছু কিছু ভূয়া আইডি থেকে আমার নাম ব্যবহার করে গরিবদের সাহায্যের কথা বলে টাকা সংগ্রহ করে। এটা নিয়ে যেন ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা না হয়। এজন্য এখনই সেটা পরিষ্কার জানিয়ে রাখলাম। আমি কোনো সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নেই। গরিবদের সাহায্য করলে আমি নিজে থেকেই যতটুকু সম্ভব ততটুকু করি। আমি কারও নিকট থেকে টাকা নিয়ে সাহায্য করি না।’ 

সাইবার ক্রাইমে মামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি সাইবার ক্রাইমে অবশ্যই মামলা করব। কিন্তু যে চ্যানেল থেকে এই নিউজটা করা হয়েছে। ওইখান থেকে আমাকে ফোন করে বলা হয়েছে যে, এটা মিসটেক ছিল, তারা ভুল করে এই নিউজটা করে ফেলেছে। তারা সেটা করেকশন করে নিবে। তারা যদি কারেকশন করে, তাহলে তো সব ঠিক আছে। এই নিউজগুলোর কারণে আমার এতা কথা শুনতে হচ্ছে, আমি তো এগুলো শুনতে পারব না। আমি যেটা করি নাই, কেন সেটা শুনব? আমার বন্ধু-বান্ধব যারা রয়েছে, তারা অবশ্যই আমাকে ভালোভাবে চিনে যে, আমি কেমন মেয়ে। এটা বলার জন্য আমি লাইভে এসেছি।’

আগের ঘটনাকে উল্লেখ করে জেবা বলেন, ‘এর আগের একটি ঘটনা ছিল, সেটা অলরেডি সমাধান হয়ে গেছে। তাই আমি আর ব্যান-এর আওতায় নেই। আমি এখন কাজ করছি এবং বর্তমানের এই টপিকটার সঙ্গে আমি কোনোভাবে জড়িত নই। সংবাদমাধ্যগুলো ভুল করে আমার ছবি ব্যবহার করেছে। আমার নিক নাম হচ্ছে জেবা জান্নাত। আমার সম্পূর্ণ নাম জান্নাতি ফেরদৌসি। আমার আর অন্য কোনো নাম নেই। তাই কেউ বিব্রত হবেন না। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। সবসময় পাশে থাকবেন।’    

জানা গেছে, প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জেবা চৌধুরী জয়া ওরফে ফরিদা পারভীন নামের এক নারীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুজাহিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মাহবুব হোসেন রানা বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিচারক দণ্ডবিধির ৪০৬ ধারায় এক বছর ও ৪২০ ধারায় দুই বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া বিচারক আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। রায়ের সময় আসামি পলাতক ছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।’ 

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গত বছরের ২০ মার্চ বাদীর সঙ্গে আসামির গাড়ি বিক্রির চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাদীরা আসামিকে সাত লাখ টাকা দেন এবং আসামি তা গ্রহণ করেন। গাড়ি বিক্রির তিন বছরে আসামি বাদীকে ট্যাক্স টোকেন ও রোড পারমিট না দেওয়ায় বাদী আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে গত ৮ জুন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে বিচার শুরু হয়। বিচারের সময় তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত।

পরে ২০২২ সালের ৮ মে বাদী প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আদালতে মামলা করেন। মামলার পর আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন তিনি।