প্রযোজক ও পরিচালক শফি বিক্রমপুরী মারা গেছেন
ঢাকাই সিনেমার প্রযোজক, পরিচালক ও পরিবেশক শফি বিক্রমপুরী আর নেই ( ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (১৮ অক্টোবর) ভোর ৪ টায় ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি।
তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উপমহাসচিব অপূর্ব রানা। তিনি জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন শফি বিক্রমপুরী। গেলো জুন মাসে তিনি ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। এরপর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ব্যাংককে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো গেলো না।
শফি বিক্রমপুরী ঢাকার সিনেমায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নাম। যিনি সিনেমা প্রযোজনা ও পরিচালনার পাশাপাশি দুটি প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ করে প্রদর্শক হিসেবেও বিরাট ভূমিকা রেখেছিলেন।
১৯৪৩ সালের ৪ জুলাই মুন্সীগঞ্জ (সাবেক বিক্রমপুর) জেলার শ্রীনগর থানার মত্তগ্রামে জন্ম শফি বিক্রমপুরীর। সেই সুবাদেই নামের সঙ্গে বিক্রমপুরী যুক্ত করেছিলেন। তবে পাঁচ বছর বয়স থেকেই পরিবারের সঙ্গে তার ঢাকায় বসবাস।
মাত্র ২২ বছর বয়সে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন শফি বিক্রমপুরী। ১৯৬৫ সালে মুক্তি পাওয়া সেই ছবির নাম ‘গুনাই বিবি’। এতে তিনি যৌথ প্রযোজক ছিলেন। এছাড়া ১৯৭২ সালে খ্যাতিমান পরিচালক সুভাষ দত্ত পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’ এবং শহিদুল হক খান পরিচালিত ‘কলমি লতা’ সিনেমা দুটিও যৌথভাবে প্রযোজনা ও পরিবেশনা করেন তিনি।
পরিচালক হিসেবে শফি বিক্রমপুরীর অভিষেক হয় ১৯৭৮ সালে ‘রাজদুলালী’ সিনেমার মাধ্যমে। তার প্রযোজিত ও পরিচালিত অন্যান্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে- ‘ডাকু মনসুর’, ‘বাহাদুর’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সবুজ সাথী’, ‘সকাল সন্ধ্যা’, ‘মাটির কোলে’, ‘শশীপুন্নু’, ‘শান্তি-অশান্তি’, ‘জজসাহেব’, ‘দেনমোহর’, ‘অবুঝ মনের ভালোবাসা’ ইত্যাদি।
১৯৮৯ সালে ঢাকার মালিবাগে ‘পদ্মা’ এবং ‘সুরমা’ নামে দুটি সিনেমা হল নির্মাণ করেছিলেন তিনি। যা ওই সময়ে দর্শকে মুখর থাকতো। এছাড়া ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের সিনেমা হল মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবেও দীর্ঘ দিন দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই চলচ্চিত্রজন।