কবি ও গীতিকার জাহিদুল হক আর নেই

Looks like you've blocked notifications!
কবি ও গীতিকার জাহিদুল হক। ছবি : ফেসবুক থেকে নেওয়া

ষাটের দশকের অন্যতম কবি ও গীতিকার জাহিদুল হক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর ১টায় মারা গেছেন কবি জাহিদুল হক।

খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। তারা জানান, ১৫ দিন আগে তিনি ব্রেন স্ট্রোক করেছিলেন। এরপর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালের প্রক্রিয়া সেরে তাকে বনশ্রীর বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। তবে কবির জানাজা ও দাফনের বিষয়ে অবশ্য এখনও কিছু জানানো হয়নি।

জাহিদুল হক একাধারে কবি, গলকার, ঔপন্যাসিক ও গীতিকার ছিলেন। তার জম ১৯৪৯ সালের ১১ আগস্ট ভারতের আসামের বদরপুর রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসক পিতার কর্মস্থলে। পৈতৃক নিবাস কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের আকদিয়া গ্রামের ভূঞা বাড়ি। বসবাস করতেন ঢাকার বনশ্রীতে।

চট্টগ্রামের নগেন্দ্রচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন জাহিদুল হক। ১৯৬৭ সালে ফেনী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে দ্বিতীয় বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পড়েন। জাহিদুল হক বাংলা একাডেমির একজন ফেলো। রেডিও ডয়েচে ভেলের সিনিয়র এডিটর ও ব্রডকাস্টার হিসেবে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন। দৈনিক সংবাদের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক ছিলেন। বাংলাদেশ বেতারে উপ-মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার লেখালেখির শুরু হয় স্কুল জীবনে। প্রথম কবিতা প্রকাশ হয় ১৯৬৫ সালে দৈনিক সংবাদের ঈদ সংখ্যায়। গীতিকবি হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছেন।

জাহিদুল হকের লেখা উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- ‘আমার এ দুটি চোখ, ‘কথা দাও, কথাগুলো ফেরত দেবে না’, ‘স্বাধীনতা তুমি আমার বাড়িতে এসো’, ‘স্বপ্ন আমার কাজল পুকুর তুমি’, ‘যে দেশে বাতাস স্মৃতির স্পর্শে ভারী’, ‘কতো দিন পরে দেখা, ভালো আছো তো’, ‘আমি তোমার ভালোবাসার খাঁচায় ধরা দেবো’ ইত্যাদি।

জাহিদুল হকের লেখা প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো- পকেট ভর্তি মেঘ (কবিতা), তোমার হোমার (কবিতা), নীল দূতাবাস (কবিতা), সেই নিঃশ্বাসগুচ্ছ (কবিতা), পারীগুচ্ছ ও অন্যান্য কবিতা (কবিতা), এই ট্রেনটির নাম গার্সিয়া লোরকা (কবিতা), এ উৎসবে আমি একা (কবিতা), ব্যালকনিগুলো (গল্প), আমার ভালোবাসার অটম (গল্প), তোমার না আসার বার্ষিকী (উপন্যাস) ও আমজাদ আলির মেঘবাড়ি (উপন্যাস)।

২০০০ সালে তিনি জসীমউদ্দিন সাহিত্য পুরস্কার, ২০০২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও ২০১৭ সালে লিরিক কবিতার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ থেকে বিশেষ সম্মাননা পেয়েছিলেন এই গুণী কবি।