‘রূপান্তর’ বিতর্ক : নেমেছে ইউটিউব থেকে, বাতিল হয়েছে চুক্তি

Looks like you've blocked notifications!
নাটকটির একটি দৃশ্যে জোভান। ছবি : ফেসবুক থেকে নেওয়া

সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনা মধ্যে রাফাত মজুমদার রিঙ্কু পরিচালিত ‘রূপান্তর’ নাটকটি অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান একান্ন মিডিয়া। একই সঙ্গে এই ইস্যুতে নাটকের পৃষ্ঠপোষক ওয়ালটন বিষয়বস্তু অবহিত না করে আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থীভাবে নাটকটিতে তাদের বিজ্ঞাপনী প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সব ধরনের বিজ্ঞাপনী চুক্তিও বাতিল করেছে। একইসঙ্গে বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।

নীহার আহমেদের চিত্রনাট্যে নাটকটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফারহান আহমেদ জোভান। গল্পটি মূলত একজন তরুণ চিত্রশিল্পীকে ঘিরে। যিনি শৈশবে ট্রেন দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের। যার ফলে তিনি জানতেই পারেননি তার বাবা-মা কে কিংবা কোন ধর্মের মানুষ। বড় হয়েছেন শিশু আশ্রমে। বড় হয়ে হয়েছেন চিত্রকর। পেয়েছেন খ্যাতিও। এর মধ্যে একজন ধনীর দুলালী তার আঁকায় মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন। বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয় চিত্রকরকে। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দেন, তাকে দিয়ে সেটা সম্ভব নয়। এরপর তার চিকিৎসকের মাধ্যমে জানা যায়, তিনি আসলে একটি হরমোন জনিত বিরল জটিলতায় ভুগছেন। তিনি দেখতে পুরুষের মতো হলেও মানসিকভাবে তিনি একজন নারী।

ইউটিউবে মুক্ত হওয়া এই নাটকটি নিয়ে ১৬ এপ্রিল সকাল থেকে অন্তর্জালে চলছে তুলকালাম। দিনজুড়ে অন্তত শতাধিক পোস্ট ও লাখ প্রতিক্রিয়া মিলছে নাটকটির বিরুদ্ধে। বয়কটের ডাক এসেছে এর অভিনেতা জোভান ও স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের বিরুদ্ধেও। সামাজিক মাধ্যমে বলা হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু নিয়ে নাটকটি বানানো হয়েছে। আরেকটি পক্ষ বলছে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুকে কেন্দ্র করে না জেনেই পরিচালক মনগড়া কথা বলছেন। অন্য একটি পক্ষ দাবি করছে, ট্রান্সজেন্ডার কনসেপ্টকে প্রচারণা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার দিনভর এই নাটক নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনা চলতে থাকে।

এমন পরিস্থিতিতে নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু বলেন, ‘আমার কিছু বলার নেই। কারণ, এই নাটক আমি কোনও এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য করিনি। আমি একজন একা মানুষের গল্প বলার চেষ্টা করেছি। যে মানুষটা হরমোন জটিলতায় ভুগছেন। এটা তো এক ধরনের শারীরিক জটিলতা, যাতে আমাদের কারোর হাত নেই। আমি তো নাটকটির মাধ্যমে সফল কোনও সম্পর্কের গল্প বলিনি। আমি দেখানোর চেষ্টা করেছি হরমোনজনিত কারণে একজন মানুষের ক্রমশ একা হয়ে যাওয়ার গল্প। অথচ সেই বিষয়টিকে অনেকেই ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। আমি এর জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং হতাশ। এই সরল গল্পটি যদি আমরা না গ্রহণ করি, তাহলে নতুন গল্প বলবো কেমন করে?’