রবীন্দ্রনাথের ছোটবেলা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে উজ্জ্বল নাম। জন্মেছিলেন কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে। বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মা সারদা দেবীর সবচেয়ে ছোট সন্তান ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
পারিবারিক পরিবেশের কারণে ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য, সংগীত এবং মঞ্চনাটকের সঙ্গে জড়িয়ে যান তিনি। তাঁদের বাড়ি থেকেই পত্রিকা প্রকাশিত হতো, বসত গানের আসর, মঞ্চস্থ হতো নাটক। তা ছাড়া রাজনীতি এবং সমাজ সংস্কারেও তাঁর পরিবারের ভূমিকা ছিল।
শৈশবেই মাকে হারিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্যস্ত থাকতেন নিজের কাজ নিয়ে। ভারতের উত্তরে এবং বিদেশে ঘুরে বেড়াতেন বিভিন্ন কাজে। ১০ বছর বয়স পর্যন্ত বাবাকে একেবারেই কাছে পাননি তিনি। শৈশব কাটে বাড়ির কাজের লোকদের কড়া শাসনে।
স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হলেও সেসব পড়ায় মন ছিল না তাঁর। বাইরে ঘুরে বেড়াতেন, প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকতেন। নিজের মতো করে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতেন। স্কুলের পাট যখন হলো না, তখন বাড়িতে ভাই হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে বিভিন্ন বিষয় পড়া শুরু করলেন রবীন্দ্রনাথ। বাংলা সাহিত্য, চিত্রকলা, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, ইতিহাস, অঙ্ক—এসব বিষয়ে বাড়িতেই চলতে থাকল তাঁর লেখাপড়া। এর পর তাঁর জন্য রেখে দেওয়া হলো গৃহশিক্ষক।
মাত্র আট বছর বয়স থেকেই কবিতা লেখা শুরু করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ১১ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছিলেন ভ্রমণে। এই ভ্রমণ তাঁর চোখ খুলে দিয়েছিল। লেখাপড়ার সঙ্গে দেখার মিল ঘটিয়ে দিয়েছিল এই ভ্রমণ। ভারতের অমৃতসরসহ অন্যান্য এলাকা ঘুরে বাবার সঙ্গে লন্ডনেও গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। পরে অবশ্য ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডন গিয়েছিলেন তিনি।
ছোটবেলা থেকে একাই বড় হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। সে কারণেই নিজের চারপাশকে খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন সব সময়। এভাবেই গড়ে উঠেছিল তাঁর নিজের জগৎ।