প্রত্যাখ্যানের ফলে ভুগতে পারেন বিষণ্ণতায়
প্রেমে প্রত্যাখ্যান! কম-বেশি অনেকেই হয়তো এই ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। কেউ কেউ এটা থেকে শিক্ষা নিয়ে খুব সহজেই এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন আবার অনেকে এই ঘটনার পর দীর্ঘ সময়ের জন্য বিষণ্ণতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। নতুন একটি গবেষণা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি গবেষণাপত্রের ওপর ভিত্তি করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ায় এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষণাপত্রটি ছাপা হয়েছিল মলিকুলার সাইকিয়াট্রি পত্রিকায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, কেউ যদি সামাজিকভাবে কারো কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়, তাহলে এই কষ্ট দীর্ঘদিন তার মনে থাকে। এবং তার মস্তিষ্কের কোষগুলোতে সব সময় ব্যথা অনুভব হয় এবং মানসিক চাপের কারণে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থের রস নিঃসরণ হয়, যাকে বলা হয় প্রাকৃতিক আফিম।
ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান মেডিকেল স্কুল, স্টোনি ব্রক ইউনিভার্সিটি এবং শিকাগোর ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ের গবেষকরা একসাথে এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন; যা তাঁদের আরেকটি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। সেখানে বিষণ্ণ নয় এমন ব্যক্তিদের সামাজিক প্রত্যাখ্যান নিয়ে গবেষণা করা হয়েছিল।
স্টোনি ব্রকের প্রধান লেখক ডেভিড এইচএসইউ গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে বলেন, ‘একজন বিষণ্ণ ব্যক্তি নিজের আবেগকে এই সময়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। ফলে বিষণ্ণতার প্রবণতা ঘুরেফিরে আসে, বিশেষ করে সমাজের নেতিবাচক পরিবেশের কারণে।’
ডেভিড আরো জানান, ‘মস্তিষ্ক হয়তো সাহায্য করে কষ্টের অনুভূতিগুলোকে আলাদাভাবে অনুভব করতে, সমাজের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় একধরনের অনুভূতি থাকে এবং ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় ভালো অনুভূতি বজায় থাকে।’
অন্যদিকে, যখন কেউ তাদের আবার পছন্দ করতে শুরু করে, তখন বিষণ্ণ ব্যক্তিরা অপেক্ষাকৃত ভালো অনুভব করে কিন্তু এই অনুভূতিটি থাকে অল্প কিছু সময়ের জন্য। গবেষণায় বিশেষ ব্রেইন-স্ক্যানিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিষণ্ণ এবং বিষণ্ণ নয় এমন মানুষের ওপর গবেষণা চালানো হয়েছে।
সবশেষে গবেষকরা বলেন, ‘অধিকতর গবেষণায় পাওয়া গেছে, যখন ব্যক্তির প্রতি সমাজের ইতিবাচক প্রভাব থাকে তখন মস্তিষ্ক ইঙ্গিত দেয় ভালো থাকার আর যখন সমাজের নেতিবাচক প্রভাব পরে তখন মস্তিষ্ক থেকে নিঃসরিত রস তাকে বিষণ্ণ করে তোলে।