উদরপূর্তি
পাস্তায় সেরা গ্রিন্ড হাউস

বাঙালি দিন দিন যেন হয়ে উঠছে ভোজন বিলাসী। এটা বোঝা যায়, শহরের আনাচে কানাচে গড়ে ওঠা রেস্তোরাঁর দিকে তাকালেই। গত তিন বছরে এই শিল্পে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। সেই সাথে রেস্তোরাঁর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দশগুণ। রাজধানীর তালতলাও এখন রেস্তোরাঁ পল্লী হিসেবে গড়ে উঠেছে। খিলগাঁওয়ের এই রোডে ঢুকলেই দেখা মিলবে রাস্তার দুইপাশে ছোট-বড় অনেক রেস্তোরাঁ। তাই সন্ধ্যা নামলেই এই রাস্তাটি যেন হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।
তালতলার একটি রেস্তোরাঁ গ্রিন্ড হাউস। খিলগাঁওয়ের ব্লক-সি এর ৫৬৬/এ বাড়ির এই রেস্তোরাঁটি এরইমধ্যে সমাদৃত হয়েছে পাস্তার কারণে। তবে পাস্তা ছাড়াও এখানে পাবেন ইন্ডিয়ান, চাইনিজ ও ইতালিয়ান ফুড। সর্বশেষ তাদের মেনুতে যোগ হয়েছে আমেরিকান ফুড।
‘এখানে বেশিরভাগ অতিথিই তরুণ। একই ধরনের খাবার সবার বেশিদিন ভালো লাগে না। তাই আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন খাবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই ভোজন রসিকদের। এখন প্রায়ই বৃষ্টি হচ্ছে, তাই এবারের নতুন আইটেম ‘মাটন খিচুড়ি’, বললেন রেস্তোরাঁর অন্যতম স্বত্বাধিকারী আলী আহ্সান খান। তিনি একা নন, এর সাথে আছে তার আরো দুজন বন্ধু। এক রকম শখের বসে রেস্তোরাঁ ব্যবসায় এসেছেন সাকিব ইরতিজা, সারাফউদ্দিন আহম্মেদ এবং তিনি। ভোজন রসিকদের চাহিদার কারণে এটি রূপ নেয় মূল ব্যবসায়। তবে অতিরিক্ত লাভের বিষয়টি একদমই চিন্তা করেন না তাঁরা। তাই প্রতিটি খাবারই রয়েছে সবার সাধ্যের মধ্যে। আর শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে করেছেন তিনটি সেট মেনু। যার দাম একেবারেই হাতের নাগালে।
সাধারণত রেস্তোরাঁয় খেতে আসেন যাঁরা তারা ভালো খাবারের সাথে সাথে পরিবেশটাও একটু ভালো চান। যেকোনো রেস্তোরাঁয় খাবারের দাম, প্লেটে কী ও কীভাবে পরিবেশন করা হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এর একটু হেরফের হলেই জনপ্রিয়তা ফুরিয়ে যাবে। ভেতরের সাজসজ্জাটাও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, তাই এই রেস্তোরাঁটিও খাবারের পাশাপাশি অন্দরমহল সজ্জায় বেশ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। একদম ছিমছাম পরিবেশ। দুই পাশে দুটি সারিতে কালো রঙের সোফা সাজানা। একটু আরাম করে বসতেই চোখে পড়বে তাদের মেনু কার্ডটি। সেখানে রয়েছে খাবারের তালিকা ও মূল্য। রয়েছে একটি গ্লাস সেল্ফ, যেখানে পাবেন নানা রকম পানীয়র তালিকা।
খাবারের তালিকায় প্রথমেই আপনার চোখে পড়বে অ্যাপেটাইজার আইটেম। যার মধ্যে থাকছে অনথন, স্প্রিং রোল, গার্লিক মাশরুম, চিকেন স্টিপস, চিকেন উইংস, গ্রিন্ড হাউস স্পেশাল বার্বিকিউ উইংস। এই খাবারগুলোর পূর্ণ স্বাদ নিতে অর্ডার করতে পারেন মজাদার স্বাদের কর্ন, থাই বা ভেজিটেবল সুপ। এ ছাড়া রয়েছে চাউমিন, সালাদ, চপসি, বার্গার। আরো পাবেন পাঁচ ধরনের পিৎজা। তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় পাস্তার মধ্যে রয়েছে চিকেন পাস্তা, বিফ পাস্তা, জাম্বোলা পাস্তা, মিক্সড পাস্তা, পাস্তা বাস্তা এবং গ্রিন্ড হাউস ডিলিশিয়াস পাস্তা। এ ছাড়া রয়েছে সিফুড, ইন্ডিয়ান আইটেম, শেফ স্পেশাল। পুরো পরিবার নিয়ে খেতে চাইলে নিতে পারেন ফ্যামিলি প্লাটার।
এখানে তিনটি স্তরে সাজানো হয়েছে প্লাটারগুলো ৪ জন, ৮ জন এবং ১২ জনের জন্য। যারা খুব কম সময় নিয়ে এসেছেন, কিন্তু পেটপুরে থেকে চান। তারা নিতে পারেন সুপার লাঞ্চ বা ডিনার আইটেম। পেয়ে যাবেন মজাদার স্বাদের স্টেক আইটেমও। আর শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ১৫০ টাকা, ১৬০ টাকা এবং ১৭০ টাকায় তিনটি ভিন্ন মেনু।
ভোজন শেষে আপনাকে প্রশান্তির ছোয়া দিতে রয়েছে ঠান্ডা ঠান্ডা জুস। এর মধ্যে পাবেন ব্লুবেরি মিল্ক সেক, চকলেট মিল্ক সেক। যদি আপনি ফ্রেস জুসের স্বাদ নিতে চান তবে অর্ডার করতে পারেন তরমুজ, আনারস, কমলালেবু বা আমের জুস। এ ছাড়া পাবেন দুটি ভিন্ন স্বাদের মজিটো, সোডা ও কফি।
গ্রিন্ড হাউসের স্পেশাল রেসিপি
মিক্সড পাস্তা
উপকরণ
পেনে পাস্তা ২৫০ গ্রাম, গরুর মাংস, মুরগির মাংস এবং চিংড়ি সব মিলে ২০০ গ্রাম, চিজ ১৫০ গ্রাম, মাশরুম, ক্যাপসিকাম, টমেটে এবং মরিচ।
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে কড়াইতে সামান্য তেল দিতে হবে। তারপর পরিমাণ মতো রসুন কুচি দিন। রসুন ভেজে বাদামি রং হলে এর মধ্যে গরু, মুরগি এবং চিংড়ি দিয়ে দিন। এরপর মাশরুম, ক্যাপসিকাম, টমেটো এবং মরিচ দিয়ে নাড়তে হবে। তারপর সস এবং পাস্তা দিয়ে দিন। কিছুক্ষণ নাড়ার পর নামিয়ে ফেলুন। একটি বাটিতে চিজ দিয়ে তার মধ্যে পুরো মিশ্রণটি ঢেলে দিন। তারপর ওভেনে বেক করুন। কিছুক্ষণ পর চিজ বাদামি রং ধারণ করলে নামিয়ে ফেলুন। এরপর ইচ্ছেমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
নাচোস
উপকরণ
চিকেন বা বিফ কিমা, ডরিটোস্ট চিপস, ক্যাপসিকাম ও টমেটো।
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে বিফ বা চিকেন কিমা ভুনা করে নিন। একটি প্লেটে ডরিটোস্ট চিপস সাজিয়ে তার ওপর বিফ/চিকেন ভুনা করা কিমা ছিটিয়ে দিন। এর উপর চিজ দিয়ে ওভেনে বেক করুন। নামিয়ে ক্যাপসিকাম ও টমেটো কুচি ছিটিয়ে দিন। ব্যস হয়ে গেল নাচোস।