যে ১০ আচরণ আপনাকে সবার থেকে আলাদা করবে
অতীতের জীবন-যাত্রার সাথে বর্তমান জীবন-যাত্রার আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে। মানুষের চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তন যেমন এসেছে ঠিক তেমনই আচার-আচরণেও পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু কিছু আদবকেতা বা ভদ্রতাবোধ আছে যা চিরন্তন। অফিস বা কোনো অনুষ্ঠান হোক সকল জায়গাতেই আপনি যদি এই আচরণগুলো মেনে চলেন তাহলে এটা আপনাকে সবার থেকে আলাদা করবে –
১.সানগ্লাস খুলে কথা বলা
বর্তমানে সানগ্লাস ভীষণ জনপ্রিয়। আজকাল শুধু ফ্যাশন হিসেবে নয় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্যও অনেকে সানগ্লাস ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু যখন আপনি কোনো অনুষ্ঠানে যাবেন আর সেটা যদি ঘরের ভেতরে হয় তাহলে আপনার উচিত সানগ্লাস খুলে সবার সাথে কথা বলা। কারও সাথে কথা বলার সময় চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা এক ধরণের ভদ্রতা। অনুষ্ঠানটি যদি ঘরের বাহিরে হয় তাহলে সানগ্লাস খোলার প্রয়োজন নেই কিন্তু ঘরের ভিতরে অবশ্যই সানগ্রাস খুলে অন্যদের সাথে কথা বলবেন।
২.কারো ফোন ধরতে না পারলে পরে তাকে আবার ফোন করা
বর্তমানে সবার সাথে যোগাযোগ করার সহজ মাধ্যম হচ্ছে মোবাইল ফোন। কিন্তু অনেকে সময় কাজের চাপে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কেউ ফোন করলে তা আপনি ধরতে পারেন না। সেক্ষেত্রে আপনার উচিত অবসর সময়ে তাদের ফোন করা বা ম্যাসেজের মাধ্যমে জানানো যে আপনি এখন ব্যস্ত আছেন, পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। কারণ যে ফোন করেছে সে হয়তো কোনো জরুরি কথা বলার জন্যই ফোন করেছিল। তাই কারও ফোন ধরতে না পারলেও পরবর্তীতে তার সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
৩.লাইনের মাঝখানে না ঢোকা
আজকাল সবাই ব্যস্ত। সকাল হতেই অফিসের জন্য বাস ধরা থেকে শুরু করে লিফটে উঠা বা বাজার করা সব জায়গায়ই লাইনে দাড়াতে হয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় কেউ কেউ লাইনের মাঝখানে ঢুকে যায়। আর এটা খুবই বাজে অভ্যাস। যারা দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাড়িয়ে ছিল তারা এই ধরণের আচরণে খুবই বিরক্তবোধ করে। তাই হুট করে কোনো লাইনের মাঝখানে ঢুকে পরবেন না।
৪.কারো জন্য লিফট ধরে রাখা
আপনি যখন অফিসে বা বাহিরে কোথাও লিফট ব্যবহার করবেন তখন খেযাল রাখবেন আর কেউ লিফটে উঠতে চাচ্ছে কিনা। কেউ যদি একটু দূরে থাকে আর লিফট থামানোর জন্য ইশারা করে তবে তার জন্য অপেক্ষা করুন। তবে লিফটে জায়গা না থাকলে সেক্ষেত্রে তাকে ইশারা করে জানিয়ে দিন যে লিফটে জায়গা নেই তাই তার জন্য।
৫.সময়মতো উপস্থিত হওয়া
বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষই সময়মতো উপস্থিত হতে পারে না। অথচ সময়মতো অফিস বা কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়াও একধরণের ভদ্রতা। আপনি যদি কোথাও দেরি করে উপস্থিত হন তাহলে এটাই প্রমাণ হয় যে অন্যদের সময়ের চেয়ে আপনার সময় বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৬.কারো জন্য দরজা খুলে দেওয়া
কোনো অনুষ্ঠানে বা অফিসে ঢোকার সময় আপনার পিছনে যদি কেউ থাকে তাহলে তার জন্য দরজা খুলে দিতে পারেন। তার মানে এই নয় যে সবার জন্য দরজা খুলে আপনি দাড়িয়ে থাকবেন। আপনার পিছনে যদি কেউ থাকে বা একসাথে ঢোকার চেষ্টা করছে তাহলে তাদের আগে যেতে দিন।
৭.সবার সাথে ভদ্রভাবে কথা বলুন
অফিসের কর্মচারী থেকে শুরু করে সহকর্মী সবার সাথে ভদ্রভাবে কথা বলুন। তাদের কাছ থেকে সাহায্য পেলে ধন্যবাদ জানান। কেউ বিপদে পড়লে তাকে সাহায্য করুন। কেউ ধন্যবাদ দিলে সেটা হাসিমুখে গ্রহণ করুন। অর্থাৎ সবার সাতে একই রকম আচরণ করুন। কারো সামাজিক অবস্থান বিবেচনা করে তার সাথে খারাপ আচরণ করবেন না।
৮.কারো রুমে ঢোকার আগে অনুমতি নিন
আমাদের সমাজে অধিকাংশ মানুষের মাঝে এই ভদ্রতাবোধটা নেই। যে কোনো সময় হুট করে কারো রুমে ঢুকে যাওয়া ঠিক নয়। অফিস হোক বা বাড়ি কারও রুমে ঢোকার আগে অবশ্যই তার অনুমতি নিয়ে ঢুকবেন।
৯.পরনিন্দা না করা
পত্রিকা বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গসিপ বা পরনিন্দা শুনতে বেশ ভালোই লাগে। কিন্তু বাস্তব জীবনে এর প্রভাব ভয়াবহ। অফিস বা বাড়ি কোনো জায়গায় আপনার পরনিন্দা বা গসিপ করা উচিত নয়। কারণ আপনার কথার উপর ভিত্তি করে অফিসে শত্রুর সংথ্যা বেড়ে যেতে পারে যারা পরবর্তীতে আপনাকে নানাভাবে বিপদে ফেলতে পারে। তাই অফিসে মনোযোগ দিয়ে শুধু নিজের কাজ করুন অন্যদের ব্যাপারে নাক গলানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
১০.খাবার খাওয়ার সময় ভদ্রতা বজায় রাখুন
অনেকেই খাবার সময় সঠিকভাবে খেতে জানেন না। অতিরিক্ত শব্দ করে খাবার খাওয়া,খাওয়া শেষে ঢেকুর তোলা, খাবার নেওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করা এই অভ্যাসগুলো অনেকেরই আছে। এই অভ্যাসগুলো খুবই দৃষ্টিকুটু। খাবার খাওয়ার সময় এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত। সুন্দর করে খাওয়াটাও একধরণের ভদ্রতা।
সূত্র: রিডার ডাইজেস্ট