প্রথম সেশনে বাংলাদেশের দাপট
ডারবান টেস্টের দ্বিতীয় দিন ঠিক এমন শুরুটাই চেয়েছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য ছিল—শুরুতেই গতকালের জমে যাওয়া তেম্বা বাভুমা ও কাইল ভারানের জুটি থামানো। অবশেষে সে লক্ষ্যে সফল বাংলাদেশ। পেসার খালেদ আহমেদ দিনের শুরুতেই এনে দিয়েছেন জোড়া সাফল্য।
খালেদের পর তেম্বা বাভুমার প্রতিরোধ ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাভুমাকে সেঞ্চুরি করতে দিলেন না মিরাজ। ৯৩ রানে তাঁকে আউট করেছেন মিরাজ। কেশব মহারাজের উইকেট তুলে নেন ইবাদত। মোট ৪ উইকেট তুলে নিয়ে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটা নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ।
কাইল ভেরেইনাকে ফিরিয়ে দিনের শুরুতেই জুটি ভাঙেন খালেদ। খালেদের করা বল একটু সামনে পিচ করে ভেতরে ঢোকে। ভেরেইনার ডিফেন্স ফাঁকি দিয়ে বল লাগে প্যাডে। সঙ্গে সঙ্গে আঙুল তোলেন আম্পায়ার। যদিও রিভিউ নেন ভেরেইনা। তবে, লাভ হয়নি। সাজঘরে ফেরেন ভেরেইনা। আর, দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় রিভিউ। ৮১ বলে ২৮ রানে ভেঙেছে ভেরেইনার প্রতিরোধ।
ভেরেইনার পর ওইয়ানকেও থামান খালেদ। তাঁর জোড়া আঘাতে ডারবানে দ্বিতীয় দিন দারুণ শুরু করেছে বাংলাদেশ।
গতকাল টেস্টের প্রথম দিনটা খুব একটা ভালো কাটেনি বাংলাদেশের। প্রথম সেশনে কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগানোর বদলে ওই সেশনেই সবচেয়ে বেশি ভুগেছে বাংলাদেশ। এর পরের দুই সেশনে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে দিন শেষ করে সফরকারীরা।
এ টেস্টে ভালো করতে হলে আজ দ্রুতই অলআউট করতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সে লক্ষ্যেই আজ শুক্রবার টেস্টের দ্বিতীয় দিন মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ।
কিংসমিডে গতকাল বৃহস্পতিবার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ২৩৩ রান নিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
গতকাল দিনের শুরুতে সাইট স্ক্রিন জটিলতা দেখা দেয় আর শেষে দেখা দেয় আলোর স্বল্পতা। সব মিলে প্রথম দিন খেলা হয়েছে মোটে ৭৬.৫ ওভার। ১৩.১ ওভার খেলা কম হয়েছে প্রথম দিনে।
প্রথম দিন তামিম ইকবালকে ছাড়া মাঠে নামা বাংলাদেশ এদিন টস জিতে বোলিং নেয়। মূলত বোলিং নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল ঘাসের উইকেটে শুরুর দিকে কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগানো। কিন্তু প্রথম সেশনে সেই সুবিধার ছিটেফোটাও নিতে পারল না বাংলাদেশ। বরং উইকেটে জমে গিয়ে বাংলাদেশকে ভোগান দুই প্রোটিয়া ওপেনার ডিন এলগার ও সারেল এরউইয়া। বাংলাদেশের তিন পেসার ও এক স্পিনারকে প্রথম সেশনে বেশ ভোগান দুই প্রোটিয়া ওপেনার। ৯৫ রানে অবিচ্ছেদ্য থেকে শুরুর সেশন পার করেন দুজন।
দ্বিতীয় সেশনেও শতরানের জুটিতে দুজন এগোচ্ছিলেন। তবে, এ জুটিকে আর বড় হতে দেননি খালেদ আহমেদ। এলগারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন খালেদ। ৩৪তম ওভারে খালেদের ওভার দ্য উইকেটে করা ডেলিভারি অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে একটু বেরিয়ে যায়। কিন্তু, হঠাৎ বাউন্স হয়ে যায়। তাতেই বিপদে পড়ে যান এলগার। বলটি লাফিয়ে এলগারের গ্লাভস ছুঁয়ে চলে যায় উইকেট কিপারের হাতে। ১১ বাউন্ডারিতে ১০১ বলে ৬৭ রানে আউট হন এলগার। ভাঙে ১১৩ রানের জুটি।
এলগারের পর অবশ্য এরউইয়াও আউট হন দ্রুত। তাঁকে বিদায় করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পরের ওভারেই তাঁকে বোল্ড করেন এ অফ স্পিনার। এরউইয়ার প্রতিরোধ ভাঙে ৪১ রানে।
এরপর তিনে নেমে লড়াইয়ের আভাস দেন কিগান পিটারসেন। কিন্তু থিতু হওয়ার আগেই দুর্দান্ত থ্রোতে তাঁকে রানআউট করেন মিরাজ। তাসকিন আহমেদের বলে ড্রাইভ করে রান নিতে ছোটেন তেম্বা বাভুমা। পয়েন্ট থেকে একটু দৌড়ে গিয়ে বল থামান মিরাজ। এরপর দ্রুত উঠে বসে থাকা অবস্থায়ই থ্রো মারেন। বল গিয়ে সরাসরি লাগে স্টাম্পে। স্তব্ধ হয়ে ১৯ রানে ফিরে যান পিটারসেন।
উইকেট নিয়ে শেষ সেশনের শুরুটা করেন ইবাদত হোসেন। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা রায়ান রিকলটনকে বিদায় করেন তিনি। এরপর এই সেশনে আর কোনো উইকেট নিতে পারেনি বাংলাদেশ। তার মাঝে আলোর স্বল্পতা দেখা দিলে কয়েক ওভার বাকি থেকেই প্রথম দিনের লড়াই শেষ করে বাংলাদেশ।