বাবার হাত ধরে আসা প্রিন্সের স্বপ্ন অনেক বড়
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/08/11/1_0.jpg)
বাবার হাত ধরেই প্রথম গিয়েছিলেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে। বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেললেও হতে চেয়েছেন কর্মকর্তা। হয়েছেনও তাই আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্স। আজ তিনি সাদা-কালোর শিবিরের অন্যতম কর্মকর্তা। পরিচালক ও ফুটবল দলনেতা, অনেক পদেই দায়িত্ব পালন করেছেন।
ক্রীড়া সংগঠক হওয়া পেছনের গল্প সম্পর্কে আবু হাসান চৌধুরী, ‘আমি মোহামেডান ক্লাবের সমর্থক। বাবার হাত ধরে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাই। আমি তখন সেভেন-এইটে পড়ি। ১৯৮০ সালে পাইওনিয়ার ফুটবল লিগের উদ্বোধনী ম্যাচ খেলেছিলাম। সাবেক কোচ গোলাম সারোয়ার টিপু ভাই তখন আমার খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। আমাকে মোহামেডানের প্রাকটিসে ডেকেছিলেন। কিন্তু আমার আমার আগ্রহ ছিল কর্মকতা হওয়া। বাবা তখন ঢাকা মোহামেডানের অফিসিয়াল ছিলেন। পরে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হন।’
মোহামেডানে দায়িত্ব পালনের শুরুটা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ক্লাবটির হয়ে ১৯৮২ সালে আশিষ-জব্বার স্মৃতি টুর্নামেন্ট খেলতে আমরা ভারতে যাই। আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত মোহামেডান ফুটবল দলের সহকারী ম্যানেজার ছিলাম। সেই সময় এমেকার মতো খেলোয়াড় ছিলেন মোহামেডানে। সালাম মুর্শেদী ছিলেন ম্যানেজার।’
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2022/08/11/2.jpg)
ক্লাবে সময় দিতে গিয়ে নিজের পরিবারকেও সাময় দিতে পারতেন না প্রিন্স, ‘১৯৮৮ সালের শেষের দিকে আমার বিয়ে হয়। তখন ক্লাবে আমাকে অনেক সময় দিতে হতো। আমার স্ত্রী আমার ওপর রাগ করতেন। পরে তিনি মেনে নিতেন। আমার পুরো পরিবার ছিল মোহামাডেনের সমর্থক। আমার মা বিভন্ন সময় খেলোয়াড়দের রান্না করে খাওয়াতেন।’
বাবা সিরাজুল হক চৌধুরী সম্পর্কে মোহামেডান পরিচালক বলেন, ‘মোহামেডানের অনেক খেলোয়াড় আমার বাবার হাত ধরে তৈরি। সালাম মুর্শেদী হয়ে ওঠার পেছনে আমার বাবার অবদান ছিল। মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা আমার বাবাকে চাচা বলে ডাকতেন। তিনি একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে কলকাতা মোহামেডানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আমার বাবার মাধ্যমে কায়সার হামিদ, জনি, মহসিন, সাব্বির, নকীব, পনির, রক্সি, রায়হান, সালাউদ্দিন ও মানিকরা কলকাতা মোহামেডানে খেলেছিলেন।’
ক্রিকেট বোর্ডেরও কর্মকর্তা ছিলেন প্রিন্স, ‘১৯৯০ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত মোহামেডান ক্রিকেট দলের ম্যানেজার ছিলাম। সেই সময় নান্নু-বুলবুলের মতো খেলোয়াড়রা এই দলে ছিলেন। এর আগে ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডর যুগ্ন সম্পাদক ছিলাম। কয়েকটি টুর্নামেন্ট কমিটার চেয়ারম্যান ছিলাম।’
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2022/08/11/3.jpg)
মাঝখানে কিছু সময় বিরতি দিয়ে আবার মোহামেডানের দায়িত্ব পান প্রিন্স। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মাঝখানে ক্লাবের অবস্থা একটু খারাপ ছিল। আমি তখন ক্লাব যেতাম না। পরে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির পর মোহামেডানে একটা শূন্যতা দেখা দেয়। দল গঠন করাও কষ্ট ছিল। পরে প্রয়াত বাদল রায়ের নেতৃত্বে আমরা আবার ঝাঁপিয়ে পড়ি। সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু, রেজাউর রহমান সোহাগ, মোস্তাকুর রহমান, ফজলুর রহমান বাবুল, হাসানুজ্জামান খান বাবলু, সাবেক খেলোয়াড় জনি, সাব্বির, জোসি সবাই মিলে আমরা মোহামেডানের হাল ধরি। পরে আমি ২০১৯ সালে দলনেতা হই।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২১ সালের নির্বাচনে আমি পরিচালক নির্বাচিত হই। ক্লাবের অন্যতম পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান হন, আমাকে সম্পাদক করা হয়। ২০১৯ সাল থেকে কাজ করছি। বর্তমান সভাপতি সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মোহাম্মদ আবদুল মুবীনের নেতৃত্বে ক্লাবকে আরও এগিয়ে নিতে চাই। ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান ও সভাপতি দল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’
সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলীর অবদান সম্পর্কে প্রিন্স বলেন, ‘আলহাজ্ব মোসাদ্দেক আলী মোহামেডানের সভাপতি হিসেবে অনেক অবদান রেখেছেন। ওনার সময়ে ক্লাবের অনেক উন্নতি হয়ে ছিল। অনেক সাফল্য পেয়েছিল ফুটবল ও ক্রিকেট দল। আজ মোহামেডান এই জায়গায় আসার পেছনে ওনার অনেক অবদান রয়েছে।’