শেষ টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার সামনে ১২৩ রানের লক্ষ্য
শুরুতে বড় স্কোরের আভাস দিয়েছেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও মেহেদী হাসান। প্রথম তিন ওভারেই দুজন মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৩৩ রান। এরপরেই যেন পাল্টে গেল ব্যাটিংয়ের দৃশ্য। সময়ের সঙ্গে উইকেট স্লো হতে থাকে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও একে একে ব্যর্থ হতে শুরু করেন। ফলে চ্যালেঞ্জিং স্কোরের আভাস দিয়েও ইনিংস বড় করতে পারল না বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে ১২৩ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২২ রান করে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ২৩ রান করেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। উইকেট আগের তুলনায় কিছুটা স্পোর্টিং হলেও ব্যাট হাতে সেভাবে সাফল্য পায়নি স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। ১২০ বলের খেলায় ৬১টি ডট বল ছিল বাংলাদেশের। রানের গতি ভালো ছিল শুধু প্রথম তিন ওভারেই। শেষ চার ওভারে ২৪ বলে ১৭টিই ছিল ডট।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গত চার ম্যাচে ওপেনিংয়ে খুব একটা সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। প্রতি ম্যাচেই হতাশ করেছেন সৌম্য-নাঈমের ওপেনিং জুটি। তাই শেষ ম্যাচে ওপেনিংয়ে পরিবর্তন আনে টিম ম্যানেজমেন্ট। সৌম্য সরকারের বদলে ওপেনিংয়ে সুযোগ দেওয়া হয় মেহেদী হাসানকে। ম্যানেজম্যান্টের আস্থা কিছুটা হলেও রেখেছেন তরুণ এই অলরাউন্ডার। নাঈমের সঙ্গে ওপেনিংয়ে ভালো সুযোগ এনে দিয়েছেন তিনি।
ইনিংসের প্রথম ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে শুরু করেন নাঈম। এরপর মেহেদী উইকেটে এসে এক রান নেন, পরে হাঁকান বাউন্ডারি। এরপর হাতখুলে খেলেন দুজন। কিন্তু দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় ফিরে যান তরুণ এই ব্যাটসম্যান। স্পিনার টার্নারের বলে শট হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি। ১২ বলে মেহেদী থামেন ১৩ রানে। ৪২ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি।
পাওয়ার প্লেতে ওই এক উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ছয় ওভারে এক উইকেট হারিয়ে আসে ৪৬ রান। এরপর বাজে শট খেলতে গিয়ে উইকেট উপহার দিয়ে আসেন নাঈম। ড্যান ক্রিস্টিয়ানের বলে রিভার্স হিটের চেষ্টায় পয়েন্টে সহজ ক্যাচ তুলে দেন নাঈম। বাঁহাতি এই ওপেনার একটি করে ছক্কা ও চারে ২৩ বলে করেন ২৩ রান।
পাওয়ার প্লের পর রানের গতি কমে যায় বাংলাদেশের। এর মধ্যে নাঈমের পর উইকেটে বেশিক্ষণ থাকতে পারলেন না সাকিব। দশম ওভারে লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পার বল লেগে ঘুরে খেলতে চেয়েছেন সাকিব। কিন্তু লেগ মিডল স্টাম্পের বল ব্যাটে লাগেনি। এলবির আবেদন তোলেন অসিরা। তাতে সাড়া দিতে দেরি করেননি আম্পায়ার। ২০ বলে ১১ রান করে ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
এরপর উইকেটে এসে হতাশ করেছেন মাহমুদউল্লাহ ও সৌম্য। অ্যাগারের বলে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এক বাউন্ডারিতে ১৪ বলে ১৯ রান করেন তিনি। অন্যদিকে পজিশন বদলেও সেই ব্যর্থই হলেন সৌম্য। চার নম্বরে ব্যাট করেও হতাশ করলেন তিনি। ক্রিস্টিয়নের বল বাউন্ডারি মারতে গিয়ে লং অফে টানারকে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ১৮ বলে ১৬ রানে ফেরেন সাজঘরে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে বারবার সুযোগ পাওয়া সৌম্য সিরিজে মোট ৪ ম্যাচে করেছেন ২৮ রান। গত তিন ম্যাচের দুইটিতে করেছেন ২ রান করে, একটিতে করেন শূন্য আরেকটিতে আউট হন এক রানে।
পরপর উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে দায়িত্ব নিতে পারেননি নুরুল হাসান সোহানও। নাথান এলিসের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। দ্রুত উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ১২২ রানে থামে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১২২/ ৮ (মেহেদী ১৩, নাঈম ২৩, সাকিব ১১, সৌম্য ১৬, মাহমুদউল্লাহ ১৯, নুরুল ৮, আফিফ ১০, মুস্তাফিজ ০, সাইফ ০ , সৈকত ৪; জাম্পা ৪-০-২৪-১, অ্যাগার ৪-০-২৮-১, টার্নার ২-০-১৬-১, ক্রিস্টিয়ান ৪-০-১৭-২, সোয়েপসন ২-০-১৪-২, এলিস ৪-০-১৬-২)।