গ্রুপ পর্বের বাধা পেরোতে পারবে স্বাগতিক রাশিয়া?
রাশিয়া বিশ্বকাপের আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। ৩২টি অংশগ্রহণকারী দল শেষ মুহূর্তে নিজেদের প্রস্তুত করে উড়ে যাচ্ছে রাশিয়ার দিকে। স্বাগতিক দেশ হওয়ার সুবাদে এবার রাশিয়ার সমর্থকদের প্রত্যাশার মাত্রাও স্বাভাবিকভাবে অন্য আসরের তুলনায় বেশি। সমর্থকদের চাহিদা কতটা পূরণ করতে পারবে রাশিয়া?
২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে রাশানদের ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে প্রথম স্থান দখল করলেও গ্রুপ পর্বের বাধা টপকাতে পারেনি দলটি। গ্রুপ পর্বে তৃতীয় স্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থেকেই লাতিন আমেরিকা থেকে বিদায় নিতে হয় দলটির। শুধু কি তাই? রাশিয়ার সেরা সাফল্য ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে। সেবার রাশিয়া চতুর্থ স্থান দখল করেছিল। এরপর বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে রাশিয়ার অর্জনের খাতা বলতে গেলে শূন্য।
এবার স্বাগতিকরা ভাগ্যদেবীর সাহচর্যেই আছে। এবারের বিশ্বকাপে রাশিয়া তুলনামূলক সহজ গ্রুপেই পড়েছে। তবে সমর্থকদের প্রত্যাশা কতটা পূরণ করে দল নিজেদের বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরতে পারবে, অপেক্ষা করতে হবে মূল পর্ব পর্যন্ত।
রাশিয়ার সবচেয়ে বড় আশার আলো ইগোর আকিনফিভ। সিএসকেএ মস্কোর এই গোলরক্ষক দলের সবচেয়ে নির্ভরশীল তারকা। তিন ত্রয়ী আলান জাগোয়েভ, আলেকজান্ডার গোলোভিন ও ফেডর সোমোলোভ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আক্রমণে দারুণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। চেরচেসোভ দলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। ডিভেন্স এবং আক্রমণে তাঁর ত্বরিত গতিতে দক্ষতা দলে দারুণ ভূমিকা রাখে। রাশিয়ার নির্ভরশীলতার অন্যতম জায়গা তিনি।
দলের ভরসা রাখার মতো জায়গা থাকলেও দলে বেশ কিছু দুর্বলতাও আছে। রাশিয়ার ডিফেন্স দুর্বলতা বহু বছর ধরে চলমান একটি সমস্যা। যখন তিন ত্রয়ী সার্জে ইগানচিভিচ ও বেরেজুতছি ভ্রাতৃদ্বয় আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন, তখন থেকেই রাশান শিবিরের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। উপরন্তু তিনজন নিয়মিত সেন্টার ব্যাকের দুজনই দীর্ঘমেয়াদি ইনজুরিতে রয়েছেন। যদিও রাশান কোচ বিকল্প পন্থা অবলম্বন করেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ের ব্যর্থতায় প্রমাণিত হয় বিকল্প পথ ঠিকঠাক কাজ করছে না।
এবার নিজেদের দেশে রাশিয়া খেলবে গ্রুপ ‘এ’-তে। যেখানে তাঁদের প্রতিপক্ষ সৌদি আরব, উরুগুয়ে ও মিসর। তুলনামূলক সহজ গ্রুপেই পড়েছে রাশানরা। তাই তাঁদের জন্য অনায়াসেই প্রতিপক্ষদের হারিয়ে নকআউট পর্বে ওঠাটা অন্যবারের তুলনায় সহজ হবে। প্রথম ম্যাচ সৌদি আরবের বিপক্ষে। তাদের হারানোটা তেমন কঠিন হবে না স্বাগতিকদের কাছে। এর পরের ম্যাচ মিসরের বিপক্ষে। যদিও মিসরে মোহামেদ সালাহ আছেন, যিনি ম্যাচের ফল পরিবর্তন করার মতো যথেষ্ট দক্ষ। মূলত রাশিয়াদের লড়তে হবে সালাহর বিপক্ষেই। উরুগুয়ের বিপক্ষেও ফেভারিট রাশিয়ারা। এমন সহজ গ্রুপের বিপক্ষে রাশানরা অনায়াসেই গ্রুপ পর্ব টপকে যাবে, সহজেই অনুমেয়। অবশ্য গ্রুপ পর্ব টপকানোর পর রাশিয়াদের সামনের পথটা মসৃণ হবে না।