স্পিনারদের ধৈর্যশীল হওয়ার পরামর্শ যোশির
টেস্ট ক্রিকেটে খুব ভালো সময় কাটাচ্ছে না বাংলাদেশ। কিছুদিন আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজে হারের পর ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে শোচনীয়ভাবে পরাজয় ভাবিয়েছে নির্বাচকদের। অবশ্য পরের ম্যাচে দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টে জয় পাওয়ায় ড্র হয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষের টেস্ট সিরিজটি। গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্টে ৬৪ রানের ব্যবধানে জয় পেয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। খুবই আশ্চর্যজনক হলেও, সেই টেস্টে সবকটি উইকেট পেয়েছেন স্পিনাররা। তবে স্পিনারদের ক্রিজে নিরবচ্ছিন্ন মনোযোগের পরামর্শ দিয়েছেন স্পিন কোচ সুনীল যোশি। চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের পরেই যোশিকে আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত স্পিন কোচের দায়িত্বে রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
যোশি বলেন, ‘ক্যারিবীয় সিরিজে হারের পর আমরা একসঙ্গে বসে অনেক কাজ করেছি। লাল বলে খেলার সময় স্পিনারদের কি করা উচিত, সেটি নিয়ে অনেক পরিকল্পনা এবং বিশ্লেষণ হয়েছে। একজন টেস্ট স্পিনারের অবিচল থাকতে হবে। টেস্টে গড় রানের সঙ্গে উইকেটের সামাঞ্জস্য সবসময়ই রাখার একটা চাপ থাকে। এটা অর্জন করতে গেলে একই স্থানে বোলিং করার মতো ধৈর্য থাকতে হবে। এজন্য দক্ষতা প্রয়োজন। এই দক্ষতা তৈরির জন্য প্রতিদিন দেখাশোনা প্রয়োজন।’
সদ্য সমাপ্ত প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় উইকেট পেয়েছেন তাইজুল ইসলাম। এমনকি জিম্বাবুয়ে সিরিজেও ১৮ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। তাইজুলের এমন জ্বলে ওঠার রহস্য জানাতে যোশি বলেন, ‘আমরা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এসজি টেস্ট বল ব্যবহার করেছি। কিছুদিন আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারতে একই বলে সিরিজ খেলে এসেছে। তাই এই টেস্টে তাঁদের বিপক্ষে আমরা কোকাবুরা ব্র্যান্ডের বল ব্যবহার করছি। তাইজুল দুই ব্র্যান্ডের বলের সঙ্গেই সহজে এবং দ্রুত মানিয়ে নিতে পেরেছে। আমরা টানা চার সপ্তাহে পর পর চারটি টেস্ট খেলেছি এবং সে যেভাবে চ্যালেঞ্জটি নিয়েছে, তা অসাধারণ।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেই চোট থেকে ফিরেছেন জাতীয় দলের নিয়মিত অধিনায়ক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে তিনি তেমন রান না করতে পারলেও ৭৩ রানের বিনিময়ে মোট পাঁচ উইকেট পেয়েছেন এই বাঁহাতি। এমনকি মাত্র ৫৪ টেস্ট খেলেই ৩০০০ রান এবং ২০০ উইকেটের মালিক একমাত্র বাংলাদেশি খেলোয়াড় সাকিব, যে রেকর্ড বিশ্বে দ্রুততম। সাকিবের ফিরে আসাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ের আরেকটি প্রভাবক হিসেবে দেখছেন যোশি। তিনি বলেন, ‘সাকিবের উপস্থিতি সবচেয়ে বড় ব্যাপার। অধিনায়ক পার্থক্য তৈরি করে দেয় এবং দলকে নেতৃত্ব দেয়। সে ইনজুরি থেকে ফিরলেও দেখে মনেই হয়নি সে বিরতিতে ছিল। সে তরুণ খেলোয়াড়, স্পিনারদের জন্য অনুকরণীয়। এই বিশ্বকে গুণগত মানের ক্রিকেট উপহার দিয়েছে সাকিব। খেলোয়াড়দের কথা ও কাজের মাধ্যমে উজ্জীবিত করার মতো একজন খেলোয়াড়, সাকিবকে পেয়ে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। তাঁর সঙ্গে তাইজুল কিংবা মিরাজ-সবার যোগাযোগই ভালো। আমাদের নতুন সদস্য নাঈম হাসান অসাধারণ একজন বোলার। এখানে অনেক স্পিনার আছে, আমি তাঁদের নিয়ে কাজ করতে উৎসুক। সাকিব সামনে আছে, সে স্পিনারদের আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে। সময়ের ব্যবধানে আমরা মানিয়ে নিয়েছি। আমরা স্পিন নিয়ে একসঙ্গে কথা বলি এবং তার ফলও পেয়েছি।’
বাংলাদেশি স্পিনারদের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী যোশি। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় টেস্টে স্পিনাররা আবারো চমক দেখাতে পারেন কি না, সেটির দিকেই নজর থাকবে ভক্তদের।