ব্যর্থতার চোরাবালিতে সাব্বির-লিটনরা
বিপিএলে নিজেদের চেনা কন্ডিশন আর অভ্যস্ত উইকেটেও ব্যর্থ হচ্ছেন দেশীয় ক্রিকেটের বড় তারকারা। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে লিটন দাস, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহর মতো বড় খেলোয়াড়রা নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই চরম হতাশ করেছেন নিজ দলের সমর্থক আর ক্রিকেট-ভক্তদের। হজরতুল্লাহ জাজাই আর নিকোলাস পুরানদের মতো আনকোরা বিদেশি খেলোয়াড়দের সাফল্যের পিঠে দেশীয় ব্যাটসম্যানদের এমন বাজে ফর্ম অগ্রহণযোগ্য বলছেন সবাই।
জাতীয় দলে লিটন দাস মাঝেমধ্যেই দারুণ কিছু ইনিংস খেলেন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলে তামিমের সঙ্গী হিসেবে লিটন নিজের স্থান পাকাপোক্ত করে ফেলেছেন বলা যায়। কিন্তু স্ট্রোকমেকার হিসেবে সুনাম থাকা লিটন বিপিএলে সিলেটের হয়ে প্রথম দুই ম্যাচে যাচ্ছেতাই পারফর্ম করেছেন। প্রথম ম্যাচে মাত্র ১ রান করে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসা লিটন দ্বিতীয় ম্যাচে রানের খাতাই খুলতে পারেননি।
একই অবস্থা সাব্বির রহমানের। ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞায় থাকা এই ক্রিকেটার দলে ফেরার পরীক্ষায় কেমন করেন, সেদিকে নজর ছিল সারা দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। কিন্তু সিলেটের হয়ে প্রথম ম্যাচে কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও ছয় বল খেলে শূন্য রান করে রবি ফ্রাইলিংকের বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ আশরাফুল আর নাসির হোসেনের গল্পটা একটু ভিন্ন। ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ডে নিষেধাজ্ঞার পাঁচ বছর কাটিয়ে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে এই বিপিএল দিয়েই ফিরেছেন আশরাফুল। আর ইনজুরির হানায় লম্বা সময় ক্রিকেটের বাইরে থাকার পর মাঠে নেমেছেন নাসির। কিন্তু কাকতালীয়ভাবে ফিরে আসা এ দুই ক্রিকেটারই নিজেদের কামব্যাক ম্যাচে মাত্র ৩ রান করে আউট হয়েছেন।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটসের অধিনায়কত্ব করছেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার । কিন্তু ঢাকা দলের ওপেনাররা ভালো শুরু এনে দিলেও দুই ম্যাচেই উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন তিনি। যদিও বোলিংয়ে মোটামুটি ভালো করেছেন তিনি। এ ছাড়া খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দুই ম্যাচেই হতাশ করেছেন। চাপের মুখে ব্যর্থ হয়ে দলকে দুই ম্যাচেই বিপদে ফেলেছেন তিনি। ব্যর্থতার এই মিছিলে আরো আছেন ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত, আরিফুল হক, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুনের মতো জাতীয় দলের নিয়মিত খেলোয়াড়রা।
দেশীয় খেলোয়াড়দের এমন ব্যর্থতার মিছিলে প্রায় অচেনা কন্ডিশনে বিদেশি খেলোয়াড়রা অনেকটাই সফল হয়েছেন। নিষেধাজ্ঞায় থাকা ডেভিড ওয়ার্নার মাত্রই ক্রিকেটে ফিরেছেন। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে প্রথম ম্যাচে রানআউট হয়ে গেলেও সিলেট সিক্সার্সের এই অধিনায়ক দ্বিতীয় ম্যাচেই তুলে নিয়েছেন দারুণ এক ফিফটি। বিপর্যয়ের মুখে ঠান্ডা মাথায় খেলে দলকে এনে দিয়েছেন লড়াই করার মতো এক পুঁজি।
এ ছাড়া আফগান ক্রিকেটার হজরতুল্লাহ জাজাই, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান নিকোলাস পুরান, পাকিস্তানি তারকা শহিদ আফ্রিদি প্রথম দুই ম্যাচেই দেখিয়েছেন চমৎকার ব্যাটিংশৈলী। তবে জাতীয় দল ও সম্ভাবনাময় অন্যান্য দেশীয় ক্রিকেটারেরা ভালো না করলে বিপিএল আয়োজনের মূল উদ্দেশ্যটাই মাঠে মারা যাবে বলছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।