মিরাজের অধিনায়কত্বের আরেকটি ঝলক
ঠিক আগের ম্যাচে খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে বিধ্বস্ত হয়েছিল রাজশাহী কিংস। মাত্র ১২৯ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১০৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল তাঁদের ইনিংস। তাই আগের চার ম্যাচের সবকটিতে জেতা পরাক্রমশালী ঢাকার বিপক্ষে কিংসরা জিতবে, এমন বিশ্বাস করার লোক খুব বেশি ছিল না। ডায়নামাইটসদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৮৩ রানে হারার লজ্জা জুটেছিল যে তাদের!
কিন্তু সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সেই অসাধ্যকে সাধন করল মেহেদী হাসান মিরাজের দল। টুর্নামেন্টে এর আগে মাশরাফির রংপুরকে পরাজিত করা রাজশাহী এবার প্রথম পরাজয়ের তেঁতো স্বাদ দিল সাকিব আল হাসানের দলকে। অথচ প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে মাত্র ১৩৬ রান করেছিল ল্যান্স ক্লুজনারের শীস্যরা। কিন্তু অধিনায়ক মিরাজের উদ্দীপনাদায়ী অধিনায়কত্বে আরেকটি লো-স্কোরিং ম্যাচ জিতে মাঠ ছেড়েছে তাঁরা।
দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে মিরাজ নিজেই প্রথম সাফল্য এনে দেন বিপজ্জনক সুনীল নারিনকে ফিরিয়ে। আর প্রথম ওভারে ১১ রান দেওয়া উদানাকে না সরিয়ে তৃতীয় ওভারে আবার বোলিং দেন তিনি। আস্থার প্রতিদান দিয়ে সেই ওভারে আরেক আক্রমণাত্মক ওপেনার জাজাইকে ফেরান শ্রীলঙ্কান পেসার। চতুর্থ ওভারে নিজে বোলিংয়ে ফিরে না এসে আনেন আরাফাত সানিকে। প্রথম বলেই ভয়ংকর আন্দ্রে রাসেলকে মিড অনে রায়ান টেন ডেসকাটের ক্যাচ বানিয়ে রাজশাহীকে চালকের আসনে বসান এই বাঁহাতি স্পিনার। ২৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ঢাকা।
রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন খুলনা টাইটানসের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত
পুরো ম্যাচে সেই চাপ আর আলগা হতে দেননি মিরাজ। দলের বোলারদের যখন যেভাবে ব্যবহার করেছেন, সেভাবেই সাফল্য পেয়েছেন। তবে চার ওভারে একটি মেডেনসহ মাত্র আট রান দিয়ে আন্দ্রে রাসেল, সাকিব আর রনি তালুকদারের উইকেট তিনটি নিয়ে সেরা পারফর্মার হয়েছেন আরাফাত সানি। আর তিন ওভারে ১৮ রানে দুই উইকেট শিকার করেছেন মিরাজ নিজে। তাঁর ফিল্ডিং সাজানোটাও হয়েছিল দেখার মতো।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী অধিনায়ক ব্যর্থ হয়েছেন আবারও। ১১ বল খেলে একটি মাত্র রান করে আউট হয়ে গেছেন। তবে সকালের সূর্য দেখে দিনটা কেমন যাবে, সেটা সবসময় সঠিকভাবে অনুমান করা যায় না। মিরাজের ক্ষেত্রে আজ ঠিক তাই হলো। দলের মামুলি সংগ্রহ সত্ত্বেও সতীর্থদের উদ্বুদ্ধ করলেন অসাধারণ দক্ষতায়। এক সুতোয় গাঁথলেন বোলিং আক্রমণ আর ফিল্ডিং ইউনিটকে। শেষ পর্যন্ত ২০ রানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লেন এই তরুণ সেনাপতি।
মাশরাফি কেন তাঁকে ভবিষ্যৎ অধিনায়ক বলেন, তা আজ আরেকবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন মিরাজ।