আবার মুস্তাফিজের জাদু

১৯৮ রানের বড় সংগ্রহ ছিল রাজশাহী কিংস দলের। তবে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে রান তাড়া করা চিটাগং ভাইকিংসের শেষ তিন ওভারে মাত্র ২৭ রান প্রয়োজন ছিল। উইকেটে নাজিবুল্লাহ জাদরান ও সিকান্দার রাজার মতো আক্রমণাত্মক দুই ব্যাটসম্যান। পাঁচ উইকেট হাতে রেখে এমন লক্ষ্যকে হাতছোঁয়া দূরত্বই হয়তো মনে হয়েছিল সবার। কিন্তু কিংসদের একজন মুস্তাফিজুর রহমান ছিলেন। বোলিংয়ে চার ওভারে ২৮ রানে তিন উইকেটের ফিগারটা হয়তো আহামরি কিছুর জানান দিচ্ছে না। কিন্তু যাঁরা গতকালের ম্যাচ দেখেছেন, তাঁরাই কেবল সাক্ষী হয়েছেন তাঁর বোলিং জাদুর।
১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে মাত্র ৬ রান দেন মুস্তাফিজ। শেষ দুই ওভারে ভাইকিংসদের লক্ষ্যটা কঠিন হয়ে ২১ রান হয়ে যায়। ১৯তম ওভারের শেষ বলে নাজিবুল্লাহ আউট হয়ে গেলেও আসে ৮ রান। ছয় বল থেকে প্রয়োজন পড়ে ১৩ রান। কিন্তু শেষ ওভারের প্রথম বলেই অবিশ্বাস্য এক ইয়র্কারে মারকুটে সিকান্দার রাজার উইকেট উপড়ে ফেলেন ‘দি ফিজ।’ পঞ্চম বলে আবার বোল্ড করেন রবিউলকে। মহাগুরুত্বপূর্ণ সেই ওভারের সব বল ইয়র্কার করতে চেয়েছেন। হাতেনাতে ফল পেয়ে মাত্র চার রান দিয়ে দলের জয় এনে মাঠ ছেড়েছেন। এর আগে বোলিংয়ে নিজের প্রথম ওভারেই দুর্দান্ত আউট সুইংগারে ক্যামেরন ডেলপোর্টকে কট বিহাইন্ড করে দলকে এনে দিয়েছেন প্রথম ব্রেক থ্রু।
এমন পারফরম্যান্সে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে খুব অল্প কথাই বললেন অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে। জানালেন, কঠিন পরিস্থিতিতে বল করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। স্বল্পভাষী এই চ্যাম্পিয়ন বোলার বলেন, ‘আগেও বহু ম্যাচে এমন সময়ে বল করেছি। তাই খুব বেশি ভাবনা-চিন্তা করি না। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বেশি চিন্তাভাবনা না করাই ভালো। বোলিংয়ে নিজের কাজটা খেয়াল করে ঠিকঠাকমতো করাটাই জরুরি মনে করি।’
প্রায় এক হাতে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছেন তিনি। বল হাতে সবচেয়ে কঠিন সময়ে দায়িত্ব পড়ে তাঁর। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদানটাও হরহামেশাই শতভাগ মিটিয়ে দেন মুস্তাফিজ। এমন আরো বহু উপলক্ষ আগামী দিনে উপহার দেবেন তিনি, এমন প্রত্যাশাই ক্রিকেটপ্রেমীদের।