পান্ডিয়া-রাহুলের বিরুদ্ধে সমন জারি
ঘটনার সূত্রপাত বেশ অনেকদিন আগে। গত জানুয়ারি মাসে বলিউডের খ্যাতিমান পরিচালক করন জোহরের উপস্থাপনায় ‘কফি উইথ করন’ অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে আসেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের এ সময়ের আলোচিত দুই ক্রিকেটার লোকেশ রাহুল ও হার্দিক পান্ডিয়া। আড্ডাধর্মী ওই অনুষ্ঠানটি ভারতের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় তুমুল সমালোচনা। অনুষ্ঠানে অশালীন ইঙ্গিত ও নারীদের নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ উঠে পান্ডিয়া ও রাহুলের বিরুদ্ধে।
‘কফি উইথ করন’ অনুষ্ঠানে অসতর্ক মুহূর্তে হালকাভাবে বলে ফেলা কথাগুলো নিয়ে জল এত ঘোলা হবে, তা হয়তো ভাবেননি দুই ক্রিকেট তারকার কেউই। ঘটনা ঘটানোর পর এর গভীরতা উপলব্ধি করে টুইটারে নিঃশর্ত ক্ষমা চান দুজনেই। তবে এতটুকুতেই মুক্তি মেলেনি রাহুল-পান্ডিয়ার। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) প্রশাসনিক কমিটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দুজনের বিরুদ্ধেই। অস্ট্রেলিয়া সফররত ভারতীয় দল থেকে দুজনকেই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ায় অসিদের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ মিস করেন দুজনেই।
আপত্তিকর মন্তব্যের সেই ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য দুজনকে ভারতীয় দল থেকে বহিষ্কার করে বিসিসিআইয়ের প্রশাসনিক কমিটি। বিসিসিআই জানায়, ঘটনার চূড়ান্ত সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ভারতের হয়ে মাঠে নামার নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও বোর্ডের অনুমোদিত সব ধরনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে অযোগ্য থাকবেন অভিযুক্ত দুই ক্রিকেটার। যদিও কিছুদিন পর সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। তবে বিসিসিআইয়ের আইনের ৪১ ধারা অনুযায়ী দুজনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের আইনি কার্যক্রম চলমান থাকে।
এরই প্রেক্ষিতে ভারতের সাবেক বিচারপতি ডি কে জৈনকে ন্যায়পাল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিচারপতি জৈন সম্প্রতি দুজনের বিরুদ্ধে একটি সমন জারি করেছেন। ওই অভিযোগের শুনানির জন্য রাহুল আর পান্ডিয়াকে তাই বিচারপতি জৈনের সামনে হাজিরা দিতে হবে। যদিও রাহুল আর পান্ডিয়া দুজনেই আইপিএলে নিজ নিজ দলের হয়ে আপাতত ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দুজনকে শুনানিতে হাজিরা দিতেই হবে। সংবাদমাধ্যম পিটিআইয়ের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিচারপতি জৈন বলেন, ‘আমি গত সপ্তাহে দুজনের বিরুদ্ধে একটি সমনের নোটিশ জারি করেছি। ঘটনার যথাযথ বিচারপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য আমাকে তাদের বক্তব্য অবশ্যই শুনতে হবে। তাদের নিজেদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে।’
তবে শুনানিতে হাজিরার জন্য দুজনকে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া হয়নি। ঘটনার বিচারের জন্য নিযুক্ত ন্যায়পাল অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ডি কে জৈন পিটিআইকে বলেন, ‘তারা কবে শুনানিতে আসবে, সেটা তারাই নির্ধারণ করবে। যখন চাইবে তখনই আসতে পারবে দুজন।’