হারের হতাশা নিয়ে সরে দাঁড়ালেন ইংল্যান্ড কোচ
ইংল্যান্ডের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঘটন কোনটি? আজকের আগে অনেকেই হয়তো নির্দ্বিধায় বলে দিতেন, ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ১-০ গোলের হার। কিন্তু এবারের ইউরো কাপের পর প্রশ্নটার উত্তর ভাবতে হবে নতুন করে। ইউরোর শেষ ষোলোর লড়াইয়ে নবাগত আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ গোলে হারকেই ইংল্যান্ডের সবচেয়ে হতাশাজনক অধ্যায় বলে বিবেচনা করছেন অনেকে। কোচ রয় হজসনের দিকে ধেয়ে আসছে তীক্ষ্ণ সব সমালোচনার তীর। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর তাই সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিতে খুব বেশি দেরি করেননি হজসন। হতাশাজনক এই হারের দায়ভার মাথায় নিয়ে কোচের আসন ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
বরাবরের মতো এবারও একবুক আশা নিয়ে ইউরো কাপে অংশ নিয়েছিল ইংল্যান্ড। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ইংল্যান্ডের বর্তমান দলটা অনেক ভালো—এমন মন্তব্যই করেছিলেন অনেকে। কিন্তু সেই ইংল্যান্ড যে এভাবে মুখ থুবড়ে পড়বে, তা হয়তো কারো কল্পনায়ও ছিল না। যে আইসল্যান্ডে পেশাদার ফুটবলারই আছেন মাত্র ১০০ জন, সেই দেশের বিপক্ষে হেরেই ইউরো মিশন শেষ করতে হলো ইংল্যান্ডকে। ম্যাচ শেষে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালান শিয়ারার রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন রয় হজসন ও তাঁর শিষ্যদের। বিবিসির বিশ্লেষণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘এটাই আমার দেখা ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স। চিন্তায়, লড়াইয়ে; সব দিক থেকেই হেরেছে তারা। ইংল্যান্ডের এই দলটা পুরোই ব্যর্থ।’
শুধু শিয়ারারই নন, ইংল্যান্ডের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন আরো অনেকে। গণমাধ্যমগুলোতে কড়া কড়া বাক্য লেখা হচ্ছে কোচ হজসন ও ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের সমালোচনা করে। এমন পরিস্থিতিতে আগেভাগে সরে দাঁড়ানোকেই সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করেছেন হজসন। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে হতাশাজনক হারের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘সবকিছু এভাবে শেষ হওয়ায় আমি খুবই দুঃখিত। কিন্তু এগুলো ঘটে যায়। আমি আশা করছি, দ্রুতই আপনারা ইংল্যান্ডকে বড় কোনো প্রতিযোগিতার ফাইনালে দেখতে পাবেন। এখন ইংল্যান্ডের প্রতিভাবান এই খেলোয়াড়দের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব অন্য কাউকে নিতে হবে।’
২০১২ সালে ইংল্যান্ডের কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনটি বড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন হজসন। তিনবারই তাঁকে বিদায় নিতে হয়েছে হতাশাজনকভাবে। ২০১২ সালের ইউরো কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড টাইব্রেকারে হেরেছিল ইতালির কাছে। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে পেরোতে পারেনি গ্রুপ পর্বের বাধা। সেবার গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচও না জিততে পারার হতাশা নিয়ে বিদায় নিতে হয়েছিল ইংল্যান্ডকে। আর এবারের ইউরো কাপে ইংল্যান্ড আটকে গেছে শেষ ষোলোতে।