ফাইনালে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে দুই ‘নাম্বার সেভেন’
দুজনের জার্সি নম্বর ৭, দুজনের ক্লাবই মাদ্রিদে। অবশ্য ভিন্ন দুই ক্লাব, রিয়াল আর আতলেতিকো মাদ্রিদ। আগামীকাল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ফ্রান্স-পর্তুগাল লড়াইয়ের ফাঁকে আরেকটা লড়াই তাই ফুটবলরসিকদের মনে রোমাঞ্চ জাগাচ্ছে। লড়াইটা আন্তইন গ্রিজম্যান আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মধ্যে।
এবারের ইউরো শুরু হওয়ার আগে দুজনের মধ্যে তুলনা টানলে নির্ঘাত বিদ্রূপ সইতে হতো কোনো ফুটবলভক্তকে। কিন্তু টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচের আগে রোনালদোর সঙ্গে সমস্বরে উচ্চারিত হচ্ছে গ্রিজম্যানের নাম। মাঠের লড়াইয়ে অবশ্য বিশ্ববিখ্যাত প্রতিপক্ষকে অনেকখানি পেছনে ফেলে দিয়েছেন আতলেতিকোর ফরাসি ফরোয়ার্ড। ছয় গোল নিয়ে গ্রিজম্যান এখন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা। রিয়াল মাদ্রিদ তারকা রোনালদোর গোল ঠিক অর্ধেক, তিনটি।
টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে পল পগবার ওপরেই বেশি নির্ভর করেছিল ফ্রান্স। কিন্তু জুভেন্টাসের তারকা মিডফিল্ডার নয়, এ মুহূর্তে ফরাসিদের কণ্ঠে গ্রিজম্যানের জয়গান। সেমিফাইনালে গ্রিজম্যানের দুই গোলে ‘লা ব্লুজ’ হারিয়ে দিয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে। তারপরই ফ্রান্সের বিখ্যাত ক্রীড়াদৈনিক লেকিপ বর্তমান দলকে ‘গ্রিজম্যান প্রজন্ম’ হিসেবে ভূষিত করেছে নির্দ্বিধায়।
গ্রিজম্যানের পারফরম্যান্সে দিদিয়ের দেশমও মুগ্ধ। সেমিফাইনালের পর ফ্রান্স কোচের মন্তব্য, ‘সে (গ্রিজম্যান) দুর্দান্ত খেলোয়াড়। এবারের ইউরোতে সে-ই আমাদের ভাগ্য গড়ে দিচ্ছে। সে শুধু গোলই করছে না, অন্যকে দিয়ে গোলও করাচ্ছে।’
ইউরো ২০১৬-তে গোলসংখ্যায় গ্রিজম্যানের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও একটা কীর্তি এরই মধ্যে গড়ে ফেলেছেন রোনালদো। ফরাসি কিংবদন্তি মিশেল প্লাতিনির টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ৯ গোলের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। ফাইনালে একটা গোল করলেই রেকর্ডটা এককভাবে হয়ে যাবে পর্তুগাল অধিনায়কের।
রোনালদো অবশ্য ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দলীয় সাফল্যের ওপরেই বেশি জোর দিচ্ছেন। ক্লাবের হয়ে অনেক শিরোপা জিতলেও জাতীয় দলের জার্সিতে কিছুই পাননি আজ পর্যন্ত। এক যুগ আগে ইউরোর ফাইনালে গ্রিসের কাছে হেরে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। এবার ইউরোপ জয় করে সব আক্ষেপ ঘোচাতে মরিয়া তিনবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার, ‘ইউরো ২০০৪ ছিল বিশেষ কিছু। আমার বয়স তখন মাত্র ১৯ বছর আর সেটাই ছিল আমার প্রথম গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। আমরা আবার ফাইনালে উঠেছি। আশা করি এবার আমরা জিতব। আশা করি আমরাই জয়ের হাসি হাসব আর খেলাশেষে আনন্দের অশ্রু ঝরবে আমাদের চোখ থেকে।’