কাউকে ধোঁকা না দেওয়ার দাবি মেসির
সময়ের ব্যবধান বেশি নয়, আড়াই মাসেরও কম। অথচ দুটো ম্যাচের শেষের ছবিতে কী বৈপরীত্য! সেদিন টানা তৃতীয় ফাইনালে হারের বেদনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। আর আজ তিনি আর্জেন্টিনার জয়সূচক গোলদাতা। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে উরুগুয়েকে হারানোর পর যথারীতি লিওনেল মেসিকে ঘিরেই ছিল পাদপ্রদীপের আলো। হঠাৎ অবসরের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক জানালেন, কাউকে ধোঁকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সিদ্ধান্তটা তিনি নেননি। বরং মনের দুঃখেই তা নিয়েছিলেন।
২০১৪ বিশ্বকাপ ও গত বছরের কোপা আমেরিকার ফাইনালে হেরে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। জুনের শেষ দিকে কোপা আমেরিকা শতবার্ষিকীর ফাইনালেও টাইব্রেকারে হার মেনেছিল তারা। চিলির বিপক্ষে টাইব্রেকারে প্রথম শট নিতে গিয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে মেরেছিলেন মেসি। সেই দুঃখেই সম্ভবত ম্যাচ শেষে ফুটবল-দুনিয়াকে হতভম্ব করে জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার খুদে জাদুকর। এরপর পেলে-ম্যারাডোনার মতো কিংবদন্তিদের অনেক অনুরোধ-উপরোধেও সাড়া দেননি।
শেষ পর্যন্ত মেসির মান ভাঙিয়েছেন আর্জেন্টিনার নতুন কোচ এদগার্দো বাউজা। তাঁর অনুরোধেই আবার জাতীয় দলের জার্সি পরতে রাজি হয়েছেন পাঁচবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। আর মেসির গোলেই উরুগুয়েকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা এখন দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বের শীর্ষে।
কারো কারো মনে হতে পারে, ফাইনালে আর্জেন্টিনার আরেকটি ব্যর্থতা আড়াল করতেই বোধহয় মেসির এমন বিস্ময়কর ঘোষণা। তবে ‘নিন্দুক’দের মুখ আগেভাগেই বন্ধ করে দিয়েছেন বার্সেলোনা তারকা। খেলা শেষে স্বদেশের টিভি পাব্লিকাকে তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় দলে ফিরতে পেরে আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। তবে অবসরের ঘোষণা দেওয়ার সময় আমি কাউকেই ধোঁকা দেইনি। আমার অন্তত তেমনই মনে হয়েছে। যা ঘটেছিল তা নিয়ে আমরা ভীষণ হতাশ ছিলাম। তবে এরপরই ভালোভাবে চিন্তা-ভাবনা করেছিলাম এ ব্যাপারে। কথা বলেছিলাম পাতনের (বাউজা) সঙ্গেও। কাছের মানুষরা আমাকে ফেরার সিদ্ধান্ত নিতে যথেষ্ট সাহায্য করেছেন।’
যে-ই সাহায্য করুক, মেসি আবার জাতীয় দলে ফেরায় আর্জেন্টিনার মানুষ দারুণ খুশি। খুশি ফুটবলভক্তরাও।