মার্টিনেজকে কী উপহার দিলেন মাশরাফী?
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা যে আর্জেন্টিনার কত বড় ভক্ত, তার প্রমাণ মিলেছে আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের পরেই। লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ ওঠার দিন মাশরাফীকে আনন্দ উল্লাসে মাততে দেখা যায়। বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ১১ ঘণ্টার জন্য এসেছেন বাংলাদেশে। সামনে থেকে স্বপ্নের নায়ককে দেখার সুযোগ হাতছাড়া করেননি মাশরাফী।
আজ সোমবার (৩ জুলাই) ভোরে ঢাকায় পা রাখেন ৩০ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক। এরপরই ডিজিটাল ব্যবসায়িক গোষ্ঠী নেক্সট ভেঞ্চারসের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানে মার্টিনেজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি ক্রিকেটার মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। এ সময় মাশরাফীর সঙ্গে ছিল তার দুই সন্তানকে সাহেল ও হুমায়রা। মাশরাফীর মতো তার দুই সন্তানও আর্জেন্টিনার বড় ভক্ত।
মার্টিনেজকে সামনে পেয়ে তাইতো অটোগ্রাফের পাশাপাশি ছবি তুলতে ভুল করলেন না তারাও। আর্জেন্টাইন তারকাকে নিজের পরা একটি জার্সিও উপহার দিয়েছেন মাশরাফী। দেখা শেষেই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়ে মাশরাফী লেখেন, “এমিকে ভালো লাগার শুরু কোপা আমেরিকা থেকেই, যেখানে সে টাইব্রেকারে দুটি গোল আটকে দিয়ে দলকে জয় এনে দিল। কত বছর পর বড় কোনো শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা! লিওনেল মেসিও পেল দেশের হয়ে প্রথম বড় ট্রফির স্বাদ। স্বাভাবিকভাবেই পাখির চোখে তাকিয়ে ছিলাম বিশ্বকাপের দিকে। কিন্তু সৌদি আরবের সাথে হেরে মনে হয়েছিল, আরেকটি বিশ্বকাপও হয়তো শেষ হবে হতাশায়। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানো এবং পরে বিশ্বকাপ জয় দেখতে পারাটা ছিল অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের মতো। সেই জয়ের অন্যতম নায়ক এমির সঙ্গে দেখা হলো আমাদের এই ঢাকায়। খুব অল্প সময়ের জন্য দেখা, কিন্তু দারুণ এক অনুভূতি। বিশ্বকাপ জয়ী দলের গোলকিপার চোখের সামনে!”
মাশরাফী আরও বলেন, “সে তো জানে না, আমার এবং আমার মতো আরও কত কোটি মানুষের কত বছরের অপেক্ষা শেষ হলো, যেদিন তার ঐ হাত ধরেই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয় করল! আজকে সে ইন্টারভিউয়ের মাঝেই একবার ট্রাউজার উঠিয়ে দেখাল, পায়ের ঠিক সেই জায়গায় একটি ট্যাটু করিয়েছে, বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ বাঁশির ১৮ সেকেন্ড আগে কোলো মুয়ানির শটটি আটকিয়ে দিয়েছিল যে জায়গা দিয়ে। এক সেকেন্ডের জন্য মনে হলো, আসলে বিশ্বকাপটাতো ওখানেই জিতে নিয়েছে। আজকে আসলে বেশি ভালো লাগছে আমার সন্তানদের জন্য।”
মাশরাফী আরও বলেন, “যখন বললাম, এমি আসছে, তোমাদের কি দেখা করার ইচ্ছা আছে?’ ওরা লাফাচ্ছিল। সবশেষ দুটি দিন ওরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারছিল না এমিকে দেখবে বলে। আজকে এমির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বললাম, ‘বাচ্চারা তোমার অটোগ্রাফ নিতে চায়।’ সে এত আন্তরিকতা দেখাল, এক কথায় অসাধারণ। এমনকি সে ছবিও তুলে দিল ওদের সঙ্গে। এখন তারা মহাখুশি, আর ওদের খুশিতে আমিও এখন মহাখুশি। এমি, আপনাকে স্বাগত এই বাংলার মাটিতে। এখানে আপনাদের অগণিত ভক্ত আছে, যুগ যুগ ধরে। আশা করি, আপনারও ভালো লাগছে এই মাটিতে পা রেখে। পাশাপাশি এটাও ভাবি, সত্যি বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ ফুটবলে কোয়ালিফাই করবে আর আমরা আমাদের পতাকা নিয়ে মিছিল করব, ইনশাল্লাহ। অনেকের কাছে এখন এটা অবাস্তব মনে হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, কাজটা কঠিন, খুব কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। স্বপ্ন পূরণের সেই দিনটির অপেক্ষায় আছি, ইনশাল্লাহ।”