শরিফুলের দাপটে অল্পতে শেষ আফগানিস্তান
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ কেটেছে দুঃস্বপ্নের মতো। দুটোতেই বাংলাদেশকে হেসেখেলে হারিয়েছে আফগানিস্তান। তাই তৃতীয় ম্যাচে চোখ রাঙাচ্ছে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা। এমন সমীকরণের ম্যাচে বোলিং দিয়ে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ। শরিফুল-তাসকিনরা মিলে দাঁড়াতেই দেননি অতিথি ব্যাটারদের। বোলারদের দাপটে অল্পতে গুঁড়িয়ে গেল আফগানিস্তান।
আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৫.২ ওভারে ১০ উইকেটে ১২৬ রান সংগ্রহ করেছে আফগানিস্তান।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এদিন টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় আফগানিস্তান। কিন্তু আগের দিনের মতো এদিন আর শুরুটা জমেনি আফগানদের।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই আঘাত হানেন একাদশে সুযোগ পাওয়া শরিফুল। এক ওভারেই জোড়া উইকেট তুলে নিলেন তিনি। প্রথমে ফেরালেন আগের দিনের সেঞ্চুরিয়ান ইব্রাহিম জাদরানকে (১)। এরপর বিদায় করলেন উইকেটে নতুন আসা রহমত শাহকে। ওয়ানডাউনে নামা রহমতকে রানের খাতাও খুলতে দিলেন না শরিফুল।
দলীয় ৩ রানে জোড়া উইকেট হারিয়ে শুরুটা ব্যাকফুটে হয় আফগানদের। এর মধ্যেই তৃতীয় আঘাত দেন তাসকিন। তিনি বিদায় করেন আগের দিনের আরেক সেঞ্চুরিয়ান রহমানউল্লাহ গুরবাজকে। তাসকিনের শর্ট বল মোকাবিলায় কিপার মুশফিকের হাতে ক্যাচ তুলে দেন গুরবাজ। দলীয় রানে ১৪ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় আফগানিস্তান, গুরবাজ ফেরেন ২২ বলে ৬ রান করে।
তিন উইকেট হারানোর হতাশা কাটিয়ে আর ম্যাচেই থিতু হতে পারলেন না আফগান ব্যাটাররা। বোলিংয়ে এসে ফের শরিফুলের ধাক্কা। নবম ওভারে মোহাম্মদ নবীকে এলবির ফাঁদে ফেলেন শরিফুল। যদিও রিভিউ নিয়ে বাঁচতে চেষ্টা করেছেন নবী। কিন্তু রক্ষা হয়নি। আম্পায়ার্স কলই বহাল থাকল। ৯ বলে ১ রান করেই নবীকে ফিরতে হলো সাজঘরে।
পেসারদের উইকেট উৎসবে মাঝপথে যোগ দেন স্পিনাররা। নাজিবুল্লাহ জাদরানকে এলবির ফাঁদে ফেলে নিজের প্রথম শিকার তুলে নেন সাকিব আল হাসান। উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টায় ২২ বলে ১০ রান করেন নাজিবুল্লাহ।
পরের উইকেটটিও স্পিনারদের। তাইজুল ইসলাম আক্রমণে এসে ফেরান আফগান অধিনায়ক শাহিদির প্রতিরোধ। বাকিরা যখন একে একে সাজঘরে ফিরছিলেন তখন উইকেটে মাটি কামড়ে ছিলেন অধিনায়ক। কিন্তু পারলেন না ইনিংস বড় করতে। যদিও তাঁর উইকেটটি যায় দায়িত্বজ্ঞানহীন শটে। তাইজুলের বলে আগে থেকে রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টায় গিয়ে ব্যর্থ হন তিনি। দলীয় ৫৩ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় আফগানিস্তান, ৫৪ বলে ২২ রানে আউট শাহিদি।
পরের আঘাতটি আনেন শরিফুল। আব্দুল রহমানকে ডিপ ফাইন লেগে তাইজুলের হাতে ক্যাচ বানিয়ে নিজের চতুর্থ শিকার তুলেন তিনি। ২০ বল খেলা আব্দুল করেন ৪ রান। দ্রুত উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে শেষ পর্যন্ত বড় ইনিংস গড়তে পারেনি আফগানরা। তবুও শেষ দিকে টেলএন্ডারদের ওপর ভর করে কোনোমতে ১০০ ছাড়ানো পুঁজি গড়ে আফগানিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন ওমরজাই।
বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে ২১ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন শরিফুল। এটিই তাঁর ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। দুটি শিকার তাইজুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদের। এ ছাড়া সমান একটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান : ৪৫.২ ওভারে ১২৬ (গুরবাজ ৬, জাদরান ১, রহমত ০, হাসমতউল্লাহ ২২, নবী ১, জাদরান ১০, ওমরজাই ৫৬, আব্দুল ৪, জিয়াউর ৫, মুজিব ১১, ফারুকী ০; শরিফুল ৯-১-২১-৪, তাসকিন ৮.২-১-২৩-২, মিরাজ ৯-১-৩৫-১, সাকিব ১০-১-১৩-১, তাইজুল ৯-০-৩৩-২।