ইরানে পেট্রলের দাম বাড়ায় বিক্ষোভ, দুজন নিহত

ইরানে হঠাৎ করেই পেট্রলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্ষোভে নেমেছে সাধারণ মানুষ। এ বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
এর আগে পেট্রলের ওপর ভর্তুকি উঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর থেকেই গত শুক্রবার পেট্রলের দাম অন্তত ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
কর্তৃপক্ষ বলছে, দরিদ্রদের জন্য অর্থ বরাদ্দের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার সিরজান শহরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়। বিক্ষোভকারীরা শহরের জ্বালানি মজুদ রাখার একটি গুদামে হামলা চালাতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আরো অনেকেই আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ ছাড়া দেশটির বাহবাহান শহরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আরো এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
তেহরান, ইসফাহান, তাবরিজ, করদজ, শিরাজ, ইয়াজদ, বোশেহর ও সারি শহরেও বিক্ষোভ চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অধিকাংশ শহরেই সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শিরাজের কয়েকটি পুলিশ স্টেশনে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সরকারি কৌঁসুলি মোহাম্মদ জাফর মোন্তাজেরি দাবি করছেন, এসব ঘটনায় কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ জড়িত। এ ছাড়া বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ‘বাইরের শক্তি’র সংযোগ রয়েছে বলেও দাবি তাঁর।
ইরানের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি লিটার পেট্রল ১৫ হাজার রিয়াল দরে প্রতি মাসে মোট ৬০ লিটার পেট্রল কিনতে পারবেন মোটরযান মালিকরা।
এর আগে এক ব্যক্তি প্রতি লিটার ১০ হাজার রিয়াল দরে মোট ২৫০ লিটার পেট্রল কিনতে পারতেন।
কর্তৃপক্ষ বলছে, পেট্রলে ভর্তুকি বাদ দিয়ে সরকার যে পরিমাণ নগদ অর্থ আয় করবে, তা দিয়ে নিম্ন আয়ের দরিদ্র পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানিয়েছেন, ৭৫ শতাংশ ইরানি বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে চাপের মুখে রয়েছে। পেট্রলে ভর্তুকি বাদ দেওয়ায় সরকার যে আয় করবে, তা ইরানের কোষাগারে জমা না রেখে জনগণকে সহায়তা করা হবে।