যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় পোলিও টিকাদান কর্মসূচি শুরু
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় গতকাল শনিবার (৩১ আগস্ট) থেকে পোলিও টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তবে একজন সাহায্যকর্মী জানিয়েছেন, আজ রোববার থেকে ব্যাপক আকারে এই তৎপরতা চলবে। এদিকে টিকাপ্রদানের এই কাজকে সামনে রেখে ইসরায়েল ও হামাস সংঘাতের ‘মানবিক বিরতি’তে সম্মত হয়েছে। খবর এএফপির।
গত আগস্ট মাসের শুরুর দিকে ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো গাজায় একজন পোলিও রোগী শনাক্ত হওয়ার পর টিকা প্রদানের এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়।
গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক পরিচালক মুসা আবেদ গতকাল শনিবার বলেন, ‘বিভিন্ন এনজিও ও জাতিসংঘসহ স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আজ থেকেই পোলিও টিকাপ্রদান কর্মসূচি শুরু করেছেন।’
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে বেশ কিছু শিশুকে পোলিও টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। মুখে খাওয়ার উপযোগী এসব টিকা প্রদান সম্পন্ন হয় দুটি ডোজের মাধ্যমে।
এ প্রসঙ্গে নিউমোনিয়া নিয়ে চিকিৎসা করতে আসা টিকা গ্রহণকারী তিন বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে অবস্থানকারী আমাল শাহীন বলেন, ‘গত ১৭ দিন থেকে আমরা হাসপাতালে অবস্থান করছি, আমার দিনগুলো কাটছে তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে। আজ তাকে হাসপাতালের আর সব শিশুর মতো পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, পোলিও টিকা প্রদানের কাজ সম্পন্ন করতে সহযোগিতার অংশ হিসেবে তিন দিনের মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। সে সময় বলা হয়েছিল আজ রোববার থেকে টিকা খাওয়ানোর কাজ শুরু হবে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এর আগে জানিয়েছিলেন, শনিবার থেকে আগামী তিন দিন দৈনিক ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টিকা প্রদানের কাজ চলবে। গাজার মধ্যাঞ্চলে তিন দিন, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে তিন দিন এবং গাজার উত্তরাঞ্চলে তিন দিন পোলিও টিকা প্রদানের কাজ চলবে।
তবে এই কর্মসূচিতে কিছুটা ভিন্নতা রেখে প্রতিটি এলাকায় চার দিনের তৎপরতার কথা উল্লেখ করে টিকাদান কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাদের হিসাব অনুসারে, গাজার মধ্যাঞ্চলে ৬৭টি, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ৫৯টি এবং গাজার উত্তরাঞ্চলে ৩৩টি কেন্দ্র থেকে এসব টিকা প্রদান করা হবে।
গাজায় হামাস পরিচালিত সরকার ও বিভিন্ন গণমাধ্যস অফিস গতকাল শনিবার জানায়, এই কাজ চালিয়ে যেতে ‘তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’ অত্যাবশ্যক। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পোলিও টিকা প্রদানের সময় লড়াই থামোনোকে ‘যুদ্ধবিরতি’ বলতে নারাজ।
পোলিও টিকা খাওয়ানোর এই কর্মসূচিতে ১০ বছর বয়সের নিচে থাকা ছয় লাখ ৪০ হাজার শিশুকে টিকা প্রদানের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।