অগ্নিকাণ্ডে ভস্ম দিনমজুরের স্বপ্ন!

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে রহস্যময় অগ্নিকাণ্ডে ভস্ম হয়ে গেছে হাবিবুল্লাহ নামে এক দিনমজুরের স্বপ্ন! অঙ্গার হয়েছে ঋণের টাকায় কেনা গরু। দোচালা টিনের ঘরসহ ছাই হয়ে গেছে ধান, চাল। সব হারিয়ে দিশেহারা হাবিবুল্লাহ।
গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার উত্তর সালুয়া গ্রামে ঘটেছে এ দুর্ঘটনা।
ক্ষতিগ্রস্ত হাবিবুল্লাহ জানান, শনিবার রাত ৯ টার দিকে তিনিসহ তাঁর স্ত্রী তাহমিনা বেগম সন্তানদের নিয়ে অন্য ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘরটি পুড়ে যাওয়া ঘর থেকে পৃথক। হঠাৎ গরুর চিৎকারে তাঁদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন গুরু ও খাদ্যদ্রব্য রাখা ঘরটি দাউ দাউ করে জ্বলছে। আগুনের তেজ এতোটাই বেশি যে, ঘরের ভেতরে ঢুকে গরু কিংবা মালামাল বের করার উপায় নেই।
পরে হাবিবুল্লাহ ও তাঁর স্ত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। তাঁরা পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এর আগেই গরু, ধান, চাল, গরুর জন্য রাখা খাবারসহ ঘরটি পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়।
হাবিবুল্লাহর প্রতিবেশী মিজানুর রহমান ও জসিম মিয়া জানান, রাতে আগুনের লেলিহান শিখা আর চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে তাঁরা ছুটে আসেন এবং পাশের পুকুর থেকে পানি এনে আগুন নেভাতে সহায়তা করেন।
হাবিবুল্লাহ জানান, শ্বশুরের কিনে দেওয়া দুই শতক জমিতে কয়েক মাস আগে এসে তিনি বাড়ি করেন। চার মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রী তাহমিনাকে নিয়ে সেখানে বসবাস শুরু করেন। তিনি অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালান।
হাবিবুল্লাহ আরও জানান, গত দুই মাস আগে একটি এনজিও থেকে কিস্তিতে ঋণ তুলে ৬০ হাজার টাকায় দেশি ষাড়গরুটি ক্রয় করেছিলেন তিনি।
হাবিবুল্লাহর শ্বশুর হাবুউল্লাহ মিয়া জানান, তাঁর মেয়েজামাই ভূমিহীন ও দিনমজুর হওয়ায় কয়েক মাস আগে জমিটি কিনে দেন। পরে সেখানে দুটি টিনের ঘর করে দেন।
হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘স্বপ্ন ছিল- গরুটি লালনপালন করে আগামী কোরবানির ঈদে বেশি দামে বিক্রি করে সংসারের উন্নতি ফিরাবেন। কিন্তু আগুনে সেই স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেল।’