আবিষ্কার হবে ডেনমার্কে, ব্যবহার হবে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে

বিশ্বে বিভিন্ন প্রান্তে ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসায় নতুন যা কিছুই আবিষ্কার হবে; তা সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামের চিকিৎসকের কাছেও! চিকিৎসকের সহযোগিতায় নতুন নতুন এসব তথ্যর মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগী পাবে উন্নত সেবা। একটি অ্যাপস এবং গাইডলাইন ব্যবহার করেই এ কাঙ্ক্ষিত সেবা পৌঁছাবেন ডাক্তাররা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে এ গাইডলাইন এবং অ্যাপসের উদ্বোধন করা হয়।
স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এবং চিকিৎসকদের সুবিধার্থে অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক ডায়বেটিস চিকিৎসা সহায়িকা ‘ডায়াবেটিস জার্নি’ চালু করা হয়েছে। নতুন গাইডলাইনের ওপর ভিত্তি করে অ্যাপসটি তৈরি করেছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইনসুলিন প্রস্তুতকারী ডেনমার্কের প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্কনভো নরডিস্ক এবং বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতি (বাডাস)।
সেবায় কোনো নতুন তথ্য আবিষ্কার হবে সেবার মান উন্নয়নের লক্ষে দেশে প্রথমবারের মতো সরকার স্বীকৃত ডায়াবেটিস চিকিৎসা গাইডলাইন চালু করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস) এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিস কন্ট্রোল প্রোগ্রাম যৌথভাবে এই ‘ডায়াবেটিস কেয়ার বাডাস গাইডলাইন ২০১৯’ প্রণয়ন করেছে।
একইসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এবং চিকিৎসকদের সুবিধার্থে অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক ডায়বেটিস চিকিৎসা সহায়িকা ‘ডায়াবেটিস জার্নি’ চালু করা হয়েছে। নতুন গাইডলাইনের উপর ভিত্তি করে অ্যাপটি তৈরি করেছে নভো নরডিস্ক এবং বাডাস।
বাডাসের সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, ‘এই গাইডলাইনটি ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসার রূপরেখার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই অ্যাপটি রোগের ধরন ও রোগীদের প্রয়োজন বুঝে সঠিক চিকিৎসা পরামর্শ দিতে চিকিৎসকদের জন্য সহায়ক হবে।’
বাডাসের সাধারণ সম্পাদক মো. সায়েফ উদ্দীন বলেন, ‘প্রতিটি নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করা জরুরি। বাডাস বাংলাদেশে ডায়াবেটিস চিকিৎসা ও সেবা ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ডায়াবেটিস রোগটি দেশে এখন মহামারি আকারে ধারণ করেছে। এ জন্য দেশের সবাইকে সচেতন হতে হবে। অন্যথায় শুধু চিকিৎসা দিয়ে এ রোগ নিরাময় সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ‘এ জন্য আমরা ডাক্তারদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, মসজিদ, মন্দির, দেশের উপজেলা চেয়ারম্যান, চেম্বার মেম্বার সবাইকে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। ভবিষৎ প্রজন্মকে এ রোগ থেকে মুক্তি দিতে মায়েদেরও ভূমিকা রাখতে হবে।’
নভো নরডিস্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনন্দ শেঠী বলেন, ‘ডায়াবেটিস কেয়ারে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে নভো নরডিস্ক স্বাস্থ্য সেবায় ডিজিটাল পদ্ধতির প্রবর্তনে আগ্রহী।’ তিনি বলেন, ‘ডায়াবেটিস জার্নি অ্যাপ্লিকেশন এবং দেশের প্রথম জাতীয় ডায়াবেটিস রোগী নিবন্ধন এ ডিজিটালাইজেশনের বড় উদাহরণ এবং বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রচেষ্টারও সহায়ক।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি অ্যাস্ট্রাপ পিটারসেন বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অসংক্রামক ব্যাধিগুলোকে মোকাবিলা করতে হবে। সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এ ব্যাধিগুলো নিয়ে কাজ করছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি জেনে আনন্দিত যে, বাংলাদেশে নভো নরডিস্কের ইনসুলিন উৎপাদন ব্যবস্থা ডায়াবেটিস রোগীদের মানসম্মত ইনসুলিন প্রাপ্তির সুযোগ নিশ্চিত করবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ফারুক পাঠান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিস কন্ট্রোল প্রোগ্রামের সহকারী পরিচালক আব্দুল আলিম, বাডাসের সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চের সমন্বয়ক বিশ্বজিৎ ভৌমিক; নভো নরডিস্কের হেড অব মেডিক্যাল অ্যান্ড কোয়ালিটি মোহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান এবং হেড অব কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স মো. তানবির সজীব।