এয়ার শোতে যোগ দিতে দুবাই পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘দুবাই এয়ার শো-২০১৯’ এবং আরো কিছু অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গতকাল শনিবার রাতে চার দিনের সরকারি সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই পৌঁছেছেন। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসক মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে উপসাগরীয় দেশটিতে সফরে গেছেন।
আমিরাত এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। বিমানবন্দরে অভ্যর্থনার পর আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রাসহ তাঁকে আবুধাবির হোটেল শাংরি-লায় নিয়ে যাওয়া হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে প্রধানমন্ত্রী এই হোটেলেই অবস্থান করবেন।
এর আগে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমানটি দুবাইয়ের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
বিমানবন্দরে এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূরে আলম চৌধুরী, কূটনৈতিক কোরের ডিন, আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
১৭ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও সফল এয়ার শো এবং মধ্যপ্রাচ্য এশিয়া ও আফ্রিকার বৃহত্তম এয়ারোস্পেস ইভেন্ট দুবাই এয়ার শো-২০১৯-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
সারা বিশ্বের ৮৭ হাজার অংশগ্রহণকারী এবং এক হাজার ৩০০ এক্সিবিটর দুবাইয়ের ভবিষ্যৎ বিমানবন্দর দুবাই ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রালে এ উপলক্ষে সমবেত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
১৭ থেকে ২১ নভেম্বর দুবাইয়ের আকাশে দ্বিবার্ষিক এই এয়ার শোটি অনুষ্ঠিত হবে। আশা করা হচ্ছে, এটি ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত এয়ার শো সাফল্যকে ছাড়িয়ে যাবে। ২০১৭ সালের শুরু থেকে ১১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যে অর্ডার পাওয়া গিয়েছিল। এতে ৬৩টি দেশের ৭৯ হাজার ৩৮০ জন যোগদানকারী ও এক হাজার ২০০ এক্সিবিটরকে স্বাগত জানানো হয়েছিল।
চার দিনের আমিরাত সফর শেষে ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরবেন।
গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দুবাই সফরের সময় তিনটি স্মারক সই হবে। এগুলোর দুটি হচ্ছে, দুই দেশের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি ও দুই দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি এবং আরব আমিরাতের দুবাইতে বাংলাদেশ দূতাবাসের স্থায়ী ভবন নির্মাণে জমি বরাদ্দ সংক্রান্ত প্রটোকল।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৮ নভেম্বর আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত বাংলাদেশিদের ভোটারলিস্ট প্রণয়ন শুরু এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণে নির্বাচন কমিশনের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দুবাইয়ের শাসক ছাড়াও আবুধাবির যুবরাজ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সশস্ত্র বাহিনীর ডেপুটি সুপ্রিম কমান্ডার শেখ মুহাম্মদ বিন জায়ের আল নাহিয়ান ও ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সুপ্রিম চেয়ারওমেন শেখ ফাতিমা বিনতে মোবারকের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর আরব আমিরাতের বড় বিনিয়োগকারী গ্রুপ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ সফরটি বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে আরব আমিরাতের বিনিয়োগের ওপর ইতিবাচক প্রভাব রাখবে এবং দুই দেশের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।