করোনা প্রতিরোধে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই : রিজভী
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, করোনা দুর্যোগে নিরন্ন গরিব মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দেওয়া হোক।
রিজভী বলেন, ‘আমরা সরকারের সমালোচনা করছি না। যা সঠিক, তা বলছি। সেটা কারো বিরুদ্ধে গেল কি না, সেটা কথা নয়। আমরা সত্য কথা বলছি।’
আজ রোববার দুপুরে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) উদ্যোগে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসকদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই প্রদানকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রিজভী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, সিনিয়র সহসভাপতি ডা. এম এ সেলিম, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. খালেকুজ্জামান দীপু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান, বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ডা. রাকিবুল ইসলাম আকাশ প্রমুখ।
রুহুল কবির রিজভী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের উচিত ছিল, সমন্বিতভাবে জাতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। কিন্তু জাতীয় উদ্যোগ নেওয়া দূরে থাক, বিএনপি বা এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল—যেখানেই সাধ্যমতো সাধারণ গরিব মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করতে যাচ্ছে, সেখানেই পুলিশকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর বাড্ডায় এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তবে বিএনপি শত জুলুম নির্যাতনের মাঝেও সাধারণ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে। যত দিন মহামারির প্রাদুর্ভাব থাকবে, তত দিন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ জনগণের পাশে দাঁড়াবে।’
রিজভী বলেন, ‘আজ ভিক্ষুক রাস্তায় রাস্তায় খাবার খুঁজছে। চট্টগ্রামে ত্রাণের ট্রাক লুট করা হয়েছে। এই মহামারির মধ্যে সরকারের লোকজন ত্রাণের চাল চুরি করছে। চারদিকে চাল চুরির হিড়িক পড়েছে। আসলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই ক্ষমতাসীন সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই। দেশে দায়িত্বশীল সরকার নেই। আজ গোটা দেশে বিপর্যয়ের মুখেও আওয়ামী লীগের লুটপাট থামছে না। এ জন্য আমরা জাতীয় ঐক্যের কথা বলে আসছি।’
রিজভী আরো বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা করার জন্য ডাক্তারদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার। এখন ডাক্তাররাও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের কোনো সুরক্ষা নেই। ডাক্তারদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই দিতে পারছে না। যখন থেকে করোনার সংক্রমণ দেখা গেছে, তখন থেকেই সরকার প্রস্তুতি নিলে এ সমস্যা হতো না। তাঁদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে ভালো ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানাই, সেটিও করছে না সরকার। আজ অনেক বাড়িওয়ালা ভাড়াটিয়া ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলছে। কত কষ্টের মাঝেও তাঁরা চিকিৎসাসেবা প্রদান করে আসছেন।’
রিজভী বলেন, ত্রাণ বিতরণের জন্য আওয়ামী লীগের লোকজন তালিকা করে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দেবে। এরপর সরকারি ত্রাণ বিতরণ করা হবে।আসলে এ ধরনের কাজ হলে শুধু আওয়ামী লীগের লোকজনই ত্রাণ পাবে। ফলে আরো বেশি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এ জন্য আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে তালিকা বাতিল করে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করতে হবে।