গুলিস্তানে বিস্ফোরণ : ভবনের মালিকসহ ৩ জন দুদিনের রিমান্ডে
রাজধানীর গুলিস্তানে বিস্ফোরণের ঘটনায় ২১ জন মৃত্যুতে গ্রেপ্তার দুই ভবন মালিকসহ তিনজনের দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম এই আদেশ দেন।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ আসামিদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপরে আসামিদের ১০ দিন রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল মাবুদ। শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ডের এই আদেশ দেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ভবনের দুই মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমান এবং ভবনের বেসম্যান্টের স্যানিটারি ব্যবসায়ী মিন্টু। এর মধ্যে ওয়াহিদুর ও মতিউর সম্পর্কে আপন দুই ভাই।
এদিকে আজ তাঁদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ শাখা থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, কুইন্স সেনেটারি মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ড বিস্ফোরণের উৎসস্থল। বেইজমেন্টের এই আন্ডারগ্রাউন্ড স্পেসটি রাজউকের বিধান অনুসারে খোলামেলা থাকলে সেখানে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে নিরসন করা যেত। বায়ু গ্যাসসহ অন্যান্য সমস্যারও সমাধান করা যেত। বাড়ির মালিকরা টাকার লোভে আন্ডারগ্রাউন্ডকে এক সময় রান্নাঘর হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আর বলা হয়, সেই রান্নাঘরের গ্যাসের লাইন যথাযথভাবে অপসারণ না করে তার ওপরেই সম্পূর্ণ এয়ার টাইট এসি করা নির্মাণ সামগ্রীর মার্কেট বানিয়ে দিয়েছেন। দোকানের মালিক বিল্ডিং কোডের বিধান না মেনে ভাড়া নিয়ে বেইজম্যান্টের এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা না রেখে ডেকোরেশন করে দোকান বানিয়ে সেখানেই তার কর্মচারী ও ক্রেতা সাধারণের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এতগুলো প্রাণের হানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ভবনের মালিক এবং দোকানদারের স্বেচ্ছাচারিতা, লোভ ও অবহেলার ফল। জানমালের এই ব্যাপক ক্ষতির অভিযোগে ভবনমালিক ওয়াহিদুর রহমান মতিউর রহমান এবং দোকান মালিক আব্দুল মোতালেব ওরফে মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক করা হয়।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ভবন মালিক ওয়াহিদুর রহমান এবং তার ভাই মতিউর রহমানকে গত ৭ মার্চ ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। একই দিন রাতে ঢাকা মেডিকেল এলাকা থেকে মোতালেব মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভবন মালিকের অবহেলাজনিত দায় থাকায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।