চট্টগ্রামে দুই বছরের শিশু আরাফ হত্যার রায় আজ
২০২০ সালের ৬ জুন। চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় ‘বাড়ির মালিককে ফাঁসাতে’ হত্যা করা হয় দুই বছরের শিশু আবদুর রহমান আরাফকে। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা মা-বাবা। এক বছর নয় মাস পর আজ বুধবার সে হত্যা মামলার রায়।
চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) প্রবীর কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আজ শিশু আরাফ হত্যাকাণ্ডের রায়ের দিন ধার্য আছে। বিচারের পুরো প্রক্রিয়া শেষে এ হত্যা মামলার রায়ের দিন ধার্য করেছেন চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিন।’
জানা যায়, আবদুল কাইয়ুম ও ফারহানা ইসলাম দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিল আরাফ। বয়স ছিল মাত্র দুই বছর সাত দিন। যে ভবনের ছাদে পানির ট্যাংকিতে ডুবিয়ে তাকে হত্যা করা হয়, ওই ভবনের সামনে গাড়ি রাখার জায়গায় খেলছিল সে। সেখান থেকে আদর করার ছলে ভবনটির ছাদে নিয়ে পানির ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয় তাকে। হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল বাড়ির মালিককে ফাঁসানো।
এ মামলার তিন আসামি—নগরীর বাকলিয়া থানার মিয়াখান নগরের বাসিন্দা মো. ফরিদ, শিশু আরাফের পরিবার যে বাড়িতে ভাড়া থাকত, সে ভবনের দারোয়ান মো. হাসান এবং হাসানের মা নাজমা বেগম। তাঁদের মধ্যে ফরিদ ও নাজমা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। হাসান উচ্চআদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।
এ মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিন আসামি।
নাজমা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জানান, ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। মাত্র ২০ হাজার টাকার লোভ এবং পাশের ভবনের বাসিন্দা ফরিদের প্রলোভনে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। বাড়িওয়ালা ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আলম মিয়াকে ফাঁসানো ছিল মূল উদ্দেশ্য।
নাজমার ছেলে ভবনটির দারোয়ান মো. হাসান (২৩) গেইট খুলে দিয়ে তাঁকে ছাদে উঠতে সহায়তা করেছিলেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পিপি প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আমাদের পক্ষে ২০ জন সাক্ষী দিয়েছেন। আসামি পক্ষে ১০ জনের সাফাই সাক্ষ্য হয়েছে। আদালত ৩০ মার্চ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আমরা হত্যার অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি। আদালতে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজাই প্রার্থনা করেছি।’
ছেলে হারানো মা-বাবার দাবি, সন্তান হারানোর এমন কষ্ট যেন আর কাউকে পেতে না হয়। সে জন্য তাঁরা আদালতের কাছে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।