নাশকতার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই ৬ ‘জঙ্গি’ আটক

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের কয়েকজন সক্রিয় সদস্য নাশকতার পরিকল্পনা করে সভা করছিল। এমন সময় সেখানে অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে র্যাব। পালিয়ে যায় কয়েকজন। পরে আটককৃতদের দেওয়া তথ্যে আরো দুজনকে আটক করে র্যাব।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বিএসইসি ভবনে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত তিন জেলায় অভিযান চালিয়ে মোট ছয়জনকে আটক করা হয়। এদের ভেতরে চারজনকে উত্তরা থেকে, একজনকে সাতক্ষীরা ও একজনকে গাজীপুর থেকে আটক করা হয়।’
আটক ব্যক্তিরা হলেন আনসার আল ইসলামের সাতক্ষীরা জেলার আমির হোসাইন ওরফে তৌহিদি জনতার আর্তনাদ (২৬) ও ইকরামুল ইসলাম ওরফে আমির হামজা (২১), ভোলার শিপন মীর ওরফে আবদুর রব (৩৩), চাঁদপুরের মো. ওয়ালিউল্লাহ ওরফে আবদুর রহমান, পিরোজপুরের ইলিয়াস হাওলাদার ওরফে খাত্তাব (৩২) ও নীলফামারীর শফিকুল ইসলাম ওরফে সালমান মুক্তাদির (২১)।
র্যাব ৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করে নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত তারা এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছে। এই দেশে যেকোনো মূল্যে শরিয়াভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই তাদের উদ্দেশ্য বলে তারা জানিয়েছে। এদের ভেতরে আমির হামজা সাতক্ষীরা জেলার আনসার আল ইসলামের নেতৃত্ব দিতেন।’
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, “তাদের চিন্তায় যারা নাস্তিক অথবা তাদের মতাদর্শের বাইরে অবস্থান এমন মানুষকে তারা টার্গেট করে। এবং কাউকে ‘চরম শত্রু’ মনে হলে তাদের চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়ার পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে এই সদস্যরা। চূড়ান্ত শাস্তির কাজটি তারা আগ্নেয়াস্ত্রের পরিবর্তে চাপাতি দিয়ে করে থাকে।”
এর আগে আটক ব্যক্তিরা চূড়ান্ত শাস্তির কাজটি তারা করেছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি র্যাবের অধিনায়ক মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘তবে এর আগে যাদের মেরে ফেলা হয়েছে। সেখানে তাদের সমর্থন আছে বলে তারা জানিয়েছে।’
অধিনায়ক বলেন, উত্তরাতে অভিযান চালানোর সময় কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। যারা পালিয়ে গেছে তাদের নাম আমরা পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে আপাতত তাদের নাম আমরা বলছি না। তাদের দ্রুতই আটক করা হবে। আটক করে মিডিয়ার সামনে নিয়ে আসা হবে।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আটককালে তাদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে জঙ্গি সংশ্লিষ্ট উগ্রবাদী বই এবং লিফলেট, ল্যাপটপ ও হার্ডড্রাইভ জব্দ করেছি। এসব জিনিস থেকে জঙ্গি সংশ্লিষ্ট ট্রেনিং, মোটিভেশিন ও সদস্য সংগ্রহ সংক্রান্ত ব্যাপক তথ্য রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’