নড়াইলে নবগঙ্গা নদী থেকে ড্রেজার-ভলগেট জব্দ, আটক ৫
নড়াইলের কালিয়ার নবগঙ্গা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। আজ বুধবার নৌপুলিশের অভিযানে ওই নদী থেকে তিনটি ড্রেজার, একটি ভলগেট জব্দ করা হয়েছে। এ সময় পাঁচজনকে আটক করেছে বড়দিয়া নৌফাঁড়ির পুলিশ।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দেওয়াডাঙ্গা-কুলসুর ঘাট এলাকা থেকে বিক্ষোভ করে নদী থেকে ৩০টি ড্রেজার উঠিয়ে দিতে বাধ্য করে এলাকাবাসী।
কালিয়া বড়দিয়া নৌফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এস আই) আসলাম বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে এসব ড্রেজার ও ভলগেট জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া অবৈধভাবে বালু তোলার সময় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এক বছর ধরে কালিয়ার প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা রবিউল ইসলাম খানের নেতৃত্বে কোনো ইজারা ছাড়াই দৈনিক অন্তত ৫০টি ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়।
দেওয়াডাঙ্গা ও নোয়াগ্রামের আসলাম, জহির মোল্লা, ইলিয়াস মোল্লা জানান, নদী থেকে এভাবে বালু তোলার ফলে আমাদের একটি বাজার, তিনটি মসজিদ, একটি মন্দিরসহ কয়েক একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
দেওয়াডাঙ্গা গ্রামের লিটন সর্দার বলেন, ‘এলাকাবাসীর পক্ষে কয়েক দফা লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছে।’
কালিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আনু বলেন, ‘স্থানীয় প্রভাবশালী মহল অবৈধভাবে বালু তুলে কোটি টাকা আয় করছে। এতে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি নদীর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রশাসনের দৃষ্টি এদিকে লাগেনি। তাই জীবন বাঁচাতে সাধারণ জনগণ নদী থেকে ড্রেজার সরাতে বাধ্য হয়েছে।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নবগঙ্গা নদীর দেওয়াডাঙ্গা ঘাট এলাকার দুই তীরে প্রায় ৩০টির বেশি ড্রেজার বালু তুলছে। প্রায় ১০০টি বালুবাহী জাহাজ বালু বহন করছে। এতে নদীর তীর ধসে রাস্তাসহ ফসলি জমি নদীর মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে।
ঠিকাদার রবিউল ইসলাম খানের লোকেরা ঘাটে অফিস বসিয়ে বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। সাংবাদিক যাওয়ার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন করে ছবি তুলতে নিষেধ করা হয়।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি আশরাফ হোসেন বলেন, ‘এটা ডিসি, এসপি, এমপি সবাই জানেন। তবে ইজারা আছে কি না, আমার জানা নেই।’
অবৈধভাবে বালু তোলার ব্যাপারে কালিয়া উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ঠিকাদার রবিউল ইসলাম খান বলেন, ‘আমি নিম্ন দরদাতা হিসেবে চর ইজারা নিয়েছি। বৈধ কী অবৈধ সেটা প্রশাসনের লোক ভালো বলতে পারবে।’