পেঁয়াজের বিকল্প ‘চিভ’, সাফল্য পেয়েছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা

দেশে পেঁয়াজের দাম যখন লাগামহীন, তখন বিকল্প হিসেবে চিভ নামে এক ধরনের মসলার জাত চাষে সাফল্য পেয়েছেন গাজীপুরের বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা।
তাঁদের উদ্ভাবিত এই মসলাজাতীয় ফসল নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এটি সারা বছর চাষাবাদ করা যাবে এবং এর ফলে পেঁয়াজের ওপর চাপ কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহম্মদ শহীদুজ্জামান বলেন, ‘চিভের স্বাদ অনেকটা পেঁয়াজের মতো। তবে এটিতে পেঁয়াজের মতো গুটি বা দানা হয় না।’
ড. শহীদুজ্জামান জানান, চিভ শুধু পাতাজাতীয় ফসল। মাটির ওপরের অংশই খাওয়া যায়। এর চারা লাগানোর ৬৫ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করা যায়। তা বছরে চার থেকে পাঁচবার উত্তোলন করা সম্ভব। এর পাতা, কাণ্ড ও ফুল মসলা হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এ মসলার চাষযোগ্য উচ্চ ফলনশীল জাত বারি চিভ-১ এরই মধ্যে অবমুক্ত করা হয়েছে।
মসলা গবেষণা কেন্দ্রের অপর বিজ্ঞানী ড. রুম্মান আরা জানান, তিনি নিজেই তরকারিতে চিভ ব্যবহার করেছেন। স্বাদ ও গন্ধ অনেকটা পেঁয়াজ ও রসুনের মতো। স্যুপ, সালাদ, তরকারি ও চায়নিজ ভেজিটেবল আইটেমে এটি ব্যবহার করা যায়।
কেন্দ্রের মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ জানান, মসলাটি এখন সম্প্রসারণ পর্যায়ে রয়েছে। এটি খুবই সহজে এবং তুলনামূলক কম খরচে চাষাবাদের যোগ্য। একবার পাতা-কাণ্ড কেটে নিলে আবার গজায়। বাড়ির আঙিনা বা টবে চাষ করা যায়। দেশের সব অঞ্চলে এর চাষাবাদ সম্ভব বলেও জানান তিনি।
পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে ২০১৭ সালে চিভ অবমুক্ত করা হয় উল্লেখ করে আবুল কালাম আজাদ জানান, এটি ব্যবহার করে পেঁয়াজের চাহিদা অনেকটা কমানো সম্ভব।
চিভের গুণাগুণ সম্পর্কে ড. আজাদ জানান, এটি হজমে সাহায্য করে। এ ছাড়া বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে চিভ। এতে ক্যানসার প্রতিরোধী গুণাগুণ রয়েছে। আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-২, নায়াসিন, ক্যারোটিন ও খনিজ উপাদান। এর পাতা লিনিয়ার আকৃতির, ফ্লাট, কিনারা মসৃণ ও বাল্ব লম্বাটে। এটি সাধারণত সাইবেরিয়া-মঙ্গোলিয়া ও চীনের উত্তরাঞ্চলে উৎপাদিত হয়।