ফরিদপুরে ২১ দিনব্যাপী জসীম মেলা শুরু
ফরিদপুরে শুরু হয়েছে ২১ দিনব্যাপী জসিম পল্লীমেলা। পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই মেলা শুরু হয়।
জেলা প্রশাসন ও জসীম ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আজ শনিবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে শহরতলীর অম্বিকাপুরে কবির নিজ বাড়ির আঙিনার সামনে কুমার নদীর পাড়ে এ মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলার উদ্বোধন করেন কবির ছোট জামাতা ও প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী (বীরবিক্রম)। জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা যদি কবি জসীমউদ্দিনকে জানতে চান তবে তাঁর বই পড়তে হবে। তার কৃতকর্মগুলো সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করতে হবে।’
নতুন প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘প্রচারের অভাবে পল্লীকবি জসীমউদ্দিন সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম ভুলতে বসেছে। নতুন প্রজন্ম আজকাল বই পড়া ভুলে যাচ্ছে। তাই, নতুন প্রজন্মকে বই পড়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে হবে। জসীমউদ্দিনের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে। তা না হলে একসময় নতুন প্রজন্ম জসীমউদ্দিনকে ভুলে যাবে।’
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এ কে আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ইশতিয়াক আরিফ, ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবিপুত্র ড. জামাল আনোয়ার, খুরশিদ আনোয়ার, কবিকন্যা আসমা জসীম উদ্দীন তৌফিক প্রমুখ।
এবারের মেলায় বিভিন্ন স্টলে লোকজ বিভিন্ন চারু ও কারুপণ্যের বিপণনের ব্যবস্থা রয়েছে। মেলায় ১৫০-২০০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন বিকেলে মেলার মাঠ প্রাঙ্গণে জসীম মঞ্চে গান, নাচ, নাটকসহ বিভিন্ন লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে। এতে ফরিদপুরসহ জেলার বাইরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করছে। মেলায় রয়েছে হস্ত, মৃৎ, বাঁশ ও বেত শিল্পসহ গ্রামীণ মানুষের ব্যবহৃত নিত্যদিনের জিনিসপত্র। এছাড়াও শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য রয়েছে সার্কাস, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন রকমের রাইডস।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সাল থেকে জসীম মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ওই বছর ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে ১ জানুয়ারি পল্লীকবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলার ব্যাপ্তিকাল প্রথমে তিন দিন ছিল। পরে ৭, ১৫ ও এক মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন হয়েছে। ১৯৯১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ এ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এলে মেলার গুরুত্ব বেড়ে যায়। পরে জেলা প্রশাসন ও জসীম ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন শুরু করে।